অভিনেত্রী করিনা কপূর খান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, বিয়ের পর চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করতে চান না তিনি। নায়ক-নায়িকাদের এই ধরনের অনেক শর্ত লেখা থাকে চুক্তিতে। যেমন, সম্প্রতি ছোটপর্দার অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, এমন কোনও দৃশ্যে তিনি অভিনয় করবেন না, যা বাড়ির লোক বা কাছের মানুষের সঙ্গে দেখলে তাঁর অস্বস্তি হবে।। তাঁর বিশ্বাস, স্বামী রুবেল দাসও এমন দৃশ্যে অভিনয় করবেন না। এ প্রসঙ্গে কী মত বাকিদের?
ছোটপর্দার অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীই আছেন যাঁরা স্বামী, স্ত্রী দু’জনেই অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত। কাউকে দেখা যায় ক্যামেরার সামনে। কেউ আবার থাকেন ক্যামেরার আড়ালে। আবার কেউ কেউ পরিবারের কথা মাথায় রেখে চিত্রনাট্য বাছাই করেন। ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করা নিয়ে এখনও সেই দ্বন্দ্ব ছোটপর্দার অভিনেত্রীদের মধ্যে?
আরও পড়ুন:
কাটোয়ার মেয়ে অভিনেত্রী শ্রুতি দাস। অভিনয়ের টানেই কলকাতায় আসা তাঁর। ‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে যাত্রা শুরু। তার পর একের পর এক ধারাবাহিক, ওয়েব সিরিজ়ে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে সম্পর্কের শুরুও কাজের মাধ্যমেই। এখন তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। চিত্রনাট্যে যদি ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের কথা লেখা থাকে, সে ক্ষেত্রে কি স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করা দরকার বলে মনে করেন অভিনেত্রী?
শ্রুতি বলেন, “স্বামী একই পেশায় আছে বলেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে ও আমার দিকটা বুঝতে পারে। আর স্বর্ণেন্দুই আমার মেন্টর। তাই কোনও কাজের সুযোগ এলে প্রথমে ওর সঙ্গেই আলোচনা করি।” মাঝে একটি সিরিজ়ে অভিনয় করেছেন শ্রুতি। সেখানে বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনেত্রীর বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রয়েছে। স্বর্ণেন্দুকে বিয়ের পরেই সেই শুটিং করেছেন তিনি। শ্রুতি যোগ করেন, “বিশ্বরূপ স্বর্ণেন্দুরও ঘনিষ্ঠ। আর আমি বলেওছিলাম, গল্পের স্বার্থে কিছু এমন দৃশ্য আছে। আমার কোনও অসুবিধা হয়নি। তবে এটা বলতে চাই, অহেতুক কোনও চিত্রনাট্যে যদি চুম্বন দৃশ্য থাকে সেটা করতে পারব না। তার সঙ্গে বিবাহিত, অবিবাহিত হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।”
অভিনেত্রী অহনা দত্তও কিছুটা সহমত শ্রুতির সঙ্গে। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ দিয়ে অভিনয়যাত্রার শুরু। তার পর একটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ধারাবাহিকে অভিনয় করতে করতেই রূপটানশিল্পী দীপঙ্কর রায়ের সঙ্গে তাঁর প্রেম এবং বিয়ে। অহনা বলেন, “এখানে স্বামীর মতামত বা পরিবারের ভাবনার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, আমি কী ভাবছি, চিত্রনাট্য অনুযায়ী কোনটা করলে ঠিক হবে। গল্পের স্বার্থে যদি আমায় গন্ধযুক্ত খাবার খেতে হয় সেটাও খেতে রাজি। সুতরাং আমার এই ধরনের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।”
অভিনেত্রী ঊষসী রায় অবশ্য গুরুত্ব দিয়েছেন নিজেকে। তিনি ব্যস্ত ‘গৃহপ্রবেশ’ ধারাবাহিক নিয়ে। ছোটবেলা থেকে একেবারে অন্য ভাবে বড় হওয়া তাঁর। সারা পৃথিবীর ছবি দেখেছেন মা-বাবার সঙ্গে। সারা বাড়ি জুড়ে বিভিন্ন লেখকের বইয়ের ভিড়। তাই অভিনেত্রী মনে করেন, তাঁর পরিবার বা ঘনিষ্ঠজনেরা একটা দৃশ্যের নিরিখে তাঁকে বিচার করবেন না। ঊষসী বললেন, “আমার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হল, আমি ওই চরিত্র, ওই দৃশ্যকে বিশ্বাস করতে পারছি কি না। জোর করে করানো হচ্ছে বলে মনে হলে সেটা সম্ভব নয়। আর এমন অনেক সময় হয়েছে। কোনও দৃশ্যে অভিনয়ের পরে ভেবেছি বাড়িতে কে কী ভাববে। কিন্তু পরে তাঁরাই আমার মাকে ফোন করে প্রশংসা করেছেন। আর তা ছাড়া, আমার ঘনিষ্ঠদের আমার উপর পুরোপুরি আস্থা রয়েছে, এটা আমার বিশ্বাস।” উল্লেখ্য, শুধু টলিউড নয়, বলিপাড়ার অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীই অবশ্য ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্য নন, এ কথা জানিয়েছেন বহু সাক্ষাৎকারে।