Advertisement
০৯ মে ২০২৪
Entertainment News

‘মা দুর্গার বুক নিয়েও কমেন্ট করছে লোকে, আমি তো কোন ছার’

শীতের দুপুর। সঙ্গী ‘উমা বৌদি’। থুড়ি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ‘দুপুর ঠাকুরপো’রা এই সুযোগ একেবারেই মিস করতে চাইবেন না। যাঁরা ‘হইচই’ প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই ‘দুপুর ঠাকুরপো’ দেখেছেন, তাঁরা এর মজা জানেন। আর যাঁরা দেখেননি, তাঁরা সাক্ষাত্কারটি পড়ার পর নিশ্চয়ই দেখবেন। কারণ ‘বৌদি’ মন খুলে মনের কথা বলছেন যে...শীতের দুপুর। সঙ্গী ‘উমা বৌদি’। থুড়ি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ‘দুপুর ঠাকুরপো’রা এই সুযোগ একেবারেই মিস করতে চাইবেন না। যাঁরা ‘হইচই’ প্ল্যাটফর্মে ইতিমধ্যেই ‘দুপুর ঠাকুরপো’ দেখেছেন, তাঁরা এর মজা জানেন। আর যাঁরা দেখেননি, তাঁরা সাক্ষাত্কারটি পড়ার পর নিশ্চয়ই দেখবেন। কারণ ‘বৌদি’ মন খুলে মনের কথা বলছেন যে...

‘উমা বৌদি’র লুকে স্বস্তিকা।

‘উমা বৌদি’র লুকে স্বস্তিকা।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ১২:৫৯
Share: Save:

কেমন আছেন উমা বৌদি?
স্বস্তিকা: হা হা… ভাল। আপনি?

ভালই। লোকে উমা বৌদি বলে ডাকছে নাকি?
স্বস্তিকা: না, ঠিক উমা বৌদি বলে ডাকছে না। তবে, দেখা হলে আওয়াজ দিচ্ছে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় যাই পোস্ট করি না কেন, রিপ্লাই আসছে ওই বৌদি ট্যাগলাইনটা দিয়েই।

ইন্ডাস্ট্রির ভিতরের লোকজন কী বলছেন?
স্বস্তিকা: খুব ফানি এক্সপিরিয়েন্স। অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন, কী বলে ডাকব তোকে?

কেমন লাগছে?
স্বস্তিকা: উইয়ার্ড লাগছে। বুঝতে পারছি না কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করা উচিত। তবে এটা বুঝতে পারছি প্রচুর লোক দেখছেন। আর ‘হইচই অরিজিন্যালস’-এর মধ্যে ওটা এখনও এক নম্বরে। সেটা গুড নিউজ।

উমা বৌদির কিন্তু হেব্বি ডিমান্ড…
স্বস্তিকা: হা হা… কমপ্লিমেন্ট হিসেবে নিলাম।

আরও পড়ুন, ‘বাংলা ছবি শেষ পর্যন্ত হয়তো শখের থিয়েটারে পরিণত হবে’

অফকোর্স।
স্বস্তিকা: আসলে ডিমান্ড যে আছে, সেটা আমি ভালই বুঝতে পারছি। ‘হইচই’ও সিজন টু-এর জন্য তাড়া দিচ্ছে। ডেফিনেটলি চাইব, একটা কাজ করেছি। লোকে সেটা দেখুন। এটা অবশ্যই ভাল লাগার জায়গা।

স্বস্তিকার কাছে উমা কি চ্যালেঞ্জিং ছিল?
স্বস্তিকা: ইয়েস। আমার কাছেও এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আদৌ এটা করতে পারব কি না…। আমি যে ধরনের চরিত্র করি, সেখান থেকে কাট টু বৌদি। আর বৌদির সঙ্গে অনেক প্যাকেজিংও রয়েছে। আমাকে তো এ ভাবে কোনও দিন কেউ দেখেননি। ১৫ বছর হয়ে গেল ইন্ডাস্ট্রিতে। এমন কাজ কোনও দিনই করিনি।

এই চরিত্রের অফার পেয়ে ভেবেছিলেন, আপনিই কেন?
স্বস্তিকা: ছ-সাত বছর আগে হলেও এটার হয়তো অন্য রকম উত্তর দিতাম। কিন্তু, এখন মনে হয় যেটা মনে হচ্ছে সেটাই বলে দেওয়া উচিত। এটা আমি না করলে অন্য কেউ করতে পারত না। অন্য কারও নাম তো মাথায় আসছে না। যাঁরা আমাকে অ্যাপ্রোচ করেছেন, তাঁরাও জানেন। ওঁরা প্রায় চার মাস ওয়েট করেছিলেন আমার ডেটের জন্য।

রিঅ্যাকশন কেমন পেলেন?
স্বস্তিকা: ইনিশিয়ালি হোয়েন ইট ওয়াজ আপলোডেড, রিঅ্যাকশন ছিল ৬০/৪০। কারণ প্রথমে লোক জন খুব শকে চলে গিয়েছিল। একে তো ভাবেননি এমন কিছু বাংলায় হতে পারে। মুখেই সবাই বলে এখানে সেক্স কমেডি হয় না, এখানে এটা হয় না, ওটা হয় না। যখন কিছু করার চেষ্টা করা হবে, তখনই সকলের মনে হবে আমাদের কালচার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে! সব ঐতিহ্য নর্দমায় চলে যাচ্ছে! কিন্তু আবার সে রকম কনটেন্ট দেখতেও চান। বাংলা হোক বা ভারতবর্ষ, ঐতিহ্য তুলে ধরার দায়িত্ব যেন একমাত্র ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁদেরই!

আরও পড়ুন, ‘বুম্বাদাকে বিট করার মতো বোকামি এ জন্মে করতে পারব না’

বেশ রেগে গিয়েছেন মনে হচ্ছে!
স্বস্তিকা: না, ঠিক তা নয়। এর আবার একটা অন্য দিকও রয়েছে। আমরা তো কোনও কারণ ছাড়াই মহিলাদের অবজেকটিফাই করি। সেটাও চূড়ান্ত মাত্রায় হয়েছে।

যেমন?
স্বস্তিকা: আসলে অনেকেই কমেন্ট করার সময় ব্যক্তি মানুষ আর অনস্ক্রিন চরিত্রকে আলাদা করতে পারেন না। এটা আমি দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় দেখেছি। রিল আর রিয়েলটাকে কেউ আলাদা করতে পারে না।

কেন এমন মনে হয়েছে?
স্বস্তিকা: ‘দুপুর ঠাকুরপো’তে একটা ভোজপুরি গানে আমার নাচ ছিল। সেটা যখন রিলিজ করল, যাঁরা সেটা নিতে পারেনি, যাঁদের ভাল লাগেনি বা অনেক অ্যাটেনশন সিকারও তো রয়েছেন। যাঁরা ইচ্ছে করে নোংরা কমেন্ট করেন, যাতে লোকের চোখে পড়তে পারেন, তাঁদের টার্গেট কিন্তু ব্যক্তি স্বস্তিকা। আরে, একটা চরিত্র যে ভোজপুরি সিনেমার হিরোইন, সে তো ভোজপুরি গানেই নাচবে। সে তো কাশ্মীরি গানে নাচবে না। কোনও সময়েই চরিত্র নয়, যিনি অভিনেত্রী তাঁকেই টার্গেট করা হয়। ছবির ক্ষেত্রেও এটা বহু বার হয়েছে, আমি দেখেছি।

আরও পড়ুন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক কম্প্রোমাইজ করতে হয়’

ছবির ক্ষেত্রেও ব্যক্তি স্বস্তিকা টার্গেট হয়েছেন?
স্বস্তিকা: ইয়েস। আমার কোনও ছবি দেখার পর, সেই চরিত্র ধরুন অ্যালকোহলিক। ব্যস, লোকে মনে করেন, আমি ব্যক্তিগত জীবনে অ্যালকোহলিক। বা আমি ব্যক্তি জীবনে বিশ্বাস করি, স্বামী, সংসার, সন্তান সেকেন্ডারি। প্রায়োরিটি শরীর। মানে এটা ‘আমি’ই করি। স্বস্তিকাই করে।

বুঝতে পেরেছি।
স্বস্তিকা: তবে নোংরা কমেন্টগুলো এখন আর আমাকে শক দেয় না। কারণ আমাদের দেশটা এখন যে দিকে যাচ্ছে সেখানে লোকে মা দুর্গার ছবি নিয়েও অশ্লীল কমেন্ট করে। কিছু দিন আগে আমার টুইটারেই এটা হয়েছে।

সেকি! কী হয়েছে?
স্বস্তিকা: আরে, মহালয়ায় মা দুর্গার একটা ছবি পোস্ট করেছিলাম। ছবিটায় কাঠামোর ওপর মাটি লেপা হয়েছে। পোশাক ছিল না। সেই ছবিতে গিয়ে লোকে মা দুর্গার বুক নিয়ে নোংরা কমেন্ট করেছে। এর থেকে বেশি শকিং তো কিছু হতে পারে না। তার পর অবশ্য টুইটার সেটা ব্লক করে দিয়েছে। ফলে নারী শরীর মানে মা দুর্গার বুক নিয়েও কমেন্ট করতে ছাড়ছে না, সেখানে আমি এক্সপেক্টও করি না যে, আমাকে ছাড়বে।

আরও পড়ুন, সিভি’তে এত কম ছবি কেন? অফার পান না?

বিরক্ত লাগে নিশ্চয়ই?
স্বস্তিকা: না। আর এটা নিয়ে কমপ্লেন করেও লাভ নেই। কারণ, সময়টাই বদলে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাডভানটেজও আছে, আবার ডিজঅ্যাডভানটেজও আছে। প্রথম প্রথম এগুলো নিয়ে খুব রিঅ্যাক্ট করতাম। তার পর দেখেছি ফিফটি পার্সেন্ট লোক এই রিঅ্যাকশনটা পাওয়ার জন্যই লেখে। পরে তারা লিখেছে সরি, আপনি উত্তর দেন না। তাই এ সব লিখেছি।

উমা কি স্বস্তিকাকে একটা নতুন পরিচিতি দিল?
স্বস্তিকা: উমা তো বটেই। আমি ‘হইচই’-এর কথা আলাদা করে বলব। বাংলায় এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যে হয়েছে, সেটা গ্রেট। এটার প্রচুর দর্শক রয়েছে সারা পৃথিবীতে। আমি কিছু দিন আগেও যখন বম্বেতে ছিলাম, সেখানে দেখেছি ওয়েব সিরিজ নিয়ে প্রচুর ভাবনাচিন্তা হচ্ছে। সেটা এখানেও হচ্ছে বলে ভাল লাগছে।

আরও পড়ুন, ‘আমি আর সুমন একসঙ্গে আছি না নেই? চর্চা চলুক’

নেক্সট সিজন তা হলে কবে শুরু?
স্বস্তিকা: আমি জানি না এখনও। তবে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শুরু হবে আশা করা যায়।

ছবি: নিজস্ব চিত্র এবং টুইটারের সৌজন্যে।

লোকেশন সৌজন্যে: হোয়াটস্আপ ক্যাফে

সার্দান এভিনিউ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE