Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Danyel Waro

মিলেমিশে থাকার গান শোনাতে দূর দ্বীপ থেকে কলকাতায়

কী নিয়ে গান লেখেন ড্যানিয়েল?

ড্যানিয়েল ওয়ারো

ড্যানিয়েল ওয়ারো

সুচন্দ্রা ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:২৮
Share: Save:

দ্বীপের নাম রিইউনিয়ন। সেখানকার ভাষা ক্রেয়লে। তাতেই গান বাঁধেন ড্যানিয়েল ওয়ারো। গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দেন কথা আর সুর। শোনান নিজের মানুষদের গল্প।

রিইউনিয়ন দ্বীপের কথা জানেন ক’জনা? বেশি নন। তবু কেউ কেউ তো বটেই। ভারত মহাসাগরের এক ধারে, ছোট্ট সেই দ্বীপে এখনও ফরাসিদের রাজত্ব চলে। তাই সরকারি কাজে এখনও ব্যবহার হয় ফরাসি ভাষা। সেখানে বসবাস নানা ধরনের লোকজনের। এক-এক জনের এক-এক রকম ভাষা। তবে আদান-প্রদানে যাতে সমস্যা না হয়, তাই সকলের মাতৃভাষা নিয়ে তৈরি হয়েছে কথাবার্তার মাধ্যম। তারই নাম ক্রেয়লে। কলকাতায় ‘সুর জাহান’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে, সে ভাষাতেই শহরবাসীকে ‘হাতে হাত ধরে থাকার’ গান শোনালেন ড্যানিয়েল।

এ দ্বীপের ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িয়ে ক্রেয়লে ভাষার জন্মের গল্প। মরিশাস দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ছোট্ট ভূখণ্ড রিউইনিয়ন দ্বীপে থাকেন খুব বেশি হলে ন’লক্ষ মানুষ। তাঁদের কেউ ভারতীয়, কেউ পর্তুগিজ, কেউ বা ফরাসি, কেউ আবার আফ্রিকার কোনও এক জাতির মানুষ। সকলে পাশপাশি থাকেন। তাই তাঁদের ভাষাও তৈরি হয়েছে এমনই নানা জায়গার শব্দ মিলিয়ে। ক্রেয়লে ভাষায় যেমন পাওয়া যায় পর্তুগিজ, ফরাসির নানা টুকরো, তেমনই রয়েছে হিন্দি, গুজরাতি, তামিল। আর এমন মিলমিশের ভাষাই জোর জোগায় ড্যানিয়েলকে ভালবাসার সুর শোনানোর জন্য। তিনি বলেন, ‘‘আমার মাতৃভাষা সাংস্কৃতিক মিলমিশের একটি জীবন্ত নিদর্শন। আমি জানি, ফরাসি ভাষায় গান লিখলে আরও অনেক জনপ্রিয় হওয়া যেত। অনেক বেশি মানুষ ফরাসি ভাষা বোঝেন। কিন্তু আমি চাই, মানুষ একটু ভালবাসা বুঝুন।’’

আরও পড়ুন-সাতপাকে বাঁধা পড়লেন ‘ত্রিনয়নীর’-র সুধা, প্রকাশ্যে এল ছবি

কী নিয়ে গান লেখেন ড্যানিয়েল?

‘আমি চাই, মানুষ একটু ভালবাসা বুঝুন’।

সুর-কথা-ছন্দে তাঁর দর্শন একটাই। বেঁধে-বেঁধে থাকা। তাই নিজের সমাজের গল্প শোনান তিনি। ড্যানিয়েল বলে চলেন, ‘‘আমাদের জায়গার নাম তো রিইউনিয়ন। আমরা ইউনিয়ন, অর্থাৎ, একসঙ্গে থাকায় বিশ্বাস করি। আমার তাই নিজের জায়গার কথা শোনাতে ইচ্ছে করে। চার দিকে মানুষ এমন সব বিষয় নিয়ে লড়াই করে। আমার তো চিন্তাই হয়।’’

তাঁদের দ্বীপে বুঝি লড়াই নেই? ধর্ম-ভাষা, কিছু নিয়েই নেই নাকি?

আরও পড়ুন- কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ভিখারি নন, তাঁরা সরকারের কাছে হাত পাতেননি, বললেন বিধু বিনোদ চোপড়া

নানা ধর্মের মানুষ আছেন সেখানে। আর ভাষার কথা তো হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে এই ক্রেয়লে ভাষার মতোই, মিলেমিশে থাকার পথ বেরিয়ে আসে। ড্যানিয়েল জানান, অনেকেই আছেন যাঁরা চান সকলের ধর্মকে সমান সম্মান দিতে। তিনি অন্তত তেমন পরিবেশেই থাকার সুযোগ পেয়েছেন। তাই ক্যাথলিক চার্চের পাশাপাশি, সমান ভাবে তাঁর যাতায়াত তামিলদের মন্দিরে। সেখান থেকেই প্রথম ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়েছে তাঁর। আর ভারতবাসীকে নিজের গান শোনানোর ইচ্ছে সে থেকেই। এ দেশ যে তারই ঘরের মতো, নানা সংস্কৃতির ভূমি। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বিশেষ দু’টি বাদ্যযন্ত্র কায়ান্ম আর বোবরে। এ দু’টি নিয়েই দেশের কয়েকটি শহরে ঘুরবেন ড্যানিয়েল। ছড়াবেন ঐক্যের সুর!

ছবি: ‘সুর জাহান’-এর উদ্যোক্তাদের সৌজন্যে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Danyel Waro Reunion Island Sur Jahan Music
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE