তাঁদের কাছে লকডাউনের একটিই ভাল দিক রয়েছে। ছেলে মিশুকের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতে পারা। সে সুযোগ ছেলের বড় হয়ে ওঠার এত বছরের মধ্যে পাননি প্রসেনজিৎ ও অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। লন্ডনের আবাসিক স্কুল থেকে বালিগঞ্জের বাড়ি ‘উৎসব’-এ চলে আসার পর এখন বাবা-মায়ের সঙ্গেই কোয়ালিটি টাইম কাটাচ্ছে তৃষাণজিৎ চট্টোপাধ্যায়। অর্পিতা এ প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘সকারটা যেহেতু ও সিরিয়াসলি খেলে, তাই সেটাকে ভীষণ ভাবে মিস করছে এই সময়ে। তবে সে অভাব কিছুটা হলেও মেটাচ্ছে বাড়ির প্লেস্টেশনে খেলা ভিডিয়ো গেম।’’
প্রসেনজিৎ-অর্পিতা দু’জনেরই লকডাউন আর পাঁচ জনের মতোই মনখারাপে কাটছে। তার প্রধান কারণ, দু’জনেই কাজের মানুষ। অফিস বন্ধ। শুটিং ফ্লোরকে মিস করা তো আছেই, পাশাপাশি প্রত্যেক দিন করোনা-সংক্রান্ত খারাপ খবরে মন ভারী হয়ে ওঠাও রয়েছে। প্রসেনজিতের কথায়, ‘‘সময়টা কাটাচ্ছি, কাটাতে হবে তাই। কখনও বই পড়ছি বা স্ক্রিপ্ট পড়ছি। ওয়র্কআউট করছি, বাগানে ঘুরছি, গাছে জল দিচ্ছি। আবার সিনেমাও দেখছি। তবে কোনও কিছুই যে মন দিয়ে করতে পারছি, তেমনটা নয়।’’ খানিকটা একই মেজাজে অর্পিতাও, ‘‘এই সময়টা কাজে লাগিয়ে অনেক সিরিজ়-সিনেমা দেখে ফেললাম। আমি তো বরাবরই ওয়েব কনটেন্টের পোকা। আর আমি রান্না করতে ভালবাসি বলে মাঝেমাঝে এটা-সেটা করছি। তবে অবশ্যই ফুড রেশনিংয়ের কথা মাথায় রেখে। খবরে পড়ছি, প্রত্যেক দিন কতশত মানুষ অভাবে, কষ্টে রয়েছেন। সে সব ভেবে মনখারাপ হয়ে যাচ্ছে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’-এর শুটিং সেরে ফিরে চোদ্দো দিন সেলফ-আইসোলেশনে ছিলেন প্রসেনজিৎ। ‘‘ওই দিনগুলো সত্যিই খুব অস্বস্তিতে কেটেছিল। বাড়িতে সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে থাকতাম ঘরে। ঘর পরিষ্কার থেকে শুরু করে বিছানা করা, খাওয়ার পরে বাসন ধোয়া... সব কাজ নিজেই করেছি। কাউকে কাছে ঘেঁষতে দিইনি,’’ বললেন প্রসেনজিৎ। শুধু তিনিই নন, সেই চোদ্দো দিন সেলফ কোয়রান্টিনের যাবতীয় নিয়ম পালন করেছেন বাড়ির অন্য সদস্যরাও। কার্যত সব কিছু অচলাবস্থায় চলে যাওয়ার ঠিক মুখে মুখেই লন্ডন থেকে ফিরেছিল মিশুক, তার দিনকয়েকের মধ্যেই সাউথ আফ্রিকা থেকে প্রসেনজিৎ। ‘‘খুব সময় মতো ওরা ফিরে এসেছিল। এসেই সেলফ-আইসোলেশনে। লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম ক’দিন খুব সাফোকেটিং লাগত। পরে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম,’’ বললেন অর্পিতা। তিনি নিজেও ছবির আউটডোরের জন্য নর্থ বেঙ্গল পাড়ি দিচ্ছিলেন সেই সময়ে। লকডাউনের আভাস পেয়ে কার্যত এয়ারপোর্ট থেকে ফিরে আসেন।