Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
tollywood actor

সোহম আর শ্রাবন্তী তোতলামি করলেন! কেন?

সবেমাত্র ক্লাস ওয়ান। আর তাতেই সাফ জানানো, ‘‘ধুর! পড়াশোনা করতে আমার একটুও ভাল লাগে না।’’ ‘জামাই রাজা’, ‘রূপকথা’, ‘ওম নমঃ শিবায়’ধারাবাহিকের পরিচিত মুখ।

‘গুগলি’ ছবির অভিনেতা সৌম্যদীপ্ত সাহার সঙ্গে তার পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব ছবি।

‘গুগলি’ ছবির অভিনেতা সৌম্যদীপ্ত সাহার সঙ্গে তার পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব ছবি।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯ ১৬:২৬
Share: Save:

সিঁড়ি দিয়ে লাফিয়ে নামছে সে। কিন্তু শরীরটা সিঁড়ির দিকে।

সাক্ষাৎকারের জন্য বসতে বললে বসছে বিবেকানন্দ পার্কের লাগোয়া অওধের সুসজ্জিত রেলিংয়ের ওপর। একটু আগেই সেখানকার বিরিয়ানি খেয়ে মন খুশ তার।

প্রশ্ন করলে জোরে জোরে আওয়াজ করে স্ট্র দিয়ে জলজিরা খাচ্ছে। পরনে টকটকে লাল শার্ট প্যান্ট, নীল ফ্রেমের চশমা। ধবধবে সাদা মুখের লালচে গালের গুগলি! ইদানিং সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল মুখ! সৌম্যদীপ্ত সাহা।

সবেমাত্র ক্লাস ওয়ান। আর তাতেই সাফ জানানো, ‘‘ধুর! পড়াশোনা করতে আমার একটুও ভাল লাগে না।’’ ‘জামাই রাজা’, ‘রূপকথা’, ‘ওম নমঃ শিবায়’ধারাবাহিকের পরিচিত মুখ।

আরও পড়ুন: প্রদর্শন বন্ধ করা যাবে না, ‘ভবিষ্যতের ভূত’ নিয়ে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

গোল গোল চোখ পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। ‘‘তুমি আমার ইন্টারভিউ নিচ্ছ?’’

বলেই স্ট্র দিয়ে ঠান্ডা জলজিরার গ্লাসে মুখ নামায় সৌম্যদীপ্ত।

পাশে বসা তার ‘অভিমন্যুদা’, অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়, সুরিন্দর ফিল্মস্ প্রযোজিত ‘গুগলি’ ছবির পরিচালক।

শুরু হয় আড্ডা।

‘পিয়া রে’, ‘নুরজাহান’-এর মতো মেনস্ট্রিম ছবি ছেড়ে ‘গুগলি’। এটা কী ধরনের গুগলি?

অভিমন্যু: আসলে আমি বরাবর ‘গুগলি’-র মতো কনটেন্ট ড্রিভেন ছবি করতে চেয়েছিলাম।

‘নুরজাহান’ছবিটা তেমন চলেনি। সেই কারণে কি ধারা বদল?

অভিমন্যু: নাহ। আমি প্রায় আট বছর রাজ চক্রবর্তীর মতো পরিচালককে অ্যাসিস্ট করেছি। সেই সুবাদেই হার্ড কোর কমার্শিয়াল ছবির দিকে একটা ঝোঁক তৈরি হয়েছিল। সেখান থেকেই ‘নুরজাহান’,‘পিয়া রে’-র মতো ছবি করা।

এই ধারার ছবি এখন তেমন চলছে না কেন?

এর প্রধান কারণ সিঙ্গল স্ক্রিন। দেখুন আগে একটা সিগারেট বিক্রি করা মানুষ সিঙ্গল স্ক্রিনে বিদেশে নাচ, অ্যাকশনের ছবি দেখতে ভালবাসত। এখন উদাহরণ হিসেবে যদি ধরি কর্পোরেট দুনিয়ার মানুষ মাল্টিপ্লেক্সে যাচ্ছে। সে দুর্দশাগ্রস্ত নোংরা সিঙ্গল স্ক্রিনে ছবি দেখতে যাবে না। তো তারা মাল্টিপ্লেক্সে গিয়ে এখন গল্প খোঁজে। মারামারি দেখতে চায় না। সেই কারণে গল্প এখন ছবির মূল রসদ। সিঙ্গল স্ক্রিন থিয়েটারে সুপারস্টার ইমেজ চলতো। মাল্টিপ্লেক্সে সেটা সম্ভব নয়।

তাই যদি হয় তাহলে বলিউডে ‘সিম্বা’-র মতো ছবি বাজার তৈরি করে কী করে? এই ছবি তো অ্যাকশন নির্ভর।

অভিমন্যু: বলিউডের চেহারা আলাদা। সেখানে ‘বাধাই হো’চলে, ‘উরি’চলে, আবার ‘সিম্বা’ও চলে। আমরা পারছি না।

এই গম্ভীর আলোচনার মাঝে হঠাৎ ফোড়ন কাটে গুগলি, ‘‘জানো, আমি রোজ বিরিয়ানি খেতে চাই। এই তো আজ যেমন অওধে খেলাম।’’

আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ ‘কলকাতায় কোহিনুর’: দুই ফেলুদার টক্করটা বেশ ভাল লাগে

তুমি মাটন না চিকেন, কোন বিরিয়ানি পছন্দ কর?

সৌম্যদীপ্ত: আরে অবশ্যই মাটন। এরা জানে না বোধহয়। আমাকে আজ চিকেন দিল। চিকেনটাও ভাল, তবে রোজ পেলে খুশি হতাম।

সিনেমায় কাজ করে খুশি তুমি?

সৌম্যদীপ্ত:হ্যাঁ। তবে আমি আগে দু’-তিনটে সিরিয়ালে কাজ করেছি। তাই অভিমন্যুদা অ্যাকশন বললেই অভিনয় করে দিতাম। তবে ও খুব জ্বালিয়েছে। আবার মজাদার ঘটনাও হয়েছে।

মজাদার ঘটনা কী?

সৌম্যদীপ্ত: শুটিংয়ের ফাঁকে আমায় পার্কে নিয়ে যেত। আমি খেলতাম। খুব আনন্দ পেতাম। সিনেমায় ভুটুকে খুব ভাল লেগেছে আমার। বাহ বাহ! ওর কত হামি। আমি ঠিক করেছি আমার বউকে সব হামি দিয়ে দেবো।

তোমার বউ আছে?

সৌম্যদীপ্ত: আরে এখন নেই। কোনও না কোনও দিন তো হবে, না কি?

এ ছবিতে তোমার বাবা-মাকে পছন্দ হয়েছে?

সৌম্যদীপ্ত: উফ্! বাবার কথা আর বোলো না। সারাক্ষণ মারপিট করত। আর আমার মা খুব ভাল, সব কিছু থেকে বাঁচিয়ে দিত। বাবা যা করেছে!

আরও পড়ুন: ‘দোহার’-এর কর্মশালার তৃতীয় সিরিজ শুরু হচ্ছে, জানেন?

আবার সোহম আর শ্রাবন্তী জুটি। এ ছবিতে নতুন কী পাবে দর্শক?

অভিমন্যু: এ ছবির নায়ক আর নায়িকা তোতলামির দোষে দুষ্ট। এরকম একটা চ্যালেঞ্জিং চরিত্রই তো সোহম-শ্রাবন্তীকে আর পাঁচটা ছবির থেকে আলাদা করবে। এই ছবিতে শ্রাবন্তী আর সোহমের প্রেম অনেক পরিণত। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। তাঁদের বাচ্চা গুগলি। বিষয়টাই আলাদা। মানে কলেজে পড়া শ্রাবন্তী-সোহমের প্রেম নিয়ে এই ছবি নয়। আর যেটা বলছিলাম। এ ছবির নায়ক, নায়িকা সব কিছুই গল্প। এখন খেয়াল করলেই দেখবেন,‘নগরকীর্তন’আর ‘মুখার্জী দার বউ’,যে ছবি দুটো হলে খুব ভাল চলছে সেখানে স্টার নয়, অভিনেতাই আসল! এই ছবিতেও শ্রাবন্তী ও সোহম, দু’জন পাওয়ারফুল অভিনেতাকে পাব আমরা।

সৌম্যদীপ্ত: আচ্ছা, এখন গেম খেলা যায়? জানো তো, আমি গেম লোড করতে গিয়ে মায়ের অ্যাপে ওলা উবর সব উড়িয়ে দিয়েছি!

সব দিকে তোমার ছবি। তুমি সাক্ষাৎকার দিচ্ছ। বিরিয়ানি খাচ্ছ...তুমি কি স্টার?

সৌম্যদীপ্ত: কী যে বলো! স্টার তো তারা হয় যারা মরে যায়। এটাও জানো না? মরে গেলে স্টার হয়!

একটা গুগলি ছুড়ে উঠে পড়ে সৌম্যদীপ্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE