দুর্গাপুজো যদি কলকাতার, দীপাবলি কিন্তু মুম্বইয়ের। এক সপ্তাহ আগে থেকে উদ্যাপন শুরু। আরবসাগর ঝলমলে আলোর রোশনাইয়ে। আতশবাজি, খানাপিনা তো আছেই। সববয়সি বলিউড তারকা উদ্যাপনে মাতেন। প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতে ধুমধাম করে ‘দিওয়ালি পার্টি’র আয়োজন। সেখানে উপস্থিত মাধুরী দীক্ষিত, সুস্মিতা সেন, সলমন খানেরা।
টলিউড তারকাদের বাড়িতেও সেই রেওয়াজ কি চালু? না কি, স্বতন্ত্রতা বজায় রাখতে তাঁরা এই হুল্লোড়ে যোগ দেন না? যদিও সাধারণ মানুষ ভাবেন, রুপোলি পর্দার তারকাদের জীবন বুঝি সিনেমার মতোই ঝলমলে। সেটা বলিউড হোক বা টলিউড। তাই উৎসব মানেই তাঁরা হুল্লোড়ে মাতেন।
বাংলা বিনোদনদুনিয়া বলছে, এখানেই নাকি বড় ফারাক বলিউড আর টলিউডের। টলিউড তারকারাও উদ্যাপনে মাতেন। কিন্তু বলিউডের মতো করে দীপাবলিতে পার্টি করেন না। ‘দিওয়ালি পার্টি’র ছবিটা তাই এখানে অন্য রকম। যেমন, অঙ্কুশ হাজরা। আনন্দবাজার ডট কমকে বলেছেন, “দিওয়ালি পার্টি বলতে ঠিক যেটা বোঝায় সেটা কোনও দিনই করিনি। হ্যাঁ এটা বলতে পারেন, বন্ধুরা মিলে এক সঙ্গে আড্ডা দিই। আর বাঙালির আড্ডায় খাওয়াদাওয়া থাকবেই। সেই আড্ডা কিন্তু তারকাখচিত নয়। বলতে পারেন ঘরোয়া আড্ডা।” আর থাকে পুজোর উদ্বোধন।
কোয়েল মল্লিকও প্রায় একই পথের পথিক। তাঁর বাড়িতে এ দিন অতিথিদের আনাগোনা থাকে। শ্বশুরবাড়ি পঞ্জাবি। ফলে, নতুন পোশাক পরা, সারা বাড়ি ফুল, আলোয় সাজানো, আমন্ত্রিতদের মিষ্টিমুখ— এ সবই থাকে। “কবীর একটু বড় হয়েছে। তাই ছোট ছোট বাজি পোড়ায় সে। কাব্য তো খুবই ছোট। এখনও ও এ সব থেকে দূরে। আমরা খুব হইহই বা প্রচুর বাজি পোড়ানোতে নেই। বরং নিজেদের মধ্যে, নিজেদের মতো করে কাটাতে ভালবাসি”, বললেন নায়িকা।
রাজ চক্রবর্তী আবার শনিবার থেকেই উদ্যাপনের মেজাজে। “আমাদের পারিবারিক বন্ধু নীল আর ফলক জন্মদিনের পার্টি রেখেছেন। ওখানে আমি আর শুভশ্রী পৌঁছে যাব।” যদিও এই হুল্লোড়কে ‘দিওয়ালি পার্টি’র তকমা দিতে রাজি নন বিধায়ক-পরিচালক। এ ছাড়াও প্রচুর পুজোর উদ্বোধন থাকে তাঁর ব্যারাকপুর নির্বাচনী কেন্দ্রে। সেখানে তাঁকে উপস্থিত থাকতেই হবে। শুভশ্রী তখন ব্যস্ত থাকবেন মালদহের পুজোর উদ্বোধনে। দীপাবলির দিন সস্ত্রীক রাজ পৌঁছে যাবেন নৈহাটির বড়মা-র কাছে। তাঁর কথায়, “এ বছর ঠিক করেছি বড়মা-র সঙ্গে দেখা করতে যাব। শুভশ্রীর খুব ইচ্ছা। ভিড় হয় বলে ছেলেমেয়েকে নিয়ে যেতে পারব না।”
দীপাবলির উদ্যাপনে মাতবেন নুসরত জাহান, দেব, ইধিকা পাল? ছবি: সংগৃহীত।
তবে চক্রবর্তী পরিবার বাজি পোড়ানো থেকে দূরে। “আমাদের বাড়িতে পোষ্য আছে। ওদের খুব কষ্ট হয়। ইয়ালিনিও ভয় পায়।” তার পরেই রাজের রসিকতা, “ছোটবেলায় প্রচণ্ড বাজি পোড়াতাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। মনে হয় বড় হয়ে গিয়েছি!” এও জানালেন, তাঁর সঙ্গে বড় হয়ে গিয়েছেন তাঁর গিন্নিও। শুভশ্রী বাজি পোড়াতে ভালবাসেন। বিয়ের পর প্রথম কালীপুজোয় দেদার বাজি পুড়িয়েছিলেন। পরের বছর সেই ইচ্ছেয় নিজেই নাকি লাগাম টেনেছেন।
এই প্রজন্মের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী ঊষসী রায়। সদ্য জন্মদিন গিয়েছে তাঁর। প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই জানালেন, ‘নো পার্টি’! রসিকতাও জু়ড়লেন, “খেটে খাওয়া মানুষ। কালীপুজোয় শুটিং থাকবে। সারা দিন সেটেই কাটবে। দীপাবলিতে হয়তো ছুটি পেলে পেতেও পারি। জানি না এখনও।”
আরও পড়ুন:
সাধারণ মানুষের আগ্রহ দেব, ইধিকা পাল, নুসরত জাহান, মিমি চক্রবর্তীকে ঘিরেও। দীপাবলিতেই ছেলে ঈশানকে প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিলেন যশ দাশগুপ্ত-নুসরত জাহান। প্রতি বছরই তাঁরা সুন্দর ভাবে দিনটি উদ্যাপন করেন। অন্য দিকে মিমির বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো হয়। দেবের এ বছর ‘রঘু ডাকাত’ মুক্তি পেয়েছে। এই ছবির তাঁর সিংহভাগ জুড়ে দেবী কালী। ইতিমধ্যেই তিনি বড়মা-র জন্য দামি বেনারসি পাঠিয়ে দিয়েছেন। পর্দার ‘রঘু’ কি বাস্তবেও সঙ্গীদের নিয়ে হুল্লোড়ে মাতবেন? এখন সেটাই দেখার।