Advertisement
E-Paper

সেন্সর বিতর্ক দিয়ে ফায়দা তুলতে রাজি নই

সোশ্যাল মিডিয়ায় বাকিদের মতো পিঠ-চাপড়ানোর খেলায় দেখা যায় না তাঁকে। ফ্যাক্টরি চালানোর মতো নিয়মিত ছবি বানানোতেও বিশ্বাসী নন অনীক দত্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাকিদের মতো পিঠ-চাপড়ানোর খেলায় দেখা যায় না তাঁকে। ফ্যাক্টরি চালানোর মতো নিয়মিত ছবি বানানোতেও বিশ্বাসী নন অনীক দত্ত।

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

হালফিলের বাংলার ইন্ডাস্ট্রির পরিচালকদের তুলনায় অনীক দত্ত একটু যেন ‘নিজের মতো’। সাক্ষাৎকারের শুরুতেই হাসতে হাসতে বলে উঠলেন, ‘‘জেরা শুরু হোক!’’

সেন্সর বোর্ডের ঝামেলার উৎপত্তি না হলে, গত শুক্রবারই তাঁর ‘মেঘনাদবধ রহস্য’ মুক্তি পেয়ে যেত। আপাতত ছবির মুক্তি রহস্য কাটাতেই তিনি ব্যস্ত। সেন্সর বেশ কিছু শব্দে ‘বিপ’ বসাতে বলেছে পরিচালককে। বোর্ডের সঙ্গে দরাদরি করে রফায় আসতে পেরেছেন অনীক। ২১ তারিখে রিলিজ হচ্ছে ছবি। বললেন, ‘‘দেখলাম, অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স।’’ সেন্সর বিতর্ক নিয়ে বিশদে যেতে চান না। লো প্রোফাইলে বিশ্বাসী অনীক বললেন, ‘‘বিতর্ক থেকে ফায়দা তুলতে রাজি নই। এর মাঝে গল্প ফাঁস হয়ে গেলে মুশকিল।’’

পরিচালকের বিজ্ঞাপনী মস্তিষ্ক হুডানিটের ট্যাগ লাইন ব্যবহার করলেও, গল্পে অন্য রকম বাঁক রয়েছে। ছবির নামেই অনেকটা রহস্য লুকিয়ে। যেটা ভাঙতে নারাজ পরিচালক। স্বভাবসিদ্ধ রসিকতায় বললেন, ‘‘বইটা ছবিতে একটা প্রপ হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। মেঘনাদকে কে বধ করেছিল সেটা সকলেই জানেন। বিভীষণ নাকি লক্ষ্মণ নাকি সেই ভদ্রলোক যার নাম করা যায় না (হাসি)!’’

যে ক’জন পরিচালকের নামে দর্শক হলে আসেন, তার মধ্যে অনীক দত্ত অবশ্যই একজন। ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ দিয়ে তাঁর আর্বিভাব। ওই রকম ফোনোমেনাল সাফল্য হাতে গোনা কয়েকটা বাংলা ছবিই প্রত্যক্ষ করেছে। ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর সাফল্য কি পরবর্তী কালে পরিচালক হিসেবে তাঁকে চাপে ফেলেছে? ‘‘আমার প্রথম ছবি যে দর্শক আদৌ দেখবেন, সেটাই তো ভাবিনি। কিছু লোক দেখেছেন মানে আমি বিরাট কেউকেটা হয়ে গেলাম তাও নয়,’’ স্পষ্ট জবাব পরিচালকের।

সাত বছরে তিনটে ছবি। টলিউডের বাকি পরিচালকদের তুলনায় অনীক যোজনখানেক পিছিয়ে। বছরে গোটা তিনেক ছবি অনেক পরিচালকের কাছেই জলভাত! সেন্সর বোর্ডের কাছে তিনি যতই অফেন্সিভ খেলুন, সংবাদমাধ্যমে বেফাঁস কিছু বলে বিতর্কিত শিরোনামের সুযোগ করে দেবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এমন অনেককে জানি, যাঁরা আরও বিরতি দিয়ে ছবি তৈরি করেন। সিনেমা বানিয়ে আমাকে জীবিকা অর্জন করতে হয় না। বিজ্ঞাপনই পেশা। আর সব সময় ব্যস্ত থাকতেও তো ভাল লাগে না!’’

অনীক সোশ্যাল মিডিয়াতে সে ভাবে অ্যাক্টিভ নন। টলিউডে আন্তর্জালে যে পিঠ চাপড়ানি পর্ব চলে, সেটা সম্পর্কে ওয়াকিবহালও নন। হেসে বললেন, ‘‘ইন্ডাস্ট্রির নিয়ম-কানুন কিছু ভাঙলাম নাকি! আর ভাঙলেই বা কী! আমার পিত়ৃদেবই আমাকে কন্ট্রোল করতে পারেননি তো, আর কেউ কী করবে?’’ প্রথম ছবি সুপার়-ডুপার হিট হওয়ার পর ইন্ডাস্ট্রির ভিতরের প্রতিক্রিয়ায় খানিকটা হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। ‘‘আশপাশের লোকজনের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হল, একটু দূরত্ব বজায় রাখাই
ভাল। প্রথম ছবি যে চলেছে সেটা তো আমার দোষ নয় রে বাবা,’’ জবাব অনীকের।

ইন্ডাস্ট্রির ‘ক্যাম্প’ সম্পর্কেও জানতেন না। ‘‘জানেন, একবার এক প্রযোজক ফোন করে বলেন, ‘আপনি কোনও ক্যাম্পে নেই বলেই আপনার সঙ্গে ছবি করতে চাইছি’। তাঁর থেকেই বিষয়টা বুঝলাম। এগুলো দেখে-শুনে হাসি পায়। এখনও নিজেকে আউটসাইডারই মনে হয়। তবে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই বন্ধু। সেটা একেবারেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে। সকলের সঙ্গে অকারণ দহরম-মহরমের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’’

অনীকের আগের দুটো ছবিতে যাঁদের দেখা গিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে সব্যসাচী চক্রবর্তীকে এ ছবিতে ফের দেখা যাবে। ‘‘কাজ করতে করতে অনেক অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্ক সহজ হয়ে যায়,’’ বলছিলেন অনীক। কিন্তু সেটে পরিচালকের ব্যবহার সম্পর্কে অনেক কথা শোনা যায়। ইঙ্গিতটা ধরতে পেরে বললেন, ‘‘আমিও কিন্তু বাকিদের সেটের অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝার খবর শুনি। কেন জানি না শুধু আমারটা নিয়েই চর্চা হয়। এটা ইচ্ছাকৃত না ঘটনাচক্রে বলতে পারব না! সেটে একটা নার্ভাস এনার্জি কাজ করে। সব কিছু ঠিক করে করতে হবে, এই ভাবনাটা থাকে। এটা যে দিন থাকবে না সে দিন আমার ছবি করাও বন্ধ হয়ে যাবে। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস চলে এলে তো মুশকিল!’’

আরও পড়ুন: কেন সোহমকে শুভশ্রী বললেন দেখ কেমন লাগে

একটু থেমে নিজেই যোগ করলেন, ‘‘আমি আসলে ভুল পেশা বেছেছি। সিনেমা দেখার সময় এক রকম মনে হতো। কাজ করতে গিয়ে বুঝতে পারছি কত ঝকমারি। সেটে এত লোক থাকে যে, সেখানে মন দিয়ে কিছু করাটাই সমস্যার। দুঃখের গান শ্যুট হবে। তার জন্য একটা মুড চাই। এ দিকে দশ জন লোক হইচই করে চিৎকার করছে, ‘এটা নিয়ে আয়’, ‘ওটা কর’ (বলার ভঙ্গিটাই নকল করে দেখালেন)! এ ভাবে কাজ করতে হবে, সেটা ভাবিনি।’’

দর্শকদের জন্য সুখবর, অনীক এখন ভবিষ্যতের ভূতেদের নিয়ে পড়েছেন। ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’-এর সিক্যুয়েল বলা যেতে পারে। জানালেন, চিত্রনাট্য লেখার কাজ চলছে। সামনের শীতেই শ্যুটিংয়ের পরিকল্পনা।

Controversy Anik Dutta অনীক দত্ত মেঘনাদবধ রহস্য Meghnad Badh Rahasya Promotion Tollywood সেন্সর বোর্ড Central Board of Film Certification
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy