প্রশ্ন: এক সময় বলা হয়েছিল দেবের উত্তরসূরী নাকি আপনি। তার পর ‘হিট’ আর ‘ফ্লপ’-এর চড়াই উতরাই পেরিয়ে মুনির আলমের মতো চরিত্র পাওয়া কতটা কঠিন?
অঙ্কুশ: ‘স্টার’ ইমেজ পাব কি না— তা বিবেচনা করে আমি চরিত্র বাছাই করিনি কোনও দিন। অভিনেতা হিসাবে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে পারব কি না, সেটাই ভেবে এসেছি বরাবর। তা হলে ‘জুলফিকার’, ‘উত্তরণ’-এর মতো কাজ করতাম না। সব কাজ হয়তো দর্শকের বাহবা পায়নি। কিন্তু আমি বরাবর চেষ্টা করেছি। মুনির আলমের চরিত্র পড়ে প্রথমেই মনে হয়েছিল এটা আমায় একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। ২০১৯ অবধি আদ্যোপান্ত বাণিজ্যিক মশলাদার ছবিতে অভিনয় করেছি। উপভোগও করেছি। শত চেষ্টার করেও ২০২০-র পর থেকে আর লাভ হচ্ছিল না। কেরিয়ারে একটা অবনতি লক্ষ্য করেছিলাম।
প্রশ্ন: সে সময় আপনাকে ‘ফ্লপ’ হিরোও বলা হয়েছে...
অঙ্কুশ: হ্যাঁ, বলা হত। অনেকে বলতেন জায়গা হারিয়ে ফেলছে। কত ছবিই তো চলেনি। এত সমালোচনার পড়েও বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। সিনেমা না-ও চলতে পারে, কিন্তু নিজের অভিনয়ের মান যাতে না পড়ে যায়, সে দিকে বরাবর লক্ষ্য রেখেছি। তার মাঝেই আমার প্রাপ্তি হল মুনির আলম। এটা একটা আশীর্বাদের মতো।
প্রশ্ন: তা হলে অঙ্কুশ কোথাও গেলে কি এখন থেকে বাজবে ‘নায়ক নেহি খলনায়ক হুঁ ম্যায়’?
অঙ্কুশ: নেতিবাচক চরিত্রে বরাবরই অভিনয় করার ইচ্ছা ছিল। এ ক্ষেত্রে শাহরুখ খানের ‘আনজ়াম’, ‘বাজিগর’ আমার অনুপ্রেরণা। হৃত্বিক রোশন, আমির খানের মতো অভিনেতাদের উদাহরণও রয়েছে। ফলে ধূসর চরিত্র বহু দিন ধরেই টানছিল আমায়। এত দিন ধরে যেটা চাইছিলাম সেটাই আমায় দিয়েছেন নন্দিতাদি (রায়), শিবুদা (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়)। ‘মুনির’কে পেয়ে আমি তৃপ্ত।
প্রশ্ন: এক ছবিতে দুই নায়িকা থাকলে তাঁদের রেষারেষি, প্রতিযোগিতা সব সময় আলোচনা হয়। নায়কদের মধ্যে কি সেই প্রতিযোগিতা, রেষারেষি থাকে না?
অঙ্কুশ: এগুলো দুটো কোনও মানুষের ব্যক্তিত্বের উপর নির্ভর করে। এই ছবিতে আমি আর আবীরদা (চট্টোপাধ্যায়) একসঙ্গে অভিনয় করেছি। আমরা ‘কানামাছি’ ছবিতেও একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। আমাদের দু’জনের চাহিদা খুব কম। প্রোডাকশনের সুবিধার্থে আমরা একটা ভ্যানিটি ভ্যানও ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারি। মূলত নায়িকাদের মধ্যে এই সব খুঁটিনাটি নিয়ে কত সমস্যাই তো সামলাতে হয়। আমরা তো মাটিতে বসে ভাতও খেতে পারব। তুলোয় মুড়িয়ে রাখতে হবে, সব সময় নজর দিতে হবে— এই ধরনের কোনও চাহিদা নেই আমাদের।
পোস্টার লঞ্চ অনুষ্ঠানে টিম ‘রক্তবীজ ২’ ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: একই ছবিতে আবীর চট্টোপাধ্যায়, মিমি চক্রবর্তী, কৌশানী মুখোপাধ্যায়,নুসরত জাহান আর আপনি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকলেও শোনা যায় নুসরতের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয়...
অঙ্কুশ: না, নুসরতের সঙ্গে এক ফ্রেমে আমায় সে ভাবে দেখা যাবে না। একসঙ্গে আমাদের শুটিং-ও হয়নি। তবে আপাতদৃষ্টিতে দেখতে গেলে এটা একটা প্যাকেজ। পুজোয় ঠিক যেমন ছবি দরকার। সব রকমের উপাদান আছে। সেটাই এই ছবির ইউএসপি।
প্রশ্ন: পুজোয় দেবের ছবিও মুক্তি পাবে। দেখতে যাবেন?
অঙ্কুশ: আমার তো সব ছবি দেখারই ইচ্ছা আছে। পুজোর সময় অনেকগুলো ছবি মুক্তি পাচ্ছে। প্রতিটি ছবির বিশেষ প্রদর্শনীতে আমন্ত্রণতো থাকে। সব ছবিই দেখা হয়ে যাবে আমার।
প্রশ্ন: দেব, শ্রাবন্তীদের সঙ্গে পুজোর ছবি মুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে?
অঙ্কুশ: পুজোর আগে আমরা সবাই নিজের ছবির প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। তাই সে ভাবে দেখা হওয়ার সময় নেই। আর তা ছাড়া দেখা হলেও কাজ নিয়ে খুব কম কথা হয়। তার চেয়ে বেশি নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন, অন্য বিষয় নিয়ে বেশি আলোচনা হয়।
প্রশ্ন: আপনার ছোটবেলায় কি পুজোর ছবি দেখার চল ছিল?
অঙ্কুশ: সত্যি বলতে আমি ছোটবেলায় মানে নায়ক হওয়ার আগে পুজোর সময় ছবি দেখার থেকে মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতেই বেশি ভালবাসতাম। বন্ধুদের সঙ্গে বেরোতাম। খুব বেশি সিনেমা তখন দেখিনি।
প্রশ্ন: ঐন্দ্রিলা কী বললেন নতুন ছবি নিয়ে?
অঙ্কুশ: ছবিটা দেখার জন্য ও খুব উৎসাহী। অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রশ্ন:প্রযোজক অঙ্কুশ আগামী দিনে কী ভাবছে? সফল হতে গেলে নিজের মধ্যে কী কী পরিবর্তন আনতে হবে?
অঙ্কুশ: ‘মির্জা’ করেছিলাম। বাণিজ্যিক মশলাদার ছবি তৈরি করারই ইচ্ছা রয়েছে। আমাদের সংস্থার প্রতিটি সদস্য খুবই পরিশ্রমী। তবে নতুন প্রযোজক হিসাবে আমার দক্ষ সহযোগীর প্রয়োজন। যাতে আরও সফল ভাবে ছবি তৈরি করতে পারি।