Advertisement
E-Paper

স্টুডিয়োর মেকআপ রুম থেকে ব্যালট বক্স— সব ক্ষেত্রেই রাজনীতি কমলে ভাল হয়

‘শুধু প্রতিশ্রুতিতে এখন জনসাধারণকে বোকা বানানো যায় না, প্রার্থীকে যোগ্য হতে হবে।’

রূপাঞ্জনা মিত্র

রূপাঞ্জনা মিত্র

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ১৪:৩২
Image Of Rupanjana Mitra

নির্বাচন নিয়ে অকপট রূপাঞ্জনা মিত্র। শৌভিক দেবনাথ।

সাল ২০১০। ওই বছর থেকে রাজনীতির অলিন্দে ক্ষমতা বদল। কারণ, ওই বছর জনসাধারণ পরিবর্তন চেয়েছিল। ওই সময় থেকেই রাজনীতিকে খুব খুঁটিয়ে দেখতে আরম্ভ করেছি। এই পরিবর্তনের পিছনে গণমাধ্যমের একটা জোরালো ভূমিকা ছিল। সেটা কোনও ভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই। কারণ, জনসাধারণকে পরিবর্তনের সঠিক পথ তারাই দেখিয়েছিল। ফলাফল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের উত্থান। সাধারণকে সঠিক দিশা দেখানোর জন্য গণমাধ্যমকে আজও ধন্যবাদ জানাই।

আর সেই সময় থেকে রাজনীতি সম্পর্কে আরও বেশি সজাগ হওয়ায় এমন অনেক বদল দেখেছিলাম যা সাধারণের পক্ষে জানা বা দেখা সম্ভব না। যেমন, সেই সময় অনেক মানুষের প্রকৃত চেহারা প্রকাশ্যে এনেছিল ভোটের ময়দান। তখনও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে নাম লেখাইনি। প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াইনি। অন্যদের মতোই আমিও রাজ্যবাসী বা দেশবাসীর এক জন ছিলাম মাত্র। ফলে, তাঁদের মতো করে আমিও উন্নতি চেয়েছিলাম। পার্থক্য এ টুকুই, এক জন রাজনীতিমনস্ক ব্যক্তির চাওয়া যেমন হওয়া উচিত, তেমন চাওয়া আমার।

২০১৯-এ প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে এসেছি। তখনও কিন্তু আমার সেই চাওয়ার বদল ঘটেনি। এক জন সচেতন রাজ্যবাসী হিসেবে রাজ্যের প্রত্যেক মানুষের ভাল চেয়েছি। শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি, কাজ— সব দিক থেকে সমৃদ্ধি আসুক, বরাবরের প্রার্থনা। বিশেষ করে মেহনতি মানুষদের কথা বেশি ভেবেছি। ওঁরা রোদ, জল, ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিশ্রম করেন। সংবিধান অনুযায়ী অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের দাবিদার প্রত্যেকে। ন্যূনতম সকলের এই চাওয়া যেন পূরণ হয়। সঙ্গে শিক্ষিত হওয়াও জরুরি। এর জন্য অনেক বার পথে নেমেছি।

এ বার প্রশ্ন, সেই চাওয়া কতটা পূরণ হয়েছে? একের পর এক নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে আমাদের শহর কতটা উন্নত হয়েছে?

এক কথায় বলতে গেলে, কলকাতা সত্যিই তিলোত্তমা হয়েছে। ভীষণ সুন্দরী সে। সৌন্দর্যায়নের উপরে জোর দেওয়ায় অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে। কোনও শহর সুন্দর সাজানো হলে সেটা পর্যটন শিল্পেও প্রভাব ফেলে। সুন্দর শহরে কার না বেড়াতে যেতে ইচ্ছে করে? এই সৌন্দর্য সরিয়ে একটু ভিতরের দিকে নজর চালালে মনটা দমে যায়। যা যা ফাঁক ছিল সে সব ঠিক তেমন রয়ে গিয়েছে। কিচ্ছু ভরাট হয়নি। কেবল অন্দরে অন্দরে ক্ষমতা দখল, ক্ষমতা প্রদর্শনের লড়াই। মিথ্যে আস্ফালন।

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের থেকে তাই আমার চাওয়া আগেরগুলোই। ধর্ম-জাতি-শ্রেণিনির্বিশেষে সাংবিধানিক সব অধিকার যেন পান সকলে। রাজ্যের বা শহরের প্রবীণ নাগরিকদের কথা আলাদা করে ভাবা হোক। কারণ, উপার্জনের কারণে অধিকাংশ সন্তান এখন শহর, রাজ্য বা দেশের বাইরে। পশ্চিমি সভ্যতার অনুকরণে বা অনুসরণে আমরা বিশ্বাসী। সেই জায়গা থেকে বলব, পাশ্চাত্যে কিন্তু প্রবীণ নাগরিকেরা যথেষ্ট নিরাপদ। এবং তাঁদের যথাযথ দেখভাল করে রাষ্ট্র। তাঁদের জন্য বিশেষ আইনও রয়েছে সেখানে। আর একটু শান্তি চাই। ইদানীং যার সত্যিই বড় অভাব।

আর একটা চাওয়া না চাইলেই নয়, স্টুডিয়োর মেকআপ রুম থেকে ব্যালট বক্স— সব ক্ষেত্রেই রাজনীতি কমলে ভাল হয়। এত রাজনীতির তো কোনও দরকার নেই! মাথায় রাখতে হবে, শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে এখন আর মানুষকে বোকা বানানো যায় না। এখন প্রার্থীকে সব দিক থেকে যোগ্য হতে হয়।

Rupanjana Mitra Celebrity politician
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy