Advertisement
E-Paper

শিক্ষামন্ত্রীর অন্য ‘যোগাযোগ’

১৯৩৬ সালে এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শিশির ভাদুড়ী। আটাত্তর বছর পরে সেই চরিত্রেই ব্রাত্য বসু। সঙ্গে অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।প্রায় আটাত্তর বছর আগে শিশির ভাদুড়ীর অনুরোধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘যোগাযোগ’ উপন্যাসটির নাট্যরূপ দিয়েছিলেন। নাটকে মধুসূদনের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন স্বয়ং শিশির ভাদুড়ী। কুমুদিনীর চরিত্রে ছিলেন কঙ্কাবতী।

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৪ ০০:০০
ব্রাত্য বসু

ব্রাত্য বসু

প্রায় আটাত্তর বছর আগে শিশির ভাদুড়ীর অনুরোধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘যোগাযোগ’ উপন্যাসটির নাট্যরূপ দিয়েছিলেন। নাটকে মধুসূদনের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন স্বয়ং শিশির ভাদুড়ী। কুমুদিনীর চরিত্রে ছিলেন কঙ্কাবতী।

বাংলার নাটকের দর্শক এর পরেও ‘যোগাযোগ’ মঞ্চস্থ হতে দেখেছে। ১৯৫৮-তে নীতিন বসু ‘যোগাযোগ’ অবলম্বনে একটি সিনেমার নির্দেশনা করেছিলেন।

ছেচল্লিশ বছর পর সেই একই উপন্যাস অবলম্বনে আবার একটা সিনেমা তৈরি করতে চলেছে টলিউড। পরিচালক শেখর দাশ। অভিনয়ে থাকছেন ব্রাত্য বসু (মধুসূদন), অনন্যা চট্টোপাধ্যায় (শ্যামাসুন্দরী), অর্জুন চক্রবর্তী (বিপ্রদাস), লকেট চট্টোপাধ্যায় (মতির মা) সাহেব চট্টোপাধ্যায় (নবীন) প্রমুখ। তবে কুমুদিনীর চরিত্রের জন্য শ্রাবন্তীর সঙ্গে পরিচালকের কথা হয়েছে। যদিও কিছুই ফাইনাল হয়নি। হয়তো নতুন কাউকেও এই চরিত্রে দেখা যেতে পারে।

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

রবীন্দ্রনাথ যে সময়ে এই উপন্যাসটা লিখেছিলেন, তখন তাঁর মেয়ের বিবাহ-বিচ্ছেদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগত জীবনে নিজে বেশ যন্ত্রনায় ছিলেন। তার প্রতিফলন এই উপন্যাসে লক্ষ করা যায়।

শেখরের চিত্রনাট্যে সিনেমার পটভূমি খানিকটা এগিয়ে আনা হয়েছে। ছবিটির মূল বক্তব্য দু’ধরনের আদর্শের সংঘাতকে কেন্দ্র করে। আজও এই সংঘাত অনেক সম্পর্কের মধ্যেই দেখা যায়। শুধু তাই নয়, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’-এর যে-প্রসঙ্গ উঠে এসেছে এই উপন্যাসে, তা আজও যথেষ্টই প্রাসঙ্গিক।

তবে কাজ শুরু করার ঠিক আগে ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘নৌকাডুবি’-র বৈভব দেখে পিছিয়ে আসেন শেখর। “আমি যে ইন্টারপ্রিটেশনটা করতে চাইছিলাম, তার বাজেট তখন আমার ছিল না,” বলেন পরিচালক।

শেখর দাশ

পরে মত পাল্টান। প্রযোজক নবরতন ঝাওয়ারের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হয়, আগামী মাসেই শ্যুটিং শুরু হবে। ছবির সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি বসু, চিত্রগ্রাহক ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য যদিও রবীন্দ্রনাথের নাটক এবং উপন্যাস দু’টোকেই স্টাডি করে লেখা, তবে গুরুত্ব উপন্যাসেরই বেশি।

রবীন্দ্রনাথের ‘চতুরঙ্গ’কে নিয়ে নাটক করেছিলেন ব্রাত্য। সে উপন্যাসের নাট্যরূপ দিয়েছিলেন শেখর সমাদ্দার। তাঁকে ব্রাত্য এক সময় অনুরোধ করেছিলেন ‘যোগাযোগ’ উপন্যাসের নাট্যরূপ দিতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজটা হয়ে ওঠেনি। ‘যোগাযোগ’ সিনেমায় মধুসূদনের ভূমিকায় অভিনয় করার প্রস্তাব পেয়ে ব্রাত্য খুশি। কারণ শুধু এটা নয় যে, এক সময় শিশির ভাদুড়ী এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ব্রাত্যর মতে, এই উপন্যাসে আধুনিকতার সঙ্গে রক্ষণশীলতার যে দ্বন্দ্ব, পুরুষতন্ত্রের সঙ্গে নারীবাদের যে দ্বন্দ্ব, সেটা আজও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। মধুসূদনের মতো আজও এমন অনেক পুরুষই আছেন, যাঁরা ধরেই নেন যে অর্থ এবং ক্ষমতা থাকলে সবই পাওয়া সম্ভব। “মধুসূদন এবং কুমুদিনীর আশ্চর্য লাভ অ্যান্ড হেট রিলেশনশিপ নিয়ে বুদ্ধদেব বসুর মতো প্রাবন্ধিকও আলোচনা করেছিলেন। আমার মনে হয়, রবীন্দ্রনাথ যে ভাবে তাঁর পিতামহ দ্বারকানাথকে দেখতেন, তার অস্পষ্ট ছায়া আছে মধুসূদনের চরিত্রের মধ্যে। এত বার লন্ডন গিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তবু ঠাকুর্দার সমাধি দেখতে একবারও যাননি। অথচ ঠাকুরবাড়ির যে বৈভব, সেটা দ্বারকানাথের হাত ধরেই এসেছিল,” বলেন ব্রাত্য।

আরও জানান, “মধুসূদন আর শ্যামাসুন্দরীর সম্পর্কের মধ্যে আমি রবীন্দ্রনাথ আর জ্ঞানদানন্দিনীর সম্পর্কের প্রতিফলন দেখতে পাই। চেষ্টা করব যাতে দর্শক মধুসূদন এবং শ্যামাসুন্দরীর সম্পর্কটা দেখে ‘ঘরে বাইরে’-র নিখিলেশ আর তাঁর বৌঠানের সম্পর্কের আভাসটা পান।” এ দিকে অনন্যাও শ্যামাসুন্দরীর চরিত্রটি নিয়ে বেশ উত্‌সাহিত। বলছেন, “শ্যামাসুন্দরীর চরিত্রে নানা দিক রয়েছে। ফুটিয়ে তোলাটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে।”

rabindranath tagore jogajog bratya basu ananya chattopadhay sekhar das sisir bhaduri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy