Advertisement
E-Paper

আপারকাটেও অনুরাগের ছোঁয়া

প্রেমের গল্প বলতে গিয়েও অনুরাগ তাই ফের বাহুবলীর রাজত্বে। উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ নেতার বরেলী বাজারে। ভগবান দাস আবার স্থানীয় বক্সিং ফেডারেশনের মাথাও। কোচিংয়ের নামে সে একপাল চাকর আর গোরক্ষক পোষে।

স্নেহাংশু অধিকারী

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৫

ভগবানের চোখ লাল। আগাগোড়া টকটকে। অথচ লোকটা নেশাভাঙ করে না। আড়াই ঘণ্টায় একটা সিগারেট অবধি খায়নি ভগবান দাস মিশ্র (জিমি শেরগিল)। তা হলে? ‘মুক্কাবাজ’ শুরুর সিন-কতক পরেই বোঝা গেল, ওটা মেকআপ। বলিউডের সাবেক ভিলেনিয়ানা। অভিনব কিছু না। তবু কোথায় যেন পরিচালক-প্রযোজক-চিত্রনাট্যকার অনুরাগের (কশ্যপ) টাচটা স্পষ্ট। হরিজন নায়ককে যে নিজের হিসিও খাওয়াতে চায় ভগবান!

প্রোমোশনে পরিচালক বলেছিলেন, এটা প্রেমের ছবি। স্পোর্টস-ড্রামাও বলা যায়। কিন্তু ওয়াসিপুর-ঘরানার নয়। ট্রেলারে তাই প্রেমেরই ফাঁদ পাতা ছিল। আর ছিল রিং-এর লড়াই। কিন্তু পিকচার শুরু হতেই বোঝা গেল, ও-সব ভাঁওতা। অনুরাগ এখনও ‘আগলি’ দুনিয়াতেই।

‘মুক্কাবাজ’ UA। এখানে কেউ মুখ খারাপ করে না। কথায় কথায় গুলিও চলে না। অনুরাগের তবু নোংরা ঘাঁটার স্বভাব গেল না! নোংরাটা দেশের স্পোর্টস-পলিটিক্সে। আর সমাজের প্রায় শিকড় পর্যন্ত চারিয়ে যাওয়া ধর্ম আর জাতের নামে বজ্জাতিতে।

প্রেমের গল্প বলতে গিয়েও অনুরাগ তাই ফের বাহুবলীর রাজত্বে। উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ নেতার বরেলী বাজারে। ভগবান দাস আবার স্থানীয় বক্সিং ফেডারেশনের মাথাও। কোচিংয়ের নামে সে একপাল চাকর আর গোরক্ষক পোষে। যারা ‘বক্সার’ লেখা টি-শার্ট পরে তার ফরমায়েশ খাটে। আর দল বেঁধে ‘শিক্ষা’ দিতে যায়। ‘উত্তরপ্রদেশের মাইক টাইসন’ হতে চাওয়া নায়ক শ্রবণ কুমারও (বিনীত কুমার সিংহ) সেই দলের। তবে তার লড়াইটা দলছুট হতে চেয়েই। গল্পে বাড়তি জটিলতা ভগবানের মূক ভাইজি সুনয়নার (জোয়া হুসেন) সঙ্গে তাঁর প্রেম।

মুক্কাবাজ

পরিচালনা: অনুরাগ কশ্যপ

অভিনয়: বিনীত কুমার সিংহ,
জোয়া হুসেন, জিমি শেরগিল

৭/১০

টুর্নামেন্ট পিছু জনা চল্লিশেক দর্শক। জেলাওয়াড়ি ভারতীয় বক্সিংয়ের এটাই চেহারা। এমন রিং-ফাইটিংয়ের প্রতিটি দৃশ্যই এ ছবিতে মাস্টারপিস। তবে বক্সিং এ ছবিতে বাহানা মাত্র। অনুরাগের পাঞ্চিং ব্যাগ আদতে আশপাশের বেঁচে থাকাটাই। ছবি জুড়ে অজস্র মজার ও বুদ্ধিদীপ্ত ডায়লগ। যদিও ছবির গতি দ্বিতীয়ার্ধে খানিক খেই হারিয়েছে। তবে গাজন যে নষ্ট হতে পারে, তার একটা ইঙ্গিত ছিল টাইটেল কার্ডেই। কাস্টের চেয়ে ক্রু দড় কশ্যপের এই ছবিতে। নায়ক, পরিচালক-সহ চিত্রনাট্যকার চার জন। ডিরেক্টর অব ফোটোগ্রাফিও চার। ছবিতে গানের ব্যবহার একটু বেশি। তবে অভিনয়ে বিশেষ উল্লেখ প্রয়োজন নবাগতা নায়িকা জোয়া হুসেনের। সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ আর চোখ দিয়ে অভিনয়ে তিনি ‘সুনয়না’-ই। অনুরাগ তাঁর ছবিতে সচরাচর নায়ক রিপিট করেন না। বিনীত সিংহ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম এবং অনবদ্য। শ্রবণের দলিত কোচের চরিত্রে রবি কিষেণও মানানসই। বরং ভগবানের চরিত্র কিছুটা ছাঁচে ঢালা।

ছবির শেষেও আবার অনুরাগের ছোঁয়া। ‘দি এন্ড’ নয়, পরদায় ভেসে উঠল ‘ভারত মাতা কী জয়’। শুরুটা ‘জনগণমন’ দিয়ে। হলের নিয়মে। তা বলে শেষেও দেশাত্মবোধ? অনুরাগ এতটাও ‘সরলমতি’ নন বোধ হয়!

Anurag Kashyap Mukkabaaz Bollywood Hindi Film
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy