Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শ্যুটিংয়ের আগে উইকেট কিপিং-টা শিখে নেব

‘কাই পো চে’তে ছিলেন ব্যর্থ ক্রিকেটার। সুশান্ত সিংহ রাজপুত এ বার এম এস ধোনির চরিত্রে। কোনও দিন ভেবেছেন কি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চরিত্র করবেন? শুনলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।‘কাই পো চে’তে ছিলেন ব্যর্থ ক্রিকেটার। সুশান্ত সিংহ রাজপুত এ বার এম এস ধোনির চরিত্রে। কোনও দিন ভেবেছেন কি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চরিত্র করবেন? শুনলেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।

ছবি: আর বর্মন।

ছবি: আর বর্মন।

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

নীরজ পাণ্ডে যখন প্রথম আপনাকে ‘ধোনি’র চরিত্র করতে বলেছিলেন, ওঁকে কি বলেছিলেন ‘আমাকেই কেন বাছলেন?’

তা কেন বলতে যাব? ওর মাথায় যখন একটা আইডিয়া তৈরি হয়েছে, এবং সেটা আমাকে নিয়ে, তার পর সেটা নিয়ে প্রশ্ন করে কোনও লাভ নেই। শুধু শুধু বিভ্রান্ত করব কেন? শুধু ‘এম এস ধোনি’র সময় নয়, ‘ব্যোমকেশ’-এর কাস্টিংয়ের সময়ও আমি দিবাকর (বন্দ্যোপাধ্যায়) কে এ প্রশ্ন করিনি। ওরা যদি ভেবে থাকে আই অ্যাম দ্য রাইট চয়েস, তা হলে ওরা নিশ্চয়ই ঠিক ভাবছে।

ব্যক্তিগত ভাবে আপনি কি ধোনির ফ্যান?

সে আর বলতে? ও দুর্ধর্ষ ক্রিকেটার। দু’বার ভারতের জন্য বিশ্বকাপ জিতেছে। ওকে এড়িয়ে থাকাই যায় না। ইউ কান্ট সি থ্রু হিম। আর খুব চাপের মধ্যেও কী ঠান্ডা মাথায় ও নিজের কাজটা বের করে নেয়। ঠিক যে ভাবে নিজে প্ল্যান করেছে, সেটাই করে। সিদ্ধান্তও নেয় সেই প্ল্যান মাথায় রেখেই। ও অন্যদের থেকে অনেকটাই আলাদা। ওর চরিত্রে অভিনয় করতে গেলে প্রথমে ওকে বুঝতে হবে।

ধোনিকে বোঝার এই কঠিন কাজটা শুরু করে ফেলেছেন কি? ওর সঙ্গে কথা বলে এমন কিছু দেখেছেন যেটা আমজনতা জানে না?

আরও আলোচনা করতে হবে। তবে এটা বুঝতে পারি ও ঠান্ডা মাথার মানুষ। আর খুব ‘সর্টেড’। সব কিছুর পেছনেই ওর সুচিন্তিত প্ল্যান থাকে। শুধু তাই নয়, সেই প্ল্যানটা কাজ না করলে তার একটা বিকল্প প্ল্যান বি, প্ল্যান সি-ও থাকে।

আপনি উইকেট কিপিংটা কেমন করেন? হেলিকপ্টার শট-টা শিখেছেন?

এখনও প্রস্তুতি সে ভাবে শুরু করিনি। তবে এটুকু বলতে পারি, যে দিন প্রথম শ্যুটিং করতে যাব, সে দিন উইকেটের পিছনে কিপিংটা কী ভাবে ভাল করে করতে হয়, সেটা শিখেই যাব। বায়োপিক যাকে নিয়েই হোক না কেন, একটা নির্ধারিত গঠনপ্রক্রিয়া সব ছবিতেই মেনে চলা হয়। সেটা এই ছবির ক্ষেত্রেও মানা হবে। তার জন্যই প্রস্তুতি নেওয়া। নীরজের সঙ্গে আমার দেখা হবে কিছু দিনের মধ্যেই। তখন সবিস্তার আলোচনা হবে। এটুকু বলতে পারি যে আমার সব কিছু উজাড় করে ধোনির এই রোলটা করব। এত জনপ্রিয় একজন মানুষ। সকলেরই ওকে নিয়ে নানা অভিমত। তাই খুব সতর্ক হয়ে করতে হবে।

ধোনি নিজে কোনও পরামর্শ দিয়েছেন?

না, এখনও পর্যন্ত নয়।

কোনও দিন ভেবেছেন কেমন হত যদি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে বলা হত আপনাকে?

(একটু ভেবে) আমি ওই ভাবে ভাবি না। যখন একটা ছবি করব কী করব না ভাবি, তখন একটা অদ্ভুত প্রক্রিয়া শুরু হয় আমার মধ্যে। চিত্রনাট্য পড়া বা সেটার বিবৃতি শুনতে গিয়ে নিজের মধ্যে একটা তাগিদ অনুভব করি কি না, সেটা বোঝার চেষ্টা করি। ছবির ঘরানা দেখে সেই সিদ্ধান্তটা নিই না। সৌরভ কত ভাল অধিনায়ক, কত ভাল বক্তা! অনেক গুণ আছে ওর। তবে ওই যে বললাম ছবি করার আগে আমার মাথায় অন্য চিন্তা ঘোরে। পছন্দের পরিচালকদের তালিকা আমার আছে। কিন্তু অন্য কোনও পছন্দের তালিকা আমার নেই।

আপনি না কি এক সময় পাঁচ জন পরিচালকের পছন্দের তালিকা তৈরি করেছিলেন। তার মধ্যে চার জনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কাজ করে ফেলেছেন!

হ্যাঁ, একদম ঠিক। এখন উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরও বেড়ে গিয়েছে। দশ জনের তালিকা বানিয়েছি।

নামগুলো বলবেন?

না, না। আগেভাগে বললে যদি না হয়? যদি হয়, তা হলে আপনাকে আবার ফোন করব। বলব আমার তালিকায় ক’টা টিক মার্ক হল।

যে সব পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন তাঁদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করেছেন?

কিছু কিছু জিনিস সবার একই রকম। যেটা আলাদা, সেটা হল সহজাত প্রবৃত্তি। কেউ হয়তো একই শট স্টেডি ক্যামে নেবে। কেউ আবার সেটা নেবে মুভিং ক্যামেরাতে। এরা সবাই একটা জিনিস খুব ভাল ভাবে জানে। তা হল সিনেমা করতে গেলে কী করতে নেই। আর এরা মানসিক দিক থেকে খুব উদার। যে কোনও প্রস্তাবনাই এরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে শোনে।

‘লগান’ করার আগে অনেকে আমিরকে বলেছিলেন ক্রিকেট নিয়ে ছবি এ দেশে চলবে না। ‘লগান’য়ের পর ‘এম এস ধোনি’ই হল ক্রিকেট নিয়ে সব থেকে বড় ছবি। সেটা ভেবে কোনও চাপ অনুভব করছেন?

আরে আমার প্রথম ছবি ‘কাই পো চে’তে আমি তো একজন ক্রিকেটারেরই রোলে ছিলাম। ব্যর্থ ক্রিকেটার যদিও। আর ছবিটা ভালও করেছিল। তবে ছবির ঘরানা ভেবে আমি সেটাতে অভিনয় করতে রাজি হই না। প্রথমে দেখি ছবিতে কিছু বলার আছে কি না। তার পর শুরু হয় আমার প্রস্তুতি। শ্যুটিংয়ের শেষ দিন পর্যন্ত সেই চরিত্র নিয়ে আমি থাকি। নস্টালজিয়া থাকে সে চরিত্রটা সম্পর্কে। তার পর চরিত্রটাকে গুডবাই বলে দিই। ছবি থেকে নিজেকে একদম সুইচ-অফ করে নিই। এর পর সেই ছবি কত টাকার ব্যবসা করল, চলল কি চলল না, সে সব নিয়ে আমি ভাবতেও চাই না। অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেন অর্থ-যশ এ সবের জন্য আমি ছবি করি কি না। এই জিনিসগুলো আমার কাছে চালিকাশক্তি। কিন্তু এগুলোই সব নয়।

আমির খানের সঙ্গে ‘পিকে’ করলেন। কী শিখলেন আমিরের থেকে?

প্রথম যে দিন আমিরের সঙ্গে দেখা হয়, ও একটা গানের রিহার্সাল করছিল। কথা শুরু করতেই আমাকে বলল ‘কাই পো চে’তে আমার চরিত্রটা কেমন লেগেছে ওর। ছবিটা সম্পর্কে আলোচনা করল। তার পর বলল কোন কোন দিকে অভিনেতা হিসেবে আমার নজর দেওয়া উচিত।

যেমন?

সাক্ষাৎকারে সে সব নাই বা বললাম। মোদ্দা কথা হল আমিরকে দেখে আমি বুঝেছি কেন আমিরের মতো মানুষেরা এত দিন ধরে শীর্ষ স্থানে থেকে যায়। সব বিষয় নিয়েই আমিরের প্রবল কৌতূহল। এমনকী একটা চরিত্র করতে গেলে তার সম্পর্কেও সব কিছু জানা চাই ওর। আমি নিজেও এ ভাবেই কাজ করতে পছন্দ করি। আমিরকে দেখে মনে হল আমি ঠিক পথেই এগোচ্ছি।

এক সময় বলেছিলেন ‘পিকে’র রোলটা পাওয়ার পর রাজকুমার হিরানি আপনাকে একটা কুড়ি টাকার নোট দিয়েছিলেন। সেটা কি রেখেছেন এখনও?

অবশ্যই। ল্যামিনেট করে রাখা আছে। যে দিন অডিশন দিয়ে চরিত্রটা পেয়েছিলাম, তার ঠিক এক মাস আগে মুম্বইয়ের কার্টার রোডে রাজুকে দেখেছিলাম। মনে মনে ভেবেছিলাম যদি এক দিন ওর ছবিতে কাজ পাই। এক মাস পর তাই হল। রাজু একেবারে অমায়িক ভদ্রলোক। অসম্ভব বিনয়ী।

এই অল্প সময়ে সিনেমা করে অদ্ভুত সব চরিত্র করছেন। এই বৈচিত্র কি আপনার কেরিয়ারের ইউএসপি?

এর জন্যই তো অভিনেতা হওয়া। যাতে বিভিন্ন ধরনের চরিত্র করতে পারি। এই কারণেই তো ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে ফিল্ম দুনিয়ায়। এই নানা ধরনের চরিত্রের দুনিয়াটা মুগ্ধ করে আমাকে। মনে পড়ছে আদি (আদিত্য চোপড়া) যখন আমাকে ব্যোমকেশ করতে বলেছিল, অডিশন দিয়েছিলাম। তার পর স্ক্রিপ্ট পড়ি। চোখের সামনে খুলে যায় এক নতুন জগৎ। সে জগতের সঙ্গে আমার তেমন পরিচয় ছিল না। শ্যুটিংয়ের আগে ব্যোমকেশকে নিয়ে যত ধরনের কাজ হয়েছে, সব দেখে ফেলেছিলাম। তা সে দূরদর্শনের রাজিত কপূর হোক বা বাংলায় হওয়া কাজগুলো।

অঞ্জন দত্তর ছবিগুলো?

হ্যাঁ, দেখেছি।

আবির চট্টোপাধ্যায়কে চেনেন?

(হেসে) চিনি। ওর ব্যোমকেশ দেখেছি তো।

এত যে ব্যোমকেশ দেখলেন, তার থেকে আপনাদেরটা আলাদা কোথায়?

প্রত্যেকটা ছবিতেই ব্যোমকেশ জানে ও ‘ব্যোমকেশ’। ও জানে ও বুদ্ধিমান। নিজের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা আছে ওর। আমাদের ছবিতে ওর বয়স অল্প। সদ্য কলেজ পাশ করেছে। এই ছবিতে ও প্রথম নিজেকে ব্যোমকেশ হিসেবে আবিষ্কার করছে। আমাদের সিরিজের তৃতীয় ছবিটায় গিয়ে ও হয়তো পরিপূর্ণ ভাবে বুঝবে যে ও ব্যোমকেশ। ছবিতে কেস আছে ঠিকই। তবে অন্য একটা বিষয়ও আছে। ব্যোমকেশ চরিত্রটা আসলে কিন্তু খুব একাকী। ওপরে ওপরে দেখায় ও এ ভাবেই যেন ভাল আছে। আসলে কিন্তু ও সঙ্গী খোঁজে।

সঙ্গী বলতে? পুরুষ সঙ্গী না মহিলা?

ও সঙ্গ চায়। পুরুষ না মহিলা সেটা বড় কথা নয়। বাস্তব জীবনে আমরা অনেকেই এ রকম। সঙ্গ চাই। তবে সেটা বলতে পারি না। নিঃশর্ত ভালবাসা চাই। এমন কিছু মানুষ চাই আশেপাশে যারা আমাদের বিচার করবে না। ভিতরে ভিতরে ব্যোমকেশ এ রকমই সঙ্গ চায়। যদিও মুখে কিছু বলে না।

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করলেন। ওঁর চরিত্রটা কেমন লাগল?

আসলে আমি না এমন চুক্তিতে রয়েছি যেখানে আমি আলাদা করে কোনও ডিটেলস বলতে পারব না।

অল্প সময়ে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন। তবু সংবাদ মাধ্যমে আপনাকে সে ভাবে দেখা যায় না কেন? এটা কি ইচ্ছাকৃত?

আমার মনে হয় কাজটাই আমার হয়ে কথা বলবে। আলাদা করে আমাকে তা নিয়ে চিৎকার করতে হবে না। সোশ্যালাইজ করতে এমনিতেই আমার খুব একটা ভাল লাগে না। আমি মানুষ হিসেবে বেশ একঘেয়ে। সেটাই আমার ধারণা। ইন্টারেস্টিং কিছু না পেলে আমি ৫-১০ মিনিটের বেশি কারও সঙ্গে কথা বলতে পারি না।

এ সব বললে তো লোকে আপনাকে উন্নাসিক বলবে! আরও বেশি করে গুজব ছড়াবে যে আপনি নাকি ফোন ধরেন না...

গুজবে আমার কিছু যায় আসে না। যখন টিভি করতাম, তখন শুনতাম আমি নাকি নিজেকে শাহরুখ খান ভাবি। তার পর শুনলাম আমি নাকি ছবিতে চান্স পেয়েছি শুধুমাত্র ভাল নাচতে পারি বলে। কিন্তু প্রথম পাঁচটা ছবিতে আমি এক বারও নাচিনি। লোকে কী গুজব ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। নিজের কাজ করে যাই। নিজের মতো করেই জীবনটাও উপভোগ করি। তার পর বাড়ি ফিরে যাই। ওখানে অঙ্কিতা (লিভ ইন পার্টনার) আছে। ওর সঙ্গে সময় কাটাই। আর কিছু বিশেষ বন্ধু আছে। ওদের নিয়ে বেশ চলে যায়।

প্রচুর শোরগোল হয়েছে আপনি শেখর কপূরের ‘পানি’ করছেন কি না তা নিয়ে। সত্যিটা কী?

অবশ্যই করছি। খুব বড় একটা প্রজেক্ট। ফিউচারিস্টিক ফিল্ম এটা। আমার কাছে এই ছবিটা করার জন্য কোনও রেফারেন্স নেই। ব্যোমকেশের ক্ষেত্রে ১৯৪০-য়ের কলকাতার ছবি দেখেছি। ধোনির ক্ষেত্রেও ভিশ্যুয়াল রেফারেন্স আছে। কিন্তু ‘পানি’র ক্ষেত্রে সে রকম কিছুই নেই। পুরোটাই কল্পনা।

আপনার সতীর্থদের নামে গুজব ছড়ালে তো তাঁরা নড়েচড়ে বসবেন। আপনি নিজেকে এ সবের থেকে সরিয়ে রাখেন কী করে? নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন না?

একটা সময় গায়ে লাগত। কিন্তু তার পর যখন রাজকুমার হিরানি, শেখর কপূর, দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করলাম, তখন জীবনটাকে অন্য ভাবে দেখতে শুরু করলাম। কে কী বলল, কে কী লিখল, দে জাস্ট ডোন্ট কেয়ার! ভাবতে পারেন দিবাকরের বাড়িতে কোনও খবরের কাগজ ঢোকে না। টিভিও নেই।

আপনার বাড়িতে টিভি আছে তো? এত দিন টিভিতে কাজ করে এলেন...

তা আছে। তবে অনেক অন্য ধরনের অনুষ্ঠান দেখি। কিছু ছবি দেখি, টিভি সিরিজ দেখি। কিন্তু বিনোদন জগতের কোনও গসিপ চ্যানেল দেখি না। অঙ্কিতা অবশ্য বললে ওর সিরিয়ালটা দেখি। হয়তো বলল দেখো তো, ‘পবিত্র রিস্তা’য় আমার এই কস্টিউমটা কেমন লাগছে। তখন দেখি।

এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন সিনেমা সম্পর্কে আপনার ধারণা খুব কম। আপনার পেশায় কম জেনেও অনেকেই অনেক জানার ভান করেন। সেখানে এই স্বীকারোক্তি কেন?

যখন শেখর কপূরের মতো মানুষের সঙ্গে কথা বলি, তখন বুঝি ওর তুলনায় আমার সিনেমার জ্ঞান কত সীমিত। এটা একবার বুঝে গেলে তখন আর নিজের স্বল্প জ্ঞানটা ঢাকঢোল পিটিয়ে জাহির করতে ইচ্ছে করে না। আই কান্ট ফেক ইট। তার জন্য হয়তো কম সংখ্যক সাক্ষাৎকার দিই আমি। কী আর বলার থাকে ৫০০টা সাক্ষাৎকারে? একটা ছবিতে ভাল কাজ করলে তবেই না বলার কিছু থাকবে।

কিন্তু এটা করলে তো লোকে আপনাকে ভুল বুঝবে।

আমি যখন ‘ব্যোমকেশ’য়ের শ্যুটিং করছিলাম, ছ’মাস আমার মোবাইল ফোনটা আমার কাছে ছিল না।

কী বলছেন?

হ্যাঁ, ঠিকই। সেটা ছিল আমার ডেব্যু-ফিল্ম-ইয়ার। চার দিকে পুরস্কার বিতরণী উৎসব। তার একটাতেও যেতে পারিনি। আসলে নিজের জীবনে কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেবেন, সেটা আগেই ঠিক করে নিতে হয়। ওই সময় কাজটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি যদি কাজটা ঠিক করে না করতাম, তা হলে লোকে আমার সাক্ষাৎকারও চাইত না।

৬ মাস মোবাইল না থেকে আপনার গার্লফ্রেন্ডের খুব করুণ দশা হয়েছিল নিশ্চয়ই?

ল্যান্ডলাইন তো ছিল। রোজ শ্যুটিংয়ের পর হোটেলে ফিরে ফোন করে নিতাম। সত্যি বলতে কী, মোবাইল না থাকাটা দারুণ স্বস্তিকর একটা ব্যাপার। নিজেকে খুব স্বাধীন মনে হয়।

সামনের বছর শুনলাম আপনি বিয়ে করছেন?

হ্যাঁ, অঙ্কিতা আর আমি নতুন বাড়ি কিনেছি। সব ঠিক থাকলে পরের বছর বিয়েটাও সেরে নেব।

বিয়ে না হয় করলেন। এমন কী আছে যা জীবনেও করবেন না?

তিনটে জিনিস আছে। এক যত নামযশই হোক না কেন, ভাল না লাগলে সিনেমা করব না। গিটার বাজাব, পটশিল্পে যোগ দেব। কিন্তু সিনেমা করব না। দুই কোনও দিন কত টাকা পাচ্ছি সেই দেখে কোনও প্রজেক্ট করতে রাজি হব না। তিন প্রথম দুটো পয়েন্ট সারা জীবন মনে রাখব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE