গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুত যে বাড়িতে থাকতেন, বান্দ্রার সেই মঁ ব্লঁ অ্যাপার্টমেন্টে আজ তিন ঘণ্টারও বেশি কাটালেন সিবিআই গোয়েন্দারা। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরে বৃহস্পতিবার রাতেই মুম্বই পৌঁছে গিয়েছিল সিবিআইয়ের টিম। কাল থেকে তদন্ত শুরু করেছে তারা।
সুশান্তের মৃত্যুর আগে কী কী ঘটতে পারে, তার ‘পুনর্নির্মাণ’ করতে আজ সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সুশান্তের বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানি (যিনি সুশান্তের ফ্ল্যাটেই থাকতেন) এবং তাঁদের রান্নার লোক নীরজ। এই দু’জনই সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিলেন। গতকাল নীরজ ও সিদ্ধার্থের বয়ান রেকর্ড করেছিল সিবিআই।
আজ সুশান্তের ফ্ল্যাটে সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের সঙ্গে ছিলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও। প্রথমে দলটি যায় বাড়ির ছাদে। তার পরে সুশান্তের ফ্ল্যাটে ঢোকেন গোয়েন্দারা। বাড়ির বাইরে থেকে দেখা যায়, সুশান্তের শোওয়ার ঘরের ছবি ও ভিডিয়ো তুলছেন তাঁরা। সিবিআইয়ের এক গোয়েন্দা জানিয়েছেন, যেখানে সুশান্তের দেহ মিলেছে, সেখানে আদৌ আত্মহত্যা করা সম্ভব কি না, সেটাই প্রথমে তদন্ত করে দেখতে চান তাঁরা।
আরও পড়ুন: ‘তালা ভাঙার পর সুশান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখিনি, ওরা চলে যেতে বলে’
এ দিনই সিবিআইয়ের আর একটি দল গিয়েছিল শহরের কুপার হাসপাতালে। এখানেই সুশান্তের দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছিল। হাসপাতালের ডিন এবং যে ক’জন চিকিৎসক ময়না-তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের সকলের সঙ্গে কথা বলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বান্দ্রার বাড়ির ছাদে সিবিআই গোয়েন্দারা। শনিবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।
মুম্বই পুলিশের তদন্তে যে ফাঁক রয়েছে, তার প্রমাণ হিসেবে বিহার পুলিশ জানিয়েছিল, ময়না-তদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর সময়ের কোনও উল্লেখ ছিল না। আজ এই প্রসঙ্গে দিল্লির এমসের ফরেন্সিক মেডিসিনেও টক্সিকোলজি বিভাগের প্রধান সুধীর গুপ্ত বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তে মৃত্যুর সময় লেখার জায়গাটি ফাঁকা রেখে দেওয়া খুবই আশ্চর্য ব্যাপার। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে এই ফাঁক থাকলে মুম্বই পুলিশের তখনই উচিত ছিল, দ্বিতীয় কোনও বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকের মত নেওয়া।’’
ডাকা হয়েছে সিদ্ধার্থ পিঠানিকেও
সিবিআইয়ের তৃতীয় একটি দল আজ ফের বান্দ্রা থানায় গিয়েছিল। মুম্বই পুলিশের যে সব অফিসার প্রথম থেকে সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত করছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। গতকালও বান্দ্রা থানায় গিয়েছিল সিবিআইয়ের দলটি।
গতকালই প্রয়াত অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে নির্দেশক মহেশ ভট্টের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের স্ক্রিনশট প্রকাশ করেছিল এক বেসরকারি খবরের চ্যানেল। তার মধ্যে একটি চ্যাটে দু’জনের ঘনিষ্ঠতা স্পষ্ট বলে দাবি করে চ্যানেলটি। আজ মহেশের মেয়ে পূজা ভট্ট বাবার সঙ্গে তাঁর নিজের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে বলেন, ‘‘যে মেসেজটি নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছে সেটা একটা ফরোয়ার্ড করা মেসেজ। বাবা অনেককেই এই মেসেজটা পাঠিয়েছিলেন। আমাকেও।’’
সুশান্তের বান্দ্রার এক প্রতিবেশী এ দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন যে, সুশান্তের মৃত্যুর আগের দিন, অর্থাৎ ১৩ জুন, অভিনেতার বাড়িতে কোনও পার্টি হয়নি। ওই প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘পার্টি হলে নিশ্চয় আওয়াজ শোনা যেত।’’ ওই মহিলার আরও দাবি, মৃত্যুর আগের রাতে নাকি খুব তাড়াতাড়ি সুশান্তের ফ্ল্যাটের সমস্ত আলো নিভে যায়। সাধারণত সুশান্ত সারা রাত জেগে থাকতেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy