সাক্ষাৎকারের সঙ্গে তারকার ছবি যাওয়াটা মাস্ট। সেলেবরাও সেটা ভাল মতোই জানেন। যে কারণে অঙ্কিতা শুরুতেই আবদারের সুরে বলে উঠলেন, ‘‘প্লিজ আমার শাড়ি পরা ওই টিপিক্যাল ঘরোয়া লুকের কোনও ছবি ছাপবেন না। ওই ইমেজ থেকে বেরোতে চাই।’’
‘ইষ্টিকুটুম’-এর কমলিকা বলেই লোকে তাঁকে বেশি চেনেন। সেই কমলিকার গণ্ডি থেকেই বেরোতে চান অঙ্কিতা। যে কারণে বাংলা ধারাবাহিক করা ছেড়েছেন। বললেন, ‘‘ঠিক একই রকমের চরিত্রের প্রস্তাব পাচ্ছিলাম। দুশ্চিন্তা করতাম নিজের মনে। অনেক দিন একটানা কমলিকার চরিত্র করেছি। এ বার যদি তার থেকে না বেরোই, তা হলে অভিনেতা হিসেবে আমার কোনও উন্নতি হবে না।’’
একঘেয়েমি কাটাতে মুম্বই পা়ড়ি দিয়েছেন। তাঁকে সর্বভারতীয় একটি ধারাবাহিকে দেখাও যাবে খুব শিগগিরি। বেশ কিছু বাংলা ছবিতেও কাজ করেছেন। সেগুলি কৌস্তুভ রায়ের প্রযোজনা বলে অঙ্কিতা নিজেই মজা করে বললেন, ‘‘কৌস্তুভের ছবিতে আমার থাকাটা স্বাভাবিক ভাবেন অনেকে। আসলে আমাকে কাস্ট করার সময়েই কিন্তু সবচেয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করা হতো। কৌস্তুভই সকলের আগে প্রশ্ন তুলত, ‘অঙ্কিতা আদৌ পারবে তো!’ ব্যোমকেশের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। অঞ্জনদাই জোর করে আমাকে নিলেন।’’ অঞ্জনের প্রায় সব ক’টা ব্যোমকেশেই রয়েছেন অঙ্কিতা। ‘ব্যোমকেশ ও অগ্নিবাণ’-এ তিনি বার ডান্সারের চরিত্রে।
বাংলা ধারাবাহিকে আপত্তি থাকলেও সিনেমায় আপত্তি নেই অঙ্কিতার। তা হলে মুম্বই চলে গেলেন যে? ‘‘অনেক দিন এক জায়গায় কাজ করতে করতে মনে হয় আমি সব জানি, সব পারব। এটা কিন্তু অ্যারোগেন্স নয়। এই জিনিসটা থেকে নিজেকে বার করতে হতো। তার জন্যই একটা অচেনা জায়গা বেছে নিলাম,’’ বলছিলেন অঙ্কিতা।
ছোট থেকে অভিনেত্রী হতে চাওয়া অঙ্কিতার কাছে অচেনা জায়গা বেছে নেওয়াটা চ্যালেঞ্জের মতো। যেমন অভিনেত্রী হয়ে ওঠাও তাঁর কাছে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ ক্লাস ইলেভেন-টুয়েলভ পর্যন্ত কথা বলায় বেশ জড়তা ছিল অঙ্কিতার। তোতলাতেন। বললেন, ‘‘ছোটবেলায় যেমন সকলে জিজ্ঞেস করে, ব়ড় হয়ে কী হব। আমি কাউকে বলতে পারতাম না অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছের কথা। সকলেই তো সেটা শুনে হাসবে। যে কথা বলতে তোতলায়, সে আর কী করে অভিনয় করবে!’’ নিজের জেদেই অবশ্য সেই ত্রুটি সারিয়েছিলেন অঙ্কিতা।
স্টার চ্যানেল ভাওয়াল সন্ন্যাসীর গল্প নিয়ে এক মাসের সিরিজ তৈরি করছে। নাম ‘সন্ন্যাসী রাজা’। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন অঙ্কিতা। তাঁর অডিশন নিয়েছিলেন প্রকাশ ঝা-র মতো পরিচালক। অডিশন দিয়েছেন, এখন ওয়র্কশপও করছেন। হিন্দি ভাষার চর্চাও করছেন রীতিমতো। জানালেন, তাঁর চরিত্রের নাম জ্যোতির্ময়ী, ভাওয়াল সন্ন্যাসীর বোন। যদিও বাংলা ছবিটিতে এ রকম কোনও চরিত্র ছিল না।
কলকাতা থেকে মুম্বই অনেক অভিনেত্রীই যান। কিন্তু মাস খানেকের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে কাজ জোগাড় করে ফেলা মুখের কথা নয়। তবে অঙ্কিতার ক্ষেত্রে প্রস্তাবটা এসেছিল কলকাতা থেকেই। ‘সন্ন্যাসী রাজা’র অনেকটা শ্যুট কলকাতাতেই হবে। লাইন প্রোডিউসার এসকে মুভিজ। সেই সূত্রেই অডিশনের ডাক পান অঙ্কিতা। কিন্তু মুম্বইবাস কেমন লাগছে তাঁর? অঙ্কিতার কথায়, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে মুম্বই এসেছি। এখনও পর্যন্ত কাজ খোঁজার চেষ্টা করিনি সে ভাবে। শহরটা ভাল লাগছে কি না, লোকজন কেমন...বোঝার চেষ্টা করছিলাম। এই প্রথম বাড়ির বাইরে একা থাকছি। মুম্বইবাস আমার নিজেকে তৈরি করার একটা পর্ব বলতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy