শাহরুখ-আরিয়ান।
বলিউড ও মাদকের প্রতি আসক্তি। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই আঁতাঁত ছিল ইন্ডাস্ট্রির ‘ওপেন সিক্রেট’। কিন্তু গত বছর সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অকালপ্রয়াণ এবং সেই ঘটনার জেরে বলিউডের মাদক-যোগ ইন্ডাস্ট্রির গোপন কথা প্রকাশ্যে এনেছে। রবিবার সেই বিতর্ক নতুন গতি পেল, শাহরুখ খানের বড় ছেলে আরিয়ানের গ্রেফতারির পরে। মুম্বই থেকে গোয়াগামী এক প্রমোদতরীতে আয়োজিত ‘রেভ পার্টি’তে হানা দিয়ে শনিবার রাতে আরিয়ান খান-সহ আটজনকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরো। জিজ্ঞাসাবাদের পরে আরিয়ান ও বাকিদের গ্রেফতার করা হয় রবিবার।
রুপোলি দুনিয়ার পিচ্ছিল পথের ডাকই হোক বা তারকার ব্যক্তিজীবনের টানাপড়েন— মাদক, অ্যালকোহল, ধূমপানের আসক্তি উপেক্ষা করতে পারেন না ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিনেতা। এবং এই ঘটনা আজকের নয়। নামগুলির ওজন এত বেশি যে, সব সময়ে হয়তো তাঁদের নাম করে সংবাদমাধ্যমেও লেখা হয়নি। তবে ইন্ডাস্ট্রির হাল-হকিকত সম্পর্কে অবহিত ব্যক্তিরা সে খোঁজ রাখেন। শাহরুখের ছেলের পাশাপাশি আর এক খান-তনয়ের মাদক আসক্তির কথা শোনা যায়। আসক্তির জেরে ওই তারকা-সন্তানের নাকি শ্রবণশক্তিতেও সমস্যা রয়েছে। সম্প্রতি ওই স্টার কিড সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। বলিউডে সদ্য পা রাখা আরও কিছু তারকা-সন্তানের নামও বিভিন্ন সময়ে এই সূত্রে উঠে এসেছে। কখনও বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করে ফেরার পথে ছবি-শিকারিদের নজরে পড়েছেন তাঁরা, কখনও বা কোনও পার্টি থেকে মুখে মুখে রটেছে তাঁদের নাম। বিষয় হল, এই তারকা সন্তানেরা এখনও অবধি পারিবারিক পরিচিতির কারণেই লাইমলাইটে। তাই তাঁদের আসক্তির কথা প্রকাশ্যে এলে ক্ষতি দু’রকমের। এক দিকে কেরিয়ার এগোনোর আগেই জনমানসে এঁদের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়। অন্য দিকে এঁদের বাবা-মায়েদের পেশাদার জীবনেও আঁচড় পড়ে।
আরিয়ানদের আগের প্রজন্মের অভিনেতাদের মধ্যেও এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। ফারাক হল, কেরিয়ারে একটা জায়গায় পৌঁছনোর পরে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনে সে কথা কবুল করেছেন। রণবীর কপূর, অর্জুন কপূর, প্রতীক বব্বর— উল্লেখযোগ্য, এঁরা সকলেই তারকা-সন্তান। মদ, ধূমপান এবং মাদক—তিনটিরই নেশা ছিল রণবীরের। তবে নিজের চেষ্টাতেই তিনি মাদক এবং ধূমপানের নেশা থেকে নিজেকে অনেকটা মুক্ত করেছেন। তাঁর জীবনে মা স্মিতা পাটিলের অভাবের কথা এখনও প্রতীকের সাক্ষাৎকারে ফিরে ফিরে আসে। তেরো বছর বয়সেই মাদকের জালে জড়িয়েছিলেন প্রতীক। ২০১৭ সালে বেশ কয়েক মাসের জন্য তাঁকে রিহ্যাবেও থাকতে হয়েছিল। মায়ের ক্যানসার, সৎ-মাকে মেনে নিতে না পারা... ব্যক্তিজীবনের টানাপড়েনের জন্যই আসক্তিকে আশ্রয় করেছিলেন অর্জুন।
বলিউডের মাদক-যোগকে প্রকাশ্যে আনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না, তা নিয়ে আগেও চর্চা হয়েছে, আগামী দিনেও হবে। তবে তরুণ প্রজন্মের মাদকাসক্তি কখনও অনুসরণযোগ্য দৃষ্টান্ত হতে পারে না, সে বিষয়ে সকলেই একমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy