ফিরকিকে কোলে নিয়ে রানি।
সামনেই নারী দিবস। আপনার কাছে এই দিনের অর্থ কী?
আমরা ‘হয়ে ওঠা’ নারী। প্রত্যেকটা মুহূর্তে আমাদের পরীক্ষা দিতে দিতে এগোতে হয়। কিন্তু এতদিন বাংলা অভিনয়ের জগতে আমাদের ডাকা হয়েছে তখনই, যখন কোনও ‘হিজড়ে’ চরিত্র দরকার বা কোনও ক্যারিকেচার চরিত্রের প্রয়োজন। আমি নিজেও ক্যারিকেচার করেছি। প্রত্যেকদিন সিরিয়ালে আমরা যে সব চরিত্র দেখি সেগুলোতে শুধু নারী আর পুরুষরাই কাজ করেন। সমাজে আমরাও রয়েছি। সামাজিক গল্প নিয়েই সিরিয়ালগুলো হয়। যদি ট্রান্স জেন্ডার অধ্যাপক থাকেন, উকিল থাকেন, ডাক্তার থাকেন তাহলে সেই চরিত্রগুলো কেন সিরিয়ালে আসবে না? আসলে কী হবে? কর্মসংস্থান বাড়বে।
‘ফিরকি’ সেই জায়গাকি তৈরি করল?
হ্যাঁ। ‘ফিরকি’ একটা নব জাগরণ ঘটিয়েছে, ‘হিজড়ে’ কমিউনিটিকে রিপ্রেজেন্ট করছে। ফলে অনেক রূপান্তরকামী মানুষ যারা অভিনেতা তাঁরা কাজ পাচ্ছেন।
এলজিবিটিকিউ মানুষেরাঅডিও ভিস্যুয়াল মিডিয়ামে কতটা আছেন?
এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির মধ্যে লেসবিয়ান এবং গে মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তাঁদের পরিচয় আড়াল করা যায়। আমিও তাঁদের পরিচয় দিতে পারব না। তাঁরাও দেন না। এরকম বহু মানুষ ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। কিন্তু আমরা যারা ট্রান্স তাঁরা মার্ক হয়ে যাই। আমরা দেখতেও আলাদা, চরিত্রেও আলাদা, গলার স্বরও আলাদা। ভিড়ের মধ্যে আমাদের সহজেই চিহ্নিত করা যায়। সেই কারণেই হয়তো সুযোগের জায়গাটাও কম, নেই বললেই চলে।এই মুহূর্তে ‘ফিরকি’তে আমি আর কুসুম রয়েছি।
আরও পড়ুন-মোদীর উচ্চারণ নিয়ে ব্যঙ্গ করায় টুইঙ্কলকে যৌনতা নিয়ে বিঁধলেন রঙ্গোলি
‘চার দেয়ালের মাঝখানে আমি যে জীবন যাপন করি সেটা ব্যক্তিগত’
কেন?
আসলে গে এবং লেসবিয়ান মানুষেরা সমাজের সঙ্গে একত্রিত হয়ে থাকতে পারে। সেজন্য তাঁদের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা চিহ্নিত হয়ে যাই। সেজন্য সেই জায়গাটা একদমই নেই।এখনও সমাজে আমাদের মেনে নেওয়ার মতো সংবোদনশীলতা পুরোপুরি তৈরি হয়নি।
আরও পড়ুন-ডিনার-ডেটে গিয়ে এ কী হল মালাইকা-অর্জুনের সঙ্গে!
৩৭৭ ধারা বিলোপ কতটা অধিকার দিল?
এই আইন আমার যৌনতার অধিকার দিয়েছে। সে অধিকার আমি নিয়েই জন্মেছি। চার দেয়ালের মাঝখানে আমি যে জীবন যাপন করি সেটা ব্যক্তিগত। আইনের চোখ রাঙানি ছিল, সেটা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। লক্ষ্য করে দেখবেন ওই সময় আমাদের দিয়ে ফিতে কাটানো, মা দুর্গার চক্ষুদানের হিড়িক পড়ে গেল। কিন্তু কেউ পাঁচশো টাকাও সাম্মানিক দেয়নি। আমাদের জায়গাটা হচ্ছে কর্মক্ষেত্র। এমনও হয়েছে এই ধারা বিলোপের পর অনেকে আড়াল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। যেই বেরিয়ে এসেছেন অমনি কাজের জায়গার দরজাটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সর্ষের ভেতরেই ভূত রয়েছে। আমি আইনের স্বীকৃতি দিয়ে দিলাম কিন্তু বেঁচে থাকার লড়াইয়ে থাকলাম না, তা হলে নতুন কী হল? লড়াই করার জায়গাও দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy