Advertisement
E-Paper

‘নিজে ব্যথা না পেলে কী করে ওই দৃশ্য ফুটিয়ে তুলব’? অভিনয় করে শিখিয়েছিলেন গীতাদি: অতনু ঘোষ

সুনীল মুখোপাধ্যায়, সুপ্রিয়া দেবী, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়— এঁরা তাঁকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। প্রত্যেক অভিনেতাকে পরিচালক ‘শিক্ষক’ মানেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:২৮
অতনু ঘোষ ভাগ করে নিলেন গীতা দে-র কথা।

অতনু ঘোষ ভাগ করে নিলেন গীতা দে-র কথা। ছবি: সংগৃহীত।

পরিচালক অতনু ঘোষ তখন ‘গোয়েন্দা পরিবার’ সিরিজ় বানাচ্ছেন। ৫২ পর্বের এই সিরিজ়ে গীতা দে, সুনীল মুখোপাধ্যায়, মমতাশঙ্কর, ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতারা ছিলেন। সে সময় এঁদের প্রত্যেকের থেকে অনেক কিছু শিখেছিলেন পরিচালক। শিক্ষক দিবসে তাঁদের আরও একবার তাই মনে করলেন তিনি। আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে ভাগ করে নিলেন প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেত্রী গীতা দের কথা।

“সিরিজ়ে গীতাদি বনেদি পরিবারের প্রতিনিধি। যদিও সেই বনেদিয়ানা, ঐশ্বর্য, প্রতিপত্তি — কিছুই নেই। তবু, আভিজাত্য তাঁকে ছেড়ে যায়নি। অভিনেত্রী একা। সারা দিন বারান্দায় বসে থাকেন। বাড়ির নীচ দিয়ে কোনও মহিলা গেলে তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকেন”, বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে এমনই একটি চরিত্রে বেছে নিয়েছিলেন অতনু। গীতা দে-কে চরিত্র বুঝিয়ে দিয়েছেন। চরিত্র অনুযায়ী তাঁর ডান হাঁটুতে ব্যথা। হাঁটতে গেলে পা টেনে চলতে হয়। অতনু সে কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে অভিনেত্রী মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানান।

ক্যামেরার মুখোমুখি হওয়ার আগে মহড়া হচ্ছে। পরিচালকের কথায়, “গীতাদি গটগটিয়ে হেঁটে এসে দরজা খুলে দিলেন! আমার চিন্তা শুরু। দিদি কি তা হলে পায়ে ব্যথার কথা ভুলে গেলেন? কানের কাছে মুখ নিয়ে সে কথা মনে করাতেই ফিরে বললেন, “হ্যাঁ, আমার পায়ে ব্যথা। মনে আছে।” তার মিনিট পাঁচেক পরে চূড়ান্ত শটের জন্য প্রস্তুত সকলে। পরিচালক ‘অ্যাকশন’ বলতেই ভিতর থেকে বেরিয়ে এলেন গীতা দে। পা টানতে টানতে! সত্যিই যেন প্রচণ্ড ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন। অতনুর বলে দেওয়া নির্দেশ নিখুঁত ভাবে মেনে দরজা খুলে দিলেন। একবারেই শট ‘ওকে’।

এ বার ঘাবড়ে যাওয়ার পালা পরিচালকের। আগের কথা মনে করে কাঁচুমাচু মুখে অভিনেত্রীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। জানতে চাইলেন, মিনিট পাঁচেকের মধ্যে কী করে এত নিখুঁত শট দিলেন! তৈরি হয়ে এসেছিলেন? তখনই হাসিমুখে বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর দাবি, “আমার ব্যথা করছিল তো!” একটু থেমে যোগ করেছিলেন, “নিজে যদি ব্যথা না পাই তা হলে ব্যথা পাওয়ার দৃশ্য ফুটিয়ে তুলব কী করে? ভিতর থেকে নিজেকে বুঝিয়েছিলাম, পায়ে খুব ব্যথা। যন্ত্রণায় হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।” সেই অনুভূতি তৈরি হতেই শট দিয়েছেন তিনি।

অতনুর কথায়, “গীতাদি আরও জানিয়েছিলেন, অভিনয় করলে সেটা অনুকরণ হয়ে উঠবে। তাতে প্রাণ থাকবে না। দৃশ্য জীবন্ত করতে ভিতর থেকে সব কিছু উপলব্ধি করতে হয়।” পরিচালনা করতে গিয়ে এ রকম অনেক দামি শিক্ষা পেয়েছেন পরিচালক।

Geeta Dey Atanu Ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy