‘বছরের বেস্ট’ পুরস্কার পেলেন দিতিপ্রিয়া।
আনন্দবাজার ডিজিটালের ‘বছরের বেস্ট’ পুরস্কার পেলেন ‘নিজের বাড়ির মেয়ে’ দিতিপ্রিয়া রায়।শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় দিতিপ্রিয়ার হাতে ওই পুরস্কার তুলে দেন।
‘আনন্দবাজার গ্রুপ অব পাবলিকেশনস’-এর এডিটর এমিরেটাস এবং ভাইস চেয়ারম্যান অভীক সরকার প্রাক্কথনে উল্লেখ করলেন ওই পুরস্কার বাছাইয়ের মাপকাঠি। তাঁর কথায়, “সেরা কে? যিনি ক্রিকেটে দুটো সেঞ্চুরি করেছেন, তিনিই কি সেরা? বা যিনি একটা দারুণ গান গেয়েছেন! বা যিনি একটা দারুণ ছবি বানিয়েছেন! আমরা ভেবে দেখলাম, এগুলো শ্রেষ্ঠত্বের কিছু কিছু নিদর্শন। কিন্তু সেরা কে, তা নিয়েও বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে।” বছরের বেস্ট বাছতে বসে আনন্দবাজার ডিজিটাল ‘সেরা’র নতুন সংজ্ঞা আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছে। যাতে এই পুরস্কার সব দিক দিয়েই স্বতন্ত্র হয়ে উঠতে পারে।
প্রসঙ্গত, আনন্দবাজার ডিজিটাল ২০২০ সালের জন্য দিতিপ্রিয়ার সঙ্গেই আরও চার জনকে ‘বছরের বেস্ট’ হিসেবে বেছে নিয়েছিল। তাঁদের প্রথম জন হলেন আমেরিকা প্রবাসী মাস্টারমশাই অরুণ মজুমদার। যাঁর নাম জো বাইডেনের ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়ে অগ্রগণ্য ছিল। দ্বিতীয় জনও মাস্টারমশাই। তবে তিনি বর্ধমানের আউশগ্রামের বাসিন্দা। সুজিত চট্টোপাধ্যায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। যিনি পেনশনের অর্থে অসুস্থ স্ত্রীর সেবা করার পাশাপাশি বছরে ২ টাকা পারিশ্রমিক নিয়ে পড়ুয়াদের শিক্ষাদান করেন। লকডাউনেও যে পাঠ বন্ধ হয়নি। তৃতীয় নীনা গুপ্ত। এই মাড়োয়ারি বধূ আইএসআই-এর শিক্ষিকা। যিনি ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানে ভারতের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ভাটনগর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। সাধারণত মাড়োয়ারিরা টাকা গোনেন। নীনাও গোনেন। তবে তিনি গোনেন জটিল সব সংখ্যা। তাঁদের সঙ্গেই আনন্দবাজার ডিজিটাল বছরের বেস্ট হিসেবে বেছে নিয়েছে বালুরঘাটের চিকিৎসক দেবিকা রায় বিশ্বাসকে। যিনি অকুতোভয় করোনা সংক্রমণের মধ্যেও নিজের চিকিৎসা পরিষেবার কাজ থেকে বিচ্যুত হননি। এমনকি, মর্গে গিয়ে মৃত জওয়ানের রাইগার মর্টিস ধরে যাওয়া দেহ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করে এনেছেন। কোভিড পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবিধি মেনে তাঁদের অনুষ্ঠানে হাজির করানো যায়নি।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় দিতিপ্রিয়ার হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
আসতে পেরেছিলেন দিতিপ্রিয়া। অন্যদের ছাপিয়ে যিনি সেরাদের মধ্যেও সেরা মনোনীত হয়েছেন। কারণ, টানা সাড়ে তিন বছর রানি রাসমণি সিরিয়ালে অভিনয় করার সময় দিতিপ্রিয়া একাই রাসমণির সমস্ত বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। পুরস্কার অনুষ্ঠানে যে কথা উল্লেখ করলেন প্রসেনজিৎ। আর রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে বললেন, নেটফ্লিক্সের ‘দ্য ক্রাউন’ ছবিতে রানি এলিজাবেথের বিভিন্ন বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিভিন্ন অভিনেত্রী। দিতিপ্রিয়ার ক্ষেত্রে তা করতা হয়নি। তিনি একাই বালিকা থেকে প্রৌঢ়া রাসমণির চরিত্রে মনপ্রাণ ঢেলে অভিনয় করেছেন।
দেখুন ভিডিয়ো:
‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠানে রাজভবনের প্রসেনজিৎ ছাড়াও এসেছিলেন সাংসদ-অভিনেতা দেব, অভিনেত্রী পাওলি দাম, শ্রীলেখা মিত্র, ইশা সাহা, নাট্যব্যক্তিত্ব সুমন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। স্ত্রী জিনিয়া সেনকে নিয়ে এসেছিলেন পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ছিলেন শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া, চন্দ্রশেখর ঘোষ, নন্দু বেলানি, সত্যব্রত দে এবং তাঁর কন্যা রচিতা দে, শমিত রায়, সুবর্ণ বসু, রূপালি বসু-সহ অন্য অনেক বিশিষ্টজন।
আরও পড়ুন: ইমরান খানের প্রাক্তন পত্নীর ছবিতে অভিনয়ে শাবানা
‘টিম রাসমণি’-র সঙ্গে দিতিপ্রিয়া।
‘রানিমা’-কে উৎসাহ দিতে হাজির ছিল ‘টিম রাসমণি’ ধারাবাহিকের গদাধর থেকে ভূপাল। বাড়িতে ভাইয়ের বিয়ে ছেড়ে কালো বেনারসি আর হিরের হারে মথুরবাবুকে (গৌরব চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন স্ত্রী দেবলীনা কুমার। লাল শাড়িতে উজ্জ্বল ইশা সাহা অনুষ্ঠানের পর পাওলির সঙ্গে জুড়ে দিলেন গল্প। কালো শাড়ি আর বাহারি ব্লাউজ, হাতে এক গোছা সিলভার চুড়িতে পাওলি এসেছিলেন স্বামী অর্জুন দেবকে নিয়ে। আর দেব এসেই জুড়ে দিলেন ইশার সঙ্গে খুনসুটি। বললেন, “অভীকবাবুর ডাকেই এখানে আসা।’’
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ঝাড়বাতির রোশনাইয়ের সামনে এসে দাঁড়ালেন রাজ্যপাল ধনখড়। যিনি বললেন, “বাংলা ছবি দেখার সময়ে বাংলা ভাষা বুঝতে অসুবিধা হয় না আমার। কেবল তখনই খটমট লাগে, যখন বাংলা ভাষার সাহায্যে অসাংস্কৃতিক কথাবার্তা বলা হয়।’’ তখন ঘিয়ে রঙা শাড়ি আর ফুলহাতা ব্লাউজে সাফল্যের হাসি হাসছেন দিতিপ্রিয়া। হাতে ‘বছরের বেস্ট’-এর ট্রফি।
আড্ডায় দেব, পাওলি এবং প্রসেনজিৎ
আরও পড়ুন: ‘যদি তোমার থাকে, তবে দেখাও, সোজা ব্যাপার’: স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy