বিয়ের চার বছর হয়ে গিয়েছে দেবলীনা কুমার ও গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের। প্রথম থেকেই স্বভাবে দু’জনে ভিন্ন। গৌরব স্বভাবে অন্তর্মুখী। অন্য দিকে, দেবলীনা প্রাণোচ্ছল ও বহির্মুখী। নিজেদের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য থাকলেও বন্ধুত্বই তাঁদের বেঁধে রেখেছে, দাবি দেবলীনার।
অভিনয়ের পাশাপাশি অধ্যাপনা, নাচ নিয়ে ব্যস্ততা দেবলীনার। তার মধ্যে সংসারে কতটা সময় দিতে পারেন তিনি? পুত্রবধূ হিসাবে কত নম্বর পান শ্বশুরবাড়িতে? উত্তরে হাসতে হাসতে অভিনেত্রী বলেন, “এখনও পর্যন্ত ভাল নম্বরই পেয়েছি। আসলে ওঁদের প্রত্যাশা এত কম, আমাকে খাটতেই হয় না। খুব কম সময় কাটাতে পারি ওঁদের সঙ্গে। তবে ওঁদের কোনও অভিযোগ নেই। আমার সব কিছুই ওঁদের ভাল লাগে। অন্য বাড়ি হলে কী হত জানি না। আমার শাশুড়িমা খুবই ভাল।”
শ্বশুরবাড়ির প্রত্যেকে দেবলীনার সঙ্গে মানিয়ে নেন। কিন্তু অভিনেত্রী মনে করেন, কিছু ক্ষেত্রে মহিলাদেরও মানিয়ে নেওয়া উচিত। দেবলীনার কথায়, “একটা নতুন বাড়িতে গেলে নিজেদেরও কিছুটা মানিয়ে নেওয়া উচিত। আমার তো নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে বেশি ঝগড়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ে বাড়িতে না ঢুকলে সমস্যা হয়। সেই দিক থেকে আমার শাশুড়িমা অনেক বেশি উদারপন্থী।”
একসঙ্গে অনেকগুলো দিন কাটিয়ে ফেলেছেন দেবলীনা ও গৌরব। নিজেদের সম্পর্কে কোন বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে নিজেরাও ভাবেন। দেবলীনা বলেন, “আসলে বিয়ে বিষয়টা শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। বহু স্বামী-স্ত্রী প্রেমে ডুবে থাকে। প্রেমের রসায়নের থেকেও আমাদের মধ্যে যেমন বন্ধুত্বটা অনেক বেশি গাঢ়। বন্ধুত্ব গভীর থাকলে, অবাস্তব প্রত্যাশা কম তৈরি হয়।”
গৌরব মনে করেন, যে কোনও সম্পর্কেই নিজের মনোযোগ দেওয়াটা খুব জরুরি। তবে জোর করে কিছু করাতে বিশ্বাসী নন অভিনেতা। প্রত্যেক সম্পর্কে ভালবাসার ভাষা ভিন্ন। গৌরব-দেবলীনার ভাষা কোনটা? অভিনেতা বলেন, “আমরা রোজ সকালে উঠে টেবিলে একসঙ্গে কফি খাই। কফি খেতে কখনও ১৫ মিনিট, কখনও বা আধ ঘণ্টা পরস্পরের সঙ্গে গল্প করি। পরস্পরের সঙ্গে কথা বলাই আমাদের ভালবাসার ভাষা।”
বিখ্যাত পরিবারের মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তবে সেই চাপ কখনও অনুভব করতে হয়নি দেবলীনাকে। কিন্তু বিয়ের পরে অভিনেত্রীর মধ্যে এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। জানালেন দেবলীনার মা দেবযানী কুমার। তিনি বলেন, “আমার রান্না করতে ভাল লাগে না। ওরও কিন্তু রান্না নিয়ে কোনও আগ্রহ ছিল না। এখন দেখি বন্ধুবান্ধব এলে ও নিজেই রান্না করে।” মেয়ের স্বভাবেও কিছু পরিবর্তন এসেছে। আগে নাকি রেগে যেতেন দেবলীনা। কিন্তু আজকাল রাগেও আগের চেয়ে অনেক নিয়ন্ত্রণ এসেছে। জীবনযাপনও খুব নিয়মমাফিক। তবে সব শেষে মায়ের স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, “দেবলীনা ছোট থেকেই খুব বাধ্য মেয়ে। কখনওই বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে কিছু করেনি ও।”