আগাম আঁচ পেয়েছিলেন হয়তো। কিন্তু মন কি মানতে চায়? এত দিন ধরে তাঁরা একসঙ্গে শুটিং করেছেন। একসঙ্গে খুনসুটিও! ‘টিম’ হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই দলে নায়িকা দিতিপ্রিয়া রায়ও ছিলেন। আচমকা তাঁর বিদায়! ‘বড্ড মনখারাপ’, আনন্দবাজার ডট কম-কে বললেন সুচন্দ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভ্রজিৎ চক্রবর্তী।
অভ্রজিৎ ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকের নায়ক ‘আর্য সিংহ রায়’-এর অভিন্ন বন্ধু ‘কিঙ্কর’। পর্দায় কিঙ্করের সঙ্গে খুব সদ্ভাব ছিল না নায়িকা ‘অপর্ণা’র। “বাস্তবে কিন্তু আমাদের সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। দিতিপ্রিয়া বড্ড ছোট। ওর সঙ্গে কেন খারাপ সম্পর্ক তৈরি হবে?”, পাল্টা প্রশ্ন করেন অভ্রজিৎ। বলেন, “ওর সঙ্গে কারও সম্পর্কই খারাপ ছিল না।” তা হলে কোথায় সমস্যা তৈরি হল? এই প্রশ্ন অভিনেতারও। এই জায়গা থেকে তাঁর উপলব্ধি, “ইদানীং সমাজমাধ্যমে সকলের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বড্ড নাক গলানোর অভ্যাস শুরু হয়েছে। সেটা বোধহয় ঠিক নয়।” একই সঙ্গে এ-ও মনে করেন, এগুলো এখন জীবনের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। তাই এগুলো নিয়েই চলার অভ্যাস করতে হবে।
সকাল থেকে এ দিন শুটে তিনি। নায়ক জীতু কমলের সঙ্গে একের পর এক দৃশ্যের শুটিং করেছেন। চিত্রনাট্য অনুযায়ী, হারিয়ে গিয়েছে অপর্ণা। দুই বন্ধু মিলে খুঁজছে তাকে। “বাস্তবেও যে এ রকমই কিছু হবে, ধারণা ছিল না”, বক্তব্য অভ্রজিতের। সেটের বাকিরাও এই ভাবনা বুকে চেপে শুটিং করে গিয়েছেন। মেকআপ রুমে বিশ্রাম নেওয়ার ফাঁকে শুধু মনে পড়েছে, ‘কে যেন ছিল, সে যেন নেই!’
আরও পড়ুন:
প্রথম দফার অশান্তি মিটে গিয়েছিল। আবার একসঙ্গে শুটিং করছিলেন জীতু-দিতিপ্রিয়া। আদৌ মিটেছিল কি?
প্রশ্ন ছিল দিতিপ্রিয়ার পর্দার মা ‘সুমি’ ওরফে সুচন্দ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এ দিন সন্ধ্যায় ছিল তাঁর শুটিং। প্রশ্ন রাখতেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বললেন, “জানেন, ছোট্ট কুকুরছানাগুলো আজও দিতির ঘরে এসে শুয়ে আছে। সমানে খুঁজছে ওকে। ওরা পর্যন্ত দিতিকে খুব ভালবাসত।” বলতে বলতে কণ্ঠস্বর ভারী সুচন্দ্রার। একটু থেমে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে বলেন, “খুব কষ্ট হচ্ছে। এটা কাম্য ছিল না। জীতু-দিতিপ্রিয়া জুটিকেই চেয়েছিলেন দর্শক। কোনও একজনকে নয়।” এ বার নতুন নায়িকার মা? প্রশ্ন শুনে সুচন্দ্রার বক্তব্য, “এটাই নিয়ম। পেশাদার অভিনেত্রী হিসাবে প্রত্যেকের সঙ্গে কাজ করাই আমার কাজ। সেটা করব। কিন্তু খুব কষ্ট হবে।”
সোমবার দিতিপ্রিয়া সেটে নেই। নেই তাঁর পর্দার বন্ধু ‘সন্তু’ ওরফে তন্ময় মজুমদারও। “আজ আমার শুটিং ছিল না। সকালে বাড়ি বসেই খবর পেয়েছি। বন্ধু চলে গেল!” ‘নতুন বন্ধু’ আসছে তো? “সে তো আসবেই। কাজও করব নতুন যিনি আসবেন তাঁর সঙ্গে। তা বলে কি বন্ধুকে ভুলতে পারব?” নিজেকেই নিজে যেন প্রশ্ন করেছেন ‘সন্তু’!