তাঁর কাছে দোল মানে বড়দের পায়ে আবির, বন্ধুস্থানীয় বা ছোটদের কপালে রঙের তিলক। আর নাচ-গানের পরিবেশ। এ ভাবেই বসন্ত উৎসব উদযাপন করতে ভালবাসেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতে, এ ভাবেই আগামী প্রজন্মের মনে রঙের উৎসবের মাহাত্ম্য ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। এই ভাবনা থেকেই ২০০৫-এ নাচের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীক্ষামঞ্জরীর ছাত্রীদের নিয়ে তাঁর প্রথম দোল উৎসব উদযাপন। আগামী বছরে ডোনার নাচের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পা দেবে ২৫ বছরে। অনুষ্ঠানের বয়স ২১। আনন্দবাজার ডট কমকে ডোনা বলেছেন, “আনন্দের রেশ নিয়ে কমবেশি ৫০০ ছাত্রী যোগ দিচ্ছেন। ভারতীয় জাদুঘরে বুধবার ও বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে নাচের এই বিশেষ অনুষ্ঠান। বুধবার মহড়া অনুষ্ঠান দেখতে আসবেন ১০০ জন প্রবীণ নাগরিক।”
ডোনার এই নাচের অনুষ্ঠানের শুরুটাও বেশ মজার। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের একমাত্র কন্যা সানা গঙ্গোপাধ্যায় তখন খুবই ছোট। সবে হাঁটতে শিখেছে। ডোনা বললেন, “সেই সময় আমার মনে হয়েছিল, সানা একটু একটু করে বড় হচ্ছে। ও-ও তো দোল খেলবে। বড়দের পায়ে আবির দিয়ে প্রণাম করতে শেখাতে হবে। আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ওর মনে বুনে দিতে হবে। আমি ছাড়া কে শেখাবে এ সব?” এই ভাবনা থেকেই নৃত্যশিল্পী নিজের বাড়িতে দীক্ষামঞ্জরীর ছাত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। সানা বড় হয়েছেন। কলেবরে বেড়েছে দীক্ষামঞ্জরীও। নৃত্যশিল্পী জানিয়েছেন, কমবেশি তিন-চার হাজার দর্শকশ্রোতা তাঁদের অনুষ্ঠান দেখতে আসেন। এক এক সময় তাঁর মনে হয়, আরও বড় জায়গা পেলে বুঝি ভাল হত।
আরও পড়ুন:
কী ধরনের নাচেগানে অনুষ্ঠান সাজাচ্ছেন ডোনা? নৃত্যশিল্পীর কথায় গুজরাতি লোকগান, রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে জনপ্রিয় হিন্দি গানের তালে নৃত্য পরিবেশন করবেন তাঁর ছাত্রীরা। গানের ভাব অনুযায়ী প্রত্যেকের পোশাক বাছাই করেছেন। একদম ছোট থেকে ডোনার থেকেও বয়সে বড় ছাত্রী অনুষ্ঠানে সাগ্রহে যোগ দেন। ডোনার কথায়, “আমার প্রতিষ্ঠানে মা আছেন, মেয়েও। আবার এমন ছাত্রীও আছেন যিনি মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার ফাঁকে অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন।” যাঁকে ভেবে এই অনুষ্ঠানের প্রবর্তন সেই সানা বিদেশে কর্মরতা। তিনি অনুপস্থিত। প্রসঙ্গ তুলতেই সৌরভ-পত্নীর বক্তব্য, “এক মেয়ে বাইরে আছে, তাতে কী? ওই দিন ৫০০ মেয়ে আমাকে ঘিরে থাকে!”
অনুষ্ঠান শেষে থাকবে আবির খেলার আয়োজন। নৃত্যশিল্পী জানিয়েছেন, মাটির পাত্রে নানা রঙের ভেষজ আবির রাখা থাকে। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত প্রত্যেকের কপালে আবির ছুঁইয়ে দেওয়া হয়।