১২ বছরে পা দিল এই চলচ্চিত্র উৎসব। ‘ডায়ালগস’ আসলে দেশের সব থেকে পুরনো এলজিবিটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল।— নিজস্ব চিত্র।
এক উৎসবের শেষ। আর এক উৎসবের শুরু। না, দুর্গাপুজো ভাবলে ভুল হবে। ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অর্থাৎ চলচ্চিত্র উৎসব। কিছু দিন আগেই শেষ হয়েছে ২৪তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। আর ঠিক তার হাতে গোনা কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ‘ডায়ালগস ২০১৮’। আদতে যার নাম ‘ডায়ালগসঃ কলকাতা আন্তর্জাতিক এলজিবিটি ফিল্ম অ্যান্ড ভিডিয়ো ফেস্টিভ্যাল’।
গত ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। চলবে ২৫ তারিখ পর্যন্ত। দেশ এবং দেশের বাইরেও যে সমস্ত পরিচালকরা এলজিবিটি কমিউনিটির জন্য ছবি তৈরি করেন, মূলত তাঁদেরই ফিল্ম এবং ভিডিয়ো দেখানো হয় এই চলচ্চিত্র উৎসবে। উদ্যোক্তা ‘স্যাফো ফর ইক্যুয়ালিটি’, ‘প্রত্যয় জেন্ডার ট্রাস্ট’ এবং ‘ম্যাক্স মুলার ভবন’ কলকাতা। ২০১৬ পর্যন্ত ‘ডায়ালগস’ অনুষ্ঠিত হত ম্যাক্স মুলার ভবনে। ২০১৭ সালে থেকে তা বদলে হয়েছে বসুশ্রী সিনেমা হল। ১২ বছরে পা দিল এই চলচ্চিত্র উৎসব। ‘ডায়ালগস’ আসলে দেশের সব থেকে পুরনো এলজিবিটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। ‘বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’, ‘ড্রেসডেন শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পার্টনার এই ‘ডায়লগস’।
কিন্তু চলচ্চিত্র উৎসবের নাম হঠাৎ ‘ডায়ালগস’ কেন? ‘স্যাফো ফর ইক্যুয়ালিটি’-র কর্মকর্তা মিনাক্ষী সান্যাল বললেন, ‘‘ডায়ালগস অর্থাৎ কথোপকথন। যে সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা এত লুকোছাপা করি, সে গুলো নিয়ে যত বেশি করে কথা বলা যায়। সমস্যা অর্থাৎ লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল এবং ট্রান্সজেন্ডারদের যে সমস্যা— তা নিয়ে ছবি, তা নিয়ে ভিডিয়ো, তা নিয়ে আলোচনা।’’
‘ডায়ালগস ২০১৮’-এর জন্য সেজেছে বসুশ্রী সিনেমা হল।
চলতি বছরে দেশ বিদেশ থেকে বাছাই করা মোট ৪১ টি ছবি দেখানো হচ্ছে ‘ডায়ালগস ২০১৮’-এ। উদ্বোধন হয়েছে ব্রাজিলিয়ান ছবি ‘রিচিং ফর দি মুন’ দিয়ে। দেশের বেশ কিছু আঞ্চলিক ছবিও দেখানো হয়েছে এই চলচ্চিত্র উৎসবে। তাদের মধ্যে অন্যতম রোহিত দ্বিবেদীর ‘খেচদি’, বন্দনা কাটারিয়ার ‘নোবলম্যান’। এই বন্দনা কাটারিয়া বলিউডের নামজাদা এক আর্ট ডিরেক্টর। বন্দনার পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘নোবলম্যান’। তবে জোর দেওয়া হয়েছে দক্ষিণী ছবির দিকেও। স্ক্রিনিংয়ের তালিকায় রয়েছে সুরেশ নারায়ননের ‘ইর্রাতাজীভিতাম’, রথিশ রবীন্দ্রনের ‘পিক্সেলা’। প্রখ্যাত তামিল পরিচালক মালি সালভারার ‘পারিয়েরাম পেরুমল’ও দেখানো হবে ‘ডায়ালগস’-এ।
আরও পড়ুন: টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের দৌড়ে সবাইকে টপকে গেল বিজেপি
আরও পড়ুন: ঠিক যেন ২০১৯-এর মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র! সাজেশনের বিজ্ঞাপনী ভাষা নিয়ে ঘোর বিতর্ক
বসুশ্রী সিনেমা হলেই পাওয়া যাচ্ছে ফ্রি পাস। কিন্তু এই ফ্রি পাস, ছবির স্ক্রিনিং করাতে দেশ-বিদেশের পরিচালকদের টাকা দেওয়া— এ সবের খরচ? মিনাক্ষী দেবীর কথায়, ‘‘মাত্র তিনটে ছবিই আমাদের কাছে থেকে এ বার টাকা চেয়েছে। আমাদের পার্টনারসরা রয়েছেন। সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রম রয়েছে। আসলে ইচ্ছা থাকলে এ দুনিয়ায় সবই সম্ভব। গত বছর ৭০০-৮০০ মানুষ ছবি দেখতে এসেছিলেন। আর এ বারে এখনও অবধি ৪০০-৫০০ মানুষ দেখে গিয়েছেন। এখনও উইকেন্ডের দুটো দিন তো বাকি।’’
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)
পাশেই যে আলো ঝলমলে এত বড় একটা ফেস্টিভ্যাল, এত মানুষের সমাগম, তারই কাছাকাছি আর একটা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মাত্র ৪০০-৫০০ মানুষ? মিনাক্ষী সান্যালের সোজা উত্তর, ‘‘আমরা অত কিছু চাই না। অত চাকচিক্যও দরকার নেই। আমাদেরও চাকচিক্য রয়েছে। আর সেটা আমাদেরই মতো। মানুষ তো স্রোতের দিকেই ছুটবে না? আমরা না হয় স্রোতের বিপরীতে ছুটেই লড়াইটা জারি রাখি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy