প্রতিরক্ষা আবাসনের বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল পাক-অভিনেত্রীর পচা-গলা দেহ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ দাবি করেছিল, সপ্তাহ খানেক আগে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে তাঁর, সমস্ত দরজা বন্ধ ছিল ভিতর থেকে। ফলে কোনও অস্বাভাবিকতা নাকি দেখা যায়নি। কিন্তু ৩২ বছরের হুমাইরা আসগরের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সপ্তাহ খানেক নয়, অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮-১০ মাস আগে।
আরও পড়ুন:
দীর্ঘ দিন ভাড়া না মেটানোয় করাচির ওই আবাসনের মালিক মামলা করেছিলেন হুমাইরার নামে। সমনের উত্তর না দেওয়ায় গত সপ্তাহে ওই আবাসনের বন্ধ ঘরে হানা দেয় পুলিশ। আর তখনই জানাজানি হয় অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর।
ঘরের প্রধান দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। দেখা যায় মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে হুমাইরার মৃতদেহ। একেবারে পচে গলে গিয়েছিল দেহটি। পোকা হয়ে গিয়েছিল চার পাশে। সে সময় পুলিশ জানিয়েছিল, শুধু মূল দরজা নয়, ওই ফ্ল্যাটের বারান্দার দরজাও ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ফলে বাইরে থেকে কেউ ঢুকে তাঁকে হত্যা করেছেন, এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রথমেই।
এর পর অভিনেত্রীর দেহ নিতেও অস্বীকার করেন তাঁর বাবা ও ভাই। তাঁদের দাবি ছিল, অভিনয় করে নাকি আগেই বংশের নাম ডুবিয়েছেন মেয়ে। তাই তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না পরিবারের।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর উঠছে আরও প্রশ্ন। ৮-১০ মাসে আগে মৃত্যু হয়েছে অভিনেত্রীর। এত দিনে কি কোথাও কেউ তাঁর খোঁজ করলেন না? কেন খোঁজ করলেন না? ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, হুমাইরার দেহের অস্থিমজ্জা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সব কালো হয়ে গিয়েছে, পচে গিয়েছে মস্তিষ্ক। আঙুল ও নখের কোনও অস্তিত্বই নেই, মাংস গলে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে হাড়। মেরুদণ্ডের হাড় থাকলেও তাতে অস্তিত্ব মেলেনি সুষুম্না নাড়ির। শরীরে বাদামি পোকা জন্মে গিয়েছে। হাড়ের উপর কালো চামড়ার আস্তরণ অবশ্য পাওয়া গিয়েছে। তবে কোনও হাড় ভাঙা ছিল না বলে দাবি করেছে পুলিশ। মৃতদেহে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলেই দাবি। মৃত্যুর কারণও এখন জানাতে পারছেন না তদন্তকারী আধিকারিকেরা। মৃতদেহ শনাক্তকরণও প্রাথমিক ভাবে অসম্ভব ছিল। এখন তাঁরা ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায়।