জন্মদিনে যিশুদাকে নিয়ে লিখতে হলে আমাকে একটু পিছনে ফিরে যেতে হবে। কারণ, আমার প্রথম ছবির নায়ক যিশুদা। ভাবলে এখনও অবাক হই। ‘বাবা, বেবি ও’ ছবিটি ঘিরে তাই যিশুদার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব আরও পোক্ত হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই যিশুদার অভিনয় দেখছি। এত সুদর্শন অভিনেতা! আমার তো এক সময়ে যিশুদার উপর খুব বড় ‘ক্রাশ’ ছিল। ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পর কয়েকটা অনুষ্ঠানে যিশুদার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কিন্তু সেই ভাবে আলাপ ছিল না। দাদা যে আমার প্রথম ছবির অংশ, সেটা জানার পর বিশ্বাস করতে পারিনি। এক ধাক্কায় ছোটবেলার স্মৃতিগুলো ফিরে ফিরে আসছিল।
শুটিংয়ের সময়েই যিশুদাকে আরও ভাল ভাবে চিনতে পারি। মজার মানুষ। সকলকে নিয়ে হইহই করতে ভালবাসেন। তার থেকেও বড় কথা, আমি তখন নতুন। ‘উইন্ডোজ়’-এর মতো বড় প্রযোজনা সংস্থার ছবি। সব মিলিয়ে একটু নার্ভাস ছিলাম। সেটেও শুরুর দিকে একটু চুপচাপ থাকতাম। কিন্তু যিশুদা এত বড় একজন অভিনেতা— সেটা আমাকে বুঝতে দেননি। বরং হাসিঠাট্টার মধ্যে দিয়ে আমাকে আরও সহজ করে তুলেছিলেন।

‘বাবা, বেবি ও’ ছবির একটি দৃশ্যে যিশু (বাঁ দিকে) এবং শোলাঙ্কি। ছবি: সংগৃহীত।
শুটিংয়ের সময় আমি, অরিত্র (ছবির পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়), গৌরব (গৌরব চট্টোপাধ্যায়), বিদীপ্তাদি (বিদীপ্তা চক্রবর্তী) মিলে প্রচুর আড্ডা দিয়েছিলাম। একটা সিরিয়াস ঘটনা মনে পড়ছে। একদিন শুটিংয়ে যাওয়ার পথে দু’টি ছেলে আমার গাড়ি আটকায়। বুঝতে পারি, ওরা মদ্যপ অবস্থায় রয়েছে। তাদের মধ্যে এক জন এক সময়ে খুব খারাপ ভাষায় কথা বলতে শুরু করে। আমি জীবনে হয়তো দু’জনকে চড় মেরেছি। তার মধ্যে এক জন ওই ছেলেটি! তার পর ফ্লোরে পৌঁছে খুব চুপচাপ ছিলাম। কী ঘটেছে, সকলে আমার মুখ থেকে শুনলেন। যিশুদা তো শুনেই অবাক। বললেন, ‘‘কী? তুই চড়ও মেরেছিস!’’ তার পর থেকে অনেক দিন যিশুদা আমাকে নিয়ে মজা করতেন। আসলে দাদা বুঝতে পেরেছিলেন, আমার মনখারাপ। তাই আমাকে আরও সহজ করার জন্যই মজা করছিলেন। আমিও তার পর হেসে ফেলেছিলাম। তবে আমি যে কাউকে, বিশেষ করে কোনও পুরুষকে চড় মারতে পারি, সেটা হয়তো দাদা বিশ্বাস করতে পারেননি। সে দিন থেকে একটু হলেও হয়তো দাদার কাছে আমার ভাবমূর্তি বদলে গিয়েছিল।
যিশুদার সঙ্গে এখন যোগাযোগটা খুবই কমে গিয়েছে। এর মধ্যে দেখাও হয়নি। কারণ, দাদা এখন অনেকটা সময় বলিউড এবং দক্ষিণী প্রজেক্টের জন্য শহরের বাইরে থাকেন। কিন্তু মাঝেমাঝে মনে হয়, ‘বাবা, বেবি ও’-র সিক্যুয়েল তৈরি হলে কেমন হত! প্রযোজনা সংস্থা এবং পরিচালক যদি রাজি হন, তা হলে আমিও রাজি। আবার সকলে মিলে মজা করে একটা ভাল ছবি তৈরি করা যাবে।
জন্মদিনে এটাই চাই, যিশুদা আরও ভাল ভাল কাজ আমাদের উপহার দিক। আর আশা করছি, খুব দ্রুত আমাদের দেখাও হবে এবং একসঙ্গে নতুন কোনও কাজও করব।
(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত)