Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘বাঙালি তিতিবিরক্ত না হওয়া অবধি কি ডিটেকটিভ ছবির ঢল চলতেই থাকবে?’

তাঁর মতে এখনকার পরিচালকেরা সেফ জ়োন থেকে বেরোতে চান না। কিন্তু দেব চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।

দেব

দেব

পারমিতা সাহা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৬
Share: Save:

প্র: দাড়িতে পাক ধরেছে দেখছি... চাপের জন্য?

উ: চাপ তো আছেই। আসলে প্রশ্নটা হচ্ছে আপনি কী চান? বছরে তিনটে করে ‘পাগলু’, ‘রংবাজ’-এর মতো ছবি আসত। জীবনে চাপ থাকত না। বাঁধাধরা দর্শক। কোথায় কী হচ্ছে, বাংলা কতটা পিছিয়ে... সে সব ভাবার দরকার নেই। কিন্তু আমরা যারা এগিয়ে আছি, তারা যদি রিস্ক না নিই, তা হলে নেবে কারা? কাউকে তো ভাবতেই হবে।

প্র: পুজো রিলিজ় নিয়ে আপনার সঙ্গে জিতের সমস্যা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত জিতের ছবিটি আসছে না। এই বিবাদের ফল কী হল?

উ: ‘তোরটা তুই দ্যাখ, আমারটা আমি দেখে নেব,’ এই মানসিকতায় চলেই তো ইন্ডাস্ট্রির এমন অবস্থা। তিন বছর আগে এমনটা ছিল না। নিজেকে ভুলে ইন্ডাস্ট্রিকে নিয়ে না ভাবলে এগোনো যাবে না। পুজোয় বাংলা ছবি যাতে হল পায়, তার জন্য দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করেছি। ভগবানের দয়ায় যেটুকু যোগাযোগ আছে, তাতে কাউকে একটা ফোন বা ই-মেল করলে আমার কাজটা হয়ে যাবে। কিন্তু একার জন্য করে কী হবে? একা কেউ রাজা হতে পারে না!

প্র: এ বার পুজোয় একসঙ্গে চারটে বাংলা ছবি মুক্তি পাচ্ছে। আপনার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কোন ছবি?

উ: দেব নিজেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। কারণ আমি যে ছবিগুলো করি, সেগুলো সম্পূর্ণ আলাদা। বাকি তিনটে ছবি ‘গুমনামী’, ‘মিতিন মাসি’, ‘সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ’ যদি দেখেন, গল্পগুলো সকলের জানা। সকলকে সম্মান জানিয়েই বলছি, ‘পাসওয়র্ড’ এমন একটা বিষয়, যা করতে সাহস লাগে এবং তা করা কঠিন। লুক অ্যান্ড ফিল দিয়ে হিন্দি ছবি আমাদের মাত করে দিচ্ছে। তার পর গল্পটা দেখছি। সেখান থেকেই মনে হয়েছে, আর কত দিন শুধুই গোয়েন্দা গল্প দেখব? বছরে দশটা করে এ ধরনের ছবি হচ্ছে! বাঙালি তিতিবিরক্ত না হওয়া অবধি কি ডিটেকটিভ ছবির ঢল চলতে থাকবে? এখনকার পরিচালকেরা সেফ জ়োন থেকে বেরোতে চান না। বলিউড লেভেলে যেতে গেলে কমফর্ট জ়োন থেকে বেরিয়ে বিষয় বাছতে হবে, যার ন্যাশনাল অ্যাপিল আছে।

প্র: আপনি লুক অ্যান্ড ফিলের কথা বলছেন, সে দিক থেকে তো ‘গুমনামী’ যথেষ্ট প্রশংসিত...

উ: সেটা তো দর্শক বলবেন। আমার ভাল লাগার উপরে ছবির ভাল-খারাপ নির্ভর করে না। আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি। নতুন বিষয় নিয়ে ছবি করছি। সুভাষচন্দ্র বসুকে তো বিক্রি করছি না। এটাও তো বলতে পারি, প্রোমোশনের জন্য এখন সবাই সুভাষচন্দ্র বসুর স্ট্যাচুর সামনে ছবি তুলছে। সিনেমাটা রিলিজ় করার পরে দেখব, ক’জন সেলেব্রিটি গিয়ে ছবি তোলে!

প্র: ছবিটা করতে গিয়ে তো সাইবার ক্রাইম বিষয়ে নানা কিছু জেনেছেন। এত কিছুর মধ্যে নিজের কোন জিনিসটা ‘পাসওয়র্ড প্রোটেক্টেড’ করতে চাইবেন?

উ: অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ডাউনলোড করা বন্ধ করে দিয়েছি। ফেসবুক, টুইটারের মতো অ্যাপ ছাড়াও শপিংয়ের জন্য কয়েকটা অ্যাপ রাখি। খুব প্রয়োজন না হলে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করি না। কয়েক মাস অন্তর পাসওয়র্ড বদলাই।

প্র: আপনার পাসওয়র্ড নাকি রুক্মিণী জানেন?

উ: যারা দীর্ঘদিন একটা সম্পর্কের মধ্যে আছে, তারা সবাই হয়তো পরস্পরের পাসওয়র্ডটা জানে। সেটা অস্বীকার করে লাভ নেই।

প্র: শোনা যাচ্ছে, আপনাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। রুক্মিণীর ওভার পজ়েসিভনেসের জন্য আপনার দমবন্ধকর অবস্থা...

উ: দেখুন, বাজারের অবস্থা খুব খারাপ। সেই সব নিয়ে ভাবাটা দরকার। দেব-রুক্মিণী কতটা ভাল বা খারাপ আছে, আমাদের উপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত। সেটা সময় বলবে।

প্র: ইদানীং আপনাকে ইন্ডাস্ট্রির কারও বিয়ে বা গেট টুগেদারেও দেখা যায় না। কেন বলুন তো?

উ: সেটা আজ নয়, গত চার বছর ধরে যাই না। আমি অনেক রকম কাজে ব্যস্ত। তার ফাঁকে যেটুকু সময় পাই, সেটা আমার পরিবারের জন্য।

প্র: নিজের প্রোডাকশন হাউসেও তো দু’জন পরিচালক ছাড়া কারও সঙ্গে এখনও অবধি কাজ করেননি!

উ: আমি কমলেশ্বরদা (মুখোপাধ্যায়) ও অনিকেতদার (চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে কাজ করতে কমফর্টেবল। কার সঙ্গে কাজ করব, তা আমি ঠিক করব।

প্র: ছবির কনটেন্ট এবং ‘কিডন্যাপ’ নিয়ে সুরিন্দর ফিল্মসের কর্ণধার নিসপাল সিংহের সঙ্গে আপনার বেশ ঝামেলা হয়েছে বলেও খবর...

উ: দেখুন, আমি খুব ফ্লেক্সিবল এবং স্ট্রেট ফরওয়ার্ড। এসভিএফের সঙ্গেও আমার কোনও দিন ঝামেলা হয়নি। আর রানের (নিসপাল) সঙ্গে আমার আজকের সম্পর্ক নয়। কাজ করতে গিয়ে মতপার্থক্য হতেই পারে। তার ফলে যদি একটা ভাল ছবি তৈরি হয়, তার চেয়ে ভাল কী হতে পারে?

প্র: আপনি একের পর এক অন্য রকম চেষ্টা করছেন ঠিকই। কিন্তু দর্শক নিচ্ছেন কতটা?

উ: এ বার পুজোয় আমার প্রযোজনায় পাঁচ নম্বর ছবি মুক্তি পাচ্ছে। এটাই তো সবচেয়ে বড় উদাহরণ, দর্শক নিচ্ছেন কি না। আমি তো বাড়ি বিক্রি করে ছবি বানাচ্ছি না। যে টাকা নিয়ে এসেছিলাম, তাতে ছ’নম্বর ছবির কাজ চলছে। তিনটে ছবি পাইপলাইনে রয়েছে।

প্র: এ বার বলুন তো কর্ণ জোহরের অফিস থেকে ফোন এসেছিল কেন?

উ: ওরা উজবেকিস্তানে শুটিং করতে চায়। শুটিংয়ের খুঁটিনাটি জানতে ফোন করেছিল।

মেকআপ: অরুণ; হেয়ার: মাজিদ; স্টাইলিং‌: নেহা গাঁধী; পোশাক: অভিষেক দত্ত; লোকেশন: রাজকুটির;
ফুড পার্টনার: বেঙ্গল লাউঞ্জ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tollywood Detective film Bengali Cinema
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE