এই লেখা লিখছি তাইল্যান্ডে বসে। দিওয়ালি তো এসেই গেল। তাইল্যান্ডে আমার ভারতীয় বন্ধুরা দেখছি কি ঝলমলে করে দিওয়ালির আয়োজন করছে। দিওয়ালির টুকিটাকি ঘর সাজানোর আয়োজন তো আছেই। সেই সঙ্গে আতসবাজি জ্বালানোরও আয়োজন করছে তারা। সেই সঙ্গে অবশ্যই আছে জুয়া খেলার ব্যবস্থা। যা না হলে দিওয়ালি পার্টি সম্পূর্ণতা পায় না।
পাঠকেরা নিশ্চয়ই মনে করতে পারছেন গত বছর লন্ডনের দিওয়ালি নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। লিখেছিলাম কী ভাবে সেখানে ইভেন্ট ম্যানেজারেরা এসে সাড়ম্বরে দিওয়ালি পার্টি আয়োজন করেন। ফ্যাশন ডিজাইনারের তৈরি জামাকাপড় পরেন লন্ডনবাসীরা। সবুজ লনে জ্বলে ওঠে আতসবাজি। দেখতে গেলে অনাবাসী ভারতীয়রা অনেক বেশি ভারতীয় হয়ে ওঠেন উত্সবের দিনে।
ওঁরা যদি পারেন, আমরা পারব না কেন? যেখানে কলকাতায় হাত বাড়ালেই সব কিছু কিনতে পাওয়া যায়। ধনীরা তো আড়ম্বরের পার্টি দিয়েই থাকেন। আমরা পারব না কেন একটু কল্পনাশক্তি ব্যবহার করে সুন্দর দিওয়ালি পার্টির আয়োজন করতে? এমন পার্টি দিন, যাতে লোকে সেটা মনে রাখে।
দিওয়ালি মানে বাড়িঘরদোর নতুন করে সাজানো। কলকাতায় ফিফটি পারসেন্ট ডিসকাউন্টে সুন্দর সুন্দর পর্দার কাপড়, ঝলমলে কুশন কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। জীর্ণ সোফা, ডিভান সাজাবার জন্য এই সব কুশন আমরা ব্যবহার করতে পারি। সোফা, পর্দা এই সব সাজানোর পর সুগন্ধি মোমবাতি দিয়ে সাজিয়ে দিন পুরো ঘর। খাবার টেবিলে উজ্জ্বল রঙের টেবিল ক্লথ পেতে দিন। রাখতে পারেন সেখানে আর্টিফিশাল অথবা টাটকা ফুল ফুলদানিতে। বাড়ির সদর দরজায় রঙ্গোলি করে প্রদীপ দিয়ে সাজিয়ে দিন। বাড়ির ছোটদেরকে অভিনব নকশার রঙ্গোলি করার দায়িত্ব দিন। রঙ্গোলিকে নতুনত্ব দিতে নতুন ধরনের মোটিফ দিয়ে আলপনা দিন। রঙের গুঁড়ো আর নানা রঙের ডাল দিয়ে রঙ্গোলি সাজাতে পারেন। সাদা রং দিয়ে আল্পনা দিয়েও নানা রঙ দিয়ে হাইলাইট করতে পারেন।
বাড়িতে অতিথি এলে তাঁদের জন্য বিস্তারিত ডিনারের আয়োজন না করে হাল্কা স্ন্যাকসের আইটেম রাখতে পারেন। তবে খাওয়া দাওয়ার মধ্যে যেন একটা ঐতিহ্যের ছোঁয়া থাকে।
বাড়িতে যদি বাগান বা লন থাকে, সেখানে বাজি পোড়ানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে হ্যাঁ শব্দবাজির বদলে আলোবাজি জ্বালাবারই আয়োজন করবেন। শব্দবাজি দূষণ বাড়ায় মাত্র। আনন্দ নেই।
তুবড়ি, ফুলঝুরি, রঙমশালই হোক দিওয়ালির বাজি।
আজকাল যেমন থিমপুজোর চল হয়েছে, তেমনি দিওয়ালিতেও থিম আনতে পারেন। আমার এক তাইল্যান্ডবাসী বন্ধু এবার নির্বাচনকে থিম করে দিওয়ালির পরিকল্পনা করছেন। বাড়ি সাজানো হবে নির্বাচনী প্রতীক চিহ্ন ব্যবহার করে। সঙ্গে থাকবে হিট ছবির মিউজিক।
আর সাজপোশাক? বিত্তশালীদের মতো ডিজাইনারওয়্যার না পরলেও চলবে। যা পরবেন তার মধ্যে যেন আভিজাত্যের ছাপ থাকে। দিওয়ালিতে ট্রেন্ডি লুক আনতে উজ্জ্বল রঙের কুর্তা-পাজামার সঙ্গে মোদি জ্যাকেট পরতে পারেন। মেয়েরা জমকালো গয়নাগাঁটি অবশ্যই পরবেন। কিন্তু তা যে সোনা বা হিরের হতে হবে তার কোনও মানে নেই। আজকাল নিখুঁত দেখতে কস্টিউম জুয়েলারিতে বাজার ছেয়ে গিয়েছে। তেমনটাও পরতে পারেন। অল্পবয়েসি তরুণীরা পরতে পারেন ফ্লোয়িং আঙরাখা। ভারী নকশা করা পাড়ের শাড়িও পরতে পারেন। সঙ্গে ফ্যান্সি চোলি পরতে পারেন। চোলিতে থাকবে টাসেল আর সিকুইনের কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy