শাশ্বত
প্র: পুরনো শবরের চেয়ে নতুন শবর কতটা আলাদা?
উ: একবার একটা চরিত্র স্থির হয়ে গেলে তো তার মধ্যে বিশেষ কিছু বদলায় না। তবে পুরনো শবরের চেয়ে নতুন শবর অনেক বেশি ফিট।
প্র: তার মানে এখন অনেকটা সময় জিমে কাটাচ্ছেন?
উ: জিম নয়, ডায়েট করে ফিট আছি। তবে বদলটা শুধু আমার ফিটনেসে নয়, ফিল্ম মেকিং আগের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট হয়েছে। মিউজিক ডিরেক্টর বিক্রম ঘোষও বেশ ভাল কাজ করেছেন। ছবির বিষয়বস্তুও সমসাময়িক। এই ছবিতে শবর কলকাতার মধ্যে আটকে না থেকে, সহকারী নন্দকে নিয়ে চন্দননগর হয়ে একেবারে লখনউ পৌঁছে গিয়েছে। নন্দকে নিয়ে প্রসিদ্ধ একটি কাবাবের দোকানে বসে কাবাবও খেয়েছে। অাহা কী স্বাদ! দর্শক পরদার ভিতর থেকে গলৌটি কাবাবের গন্ধ পেলেও পেতে পারেন (হাসি)।
প্র: শবর দাশগুপ্তর সঙ্গে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের কতটা মিল?
উ: বিন্দুমাত্র মিল নেই। না, একটি ব্যাপারে আছে। আমরা দু’জনেই খাদ্যরসিক। এই একটিই তো রস আছে শবরের মধ্যে (হাসি)!
প্র: উপন্যাস অনেকটাই বদলেছে ছবিতে। এ নিয়ে লেখক আপত্তি করেননি?
উ: সাধারণত গল্প পরিবর্তন অনেকেরই অপছন্দ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উল্টো। শবরের স্রষ্টা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে প্রশংসাই পেয়েছি। শুনেছি, ফিল্ম হওয়ার পর উনি বলেছেন, শবরকে নিয়ে আরও লিখবেন। এ বারে ‘গোলাপি সাইকেল’ উপন্যাসটি অবলম্বনে ‘আবার শবর’। দেখুন, ফিল্মের প্রয়োজনে গল্প অদল-বদল করা হয়েই থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ফিল্ম হওয়ার আগে শবর ড্রয়িং রুম ড্রামার মধ্যেই আটকে ছিল। এখন কিন্তু শবরের উপন্যাসগুলির বিক্রি বেড়েছে। নিজের চোখেই দেখেছি, নতুন লাল মলাটের ‘শবর সমগ্র’ প্রকাশিত হতে। ভাল লাগে দেখতে।
প্র: এই ছবিটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা ....
উ: ১৯ জানুয়ারি ছবিটি রিলিজ করবে। ট্রেলার লঞ্চ হয়েছে ২৫ ডিসেম্বর। এর মধ্যে যত জন ট্রেলার দেখেছেন তার ১০ শতাংশ যদি ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শোয়ে আসেন, তা হলেই আমি খুশি!
প্র: ‘ব্যোমকেশ’, ‘ফেলুদা’, ‘কাকাবাবু’, ‘অর্জুন’, ‘কিরীটি’, ‘শবর’... এই চরিত্রগুলি অভিনয় করার মধ্যে আপনি কি কোনও কৌলীন্য খঁুজে পান?
উ: দেখুন, গোয়েন্দা গল্পের কোনও মার নেই। বাংলা সাহিত্যের অধিকাংশ লেখক স্বনামে বা ছদ্মনামে গোয়েন্দা গল্প লিখেছেন। তা ছাড়া প্রত্যেক বাঙালির মধ্যে একটা গোয়েন্দা লুকিয়ে থাকে। যে কোনও বিষয়ে বাঙালি প্রশ্ন করবেই, ‘কেন হল?’ ‘কী জন্য হল?’ লক্ষ করে দেখবেন, গোয়েন্দা ছবি দেখতে বসে বাঙালি দর্শক পরদার গোয়েন্দার আগেই রহস্য ভেদ করে ফেলতে চায়। ‘এই দ্যাখ, আমি বলছি ওটা হবে।’ ‘না আমি বলছি, এই ভাবেই হবে।’ ঠিক বলছি কিনা (হাসি)!
আরও পড়ুন: নতুন বছরে দেখা যাবে আগ্রাসী রজারকে
প্র: আপনার পরের ছবি ‘বসু পরিবার’-এর শ্যুটিং তো শেষ...
উ: হ্যাঁ। ক’দিনের মধ্যে ডাবিং শুরু হবে। সুমন ঘোষের ‘বসু পরিবার’ বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একটা কালজয়ী ছবি হতে চলেছে। এক দিন ও এক রাতের গল্প নিয়ে ছবিটি। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অর্পণা সেন, ঋতুপর্ণা, যিশু.... কে নেই! এ বলে আমায় দ্যাখ, ও বলে আমায়। যেমন কাস্টিং, তেমনই স্ক্রিপ্ট! ভাবা যায় না!
প্র: ‘আবার শবর’ ও ‘বসু পরিবার’। এর পর কী কী?
উ: পাঁচ জানুয়ারি রিঙ্গোর ‘রে’ মুক্তি পাচ্ছে। ওখানেও একটা অন্য রকম চরিত্র করেছি। জানুয়ারির শেষ থেকে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘গুডনাইট সিটি’র শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ব।
প্র: বলিউডের ডাক?
উ: এই মুহূর্ত পর্যন্ত তো নেই।
প্র: এই ছুটির মরসুমে পরিবারের সঙ্গে কোনও প্ল্যান?
উ: আউটিং বলতে আমরা বুঝি কোনও রেস্তোরাঁয় গিয়ে জমিয়ে ভূরিভোজ। আমরা ভীষণ লোভী পরিবার!
প্র: কিন্তু এখন তো ডায়েটিংয়ে...
উ: বেশি খাব না। কিন্তু খাব। খাওয়ার জন্য আমি সব সময় পা বাড়িয়ে থাকি।
প্র: সিনেমার জন্য কখনও কলম ধরার কথা ভেবেছেন?
উ: এখনও নয়। আগে লিখেছি, কিন্তু টেলিফিল্মের জন্য গপ্পো।
প্র: আর আত্মজীবনী লিখবেন না?
উ: না, লিখব না। সব সত্যি তো লিখতে পারব না। সুতরাং মিথ্যে লেখার চেয়ে না লেখাই বরং ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy