প্রয়াত অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদারের স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৬ বছর। অথচ সেই কিশোরীকেই ‘পরশুরাম’ ছবিতে সুযোগ দিয়েছিলেন পরিচালক মৃণাল সেন। ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই। ২৭ জানুয়ারি প্রয়াত হন অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার। শুক্রবার নন্দনে প্রয়াত অভিনেত্রীকে স্মরণ করলেন টলিপাড়ার বিশিষ্টরা এবং তাঁর কাছের মানুষরা। আয়োজনে ‘সিনেমাথেক’।
মৃণাল সেনের একাধিক ছবির অভিনেত্রী। কাজ করেছেন শ্যাম বেনেগাল, প্রকাশ ঝা ও উৎপলেন্দু চক্রবর্তীর ছবিতেও। কিন্তু ৬৫ বছর বয়সি শ্রীলা কি বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে যোগ্য সম্মান পেয়েছেন? কিছুটা আক্ষেপই যেন ফুটে উঠল স্মরণসভায় বিশিষ্টদের বক্তব্যে। পাশাপাশি ফুটে উঠল তাঁর শিল্পসত্তার বহুমুখী আঙ্গিক। শিল্পী সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় যেমন রেডিয়ো নাটকে শ্রীলার দক্ষতার কথা তুলে ধরলেন। অভিনয়ের প্রতি অভিনেত্রীর অদম্য ভালবাসাকে তুলে ধরলেন পরিচালক রেশমি মিত্র। বললেন, ‘‘সব সময় বলতেন যেন আমার ছবিতে ওঁর জন্য একটা চরিত্র রেখে দিই। ‘বারান্দা’ ছবিতে মাত্র দুটো দৃশ্য। এক কথায় অভিনয় করতে রাজি হলেন শ্রীলাদি। ওঁর মতো অভিনেত্রীর কাছ থেকে এটা আমার বড় প্রাপ্তি।’’ রেশমি জানালেন, শিশিরকুমার ভাদুড়ির বায়োপিক ‘বড়বাবু’ ছবিতে এক প্রকার জোর করেই অভিনয় করতে চেয়েছিলেন শ্রীলা। রেশমির কথায়, ‘‘কিন্তু তখন ওর স্বাস্থ্য দেখে আমি ঝুঁকি নিতে চাইনি। কিন্তু আমার অনুরোধে নিয়মিত ওয়ার্কশপ করিয়েছেন, এমনকি, ফ্লোরেও শুটিং দেখতে এসেছিলেন শ্রীলাদি।’’ শ্রীলা মজুমদারকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরির ইচ্ছাপ্রকাশও করলেন রেশমি।
অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল যেমন তাঁর বক্তব্যে ‘স্মরণ’ এর পরিবর্তে শ্রীলার জীবনকে উদ্যাপনের উপর জোর দিলেন। সম্প্রতি চৈতি তাঁর পরিচালনায় ‘নেভারমাইন্ড’ ছবির শুটিং শুরু করেছেন। অভিনেত্রীর আক্ষেপ, ‘‘ছবিতে শ্রীলাদির জন্য একটা চরিত্র রাখা ছিল। অভিনয় নিয়ে উনি কখনও তৃপ্ত ছিলেন না। ওঁর ওই অতৃপ্তিই আমার অনুপ্রেরণা হয়ে রয়ে যাবে।’’
শ্রীলা মজুমদারের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের কথা তুলে ধরলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বললেন, ‘‘যে কোনও বয়সের মানুষের সঙ্গে সহজে মিশতে পারতেন এবং তাঁদের মনকে বুঝতে পারতেন শ্রীলাদি। তাই ওয়ার্কশপেও তাঁর কাছে সকলের শেখার সুযোগ বেড়ে যেত।’’ তবে ঋতুপর্ণাও একমত হলেন যে, ইন্ডাস্ট্রি থেকে শ্রীলা মজুমদারের আরও অনেক কিছু পাওয়ার ছিল। হতাশ কণ্ঠেই বললেন, ‘‘পরশু নন্দিতা দাস আমাকে মেসেজে লিখেছিলেন যে, শ্রীলা মজুমদার তাঁর প্রাপ্য সম্মান পাননি।’’ ঋতুপর্ণার মতে, শ্রীলা মজুমদারের ছবির মাধ্যমেই তাঁকে অনুরাগীদের স্মরণ করা উচিত। শুক্রবার অনুষ্ঠান শেষে দেখানো হয় মৃণাল সেন পরিচালিত ও শ্রীলা মজুমদার অভিনীত ছবি ‘আকালের সন্ধানে’। উপস্থিত ছিলেন শ্রীলার স্বামী এস এন এম আব্দি ও পুত্র সোহেল আব্দি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy