Advertisement
E-Paper

পাকিস্তানে জন্ম, দেশভাগের যন্ত্রণার সাক্ষী! শরণার্থী শিবিরে ভাইকে হারিয়েছিলেন মনোজ কুমার?

ঘটনার পরে চিকিৎসকদের উপরে চটেছিলেন মনোজ। হাতে লাঠি নিয়ে হাসপাতালে যান। কয়েক জন চিকিৎসককে নাকি লাঠিপেটাও করেছিলেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১০:২৩
দেশভাগের যন্ত্রণার সাক্ষী মনোজ কুমার।

দেশভাগের যন্ত্রণার সাক্ষী মনোজ কুমার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

চলচ্চিত্রজগতে শোকের ছায়া। ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত অভিনেতা মনোজ কুমার। দেশপ্রেম নিয়ে একের পর এক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তাই বর্তমানের অক্ষয় কুমারও এক সময়ে ‘নতুন মনোজ কুমার‍’ তকমা পেয়েছিলেন। দেশপ্রেমের নেপথ্যে ছিল মনোজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। স্বচক্ষে দেখেছিলেন দেশভাগ। জীবনে সরাসরি তার প্রভাবও ছিল। সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতা তুলেও ধরেছিলেন তিনি।

পাকিস্তানের আব্বোতাবাদে জন্ম মনোজ কুমারের। কিন্তু ১৯৪৭ সালে নিজেদের ভিটে ছেড়ে ভারতে চলে আসতে হয়েছিল প্রয়াত অভিনেতাকে। সঙ্গে ছিল তাঁর পরিবার। বেশ কিছু দিন কাটাতে হয়েছিল শরণার্থীদের শিবিরে। পরিস্থিতি সেই সময় বেশ অশান্ত। এর মধ্যেই এক সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন মনোজের মা। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়েন মা ও সন্তান দুজনই। দিল্লির এক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁদের। কিন্তু সেই শিশুকে বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনা নিজেই পরে জানিয়েছিলেন মনোজ।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আমি সবচেয়ে বড় সন্তান। আমার পরে ললিতা নামে এক বোন রয়েছে। কিন্তু দেশভাগের সময়ে আমার মা এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। নাম রাখা হয়েছিল কুকু। মা আর কুকু দু’জনেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আমরা তখন শরণার্থী শিবিরে। এক দিকে তখন হিংসা চলছে। তার মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মাকে। মনে আছে, সাইরেন বাজলেই চিকিৎসক ও নার্সরা লুকিয়ে পড়তেন। এমনই একদিন মা চিৎকার করে চিকিৎসকদের ডাকছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা তখন লুকিয়ে। তার পরে মা-ই চিৎকার করে বলেন, ‘আমার কুকু আর নেই’।”

এই ঘটনার পরে চিকিৎসকদের উপরে চটেছিলেন মনোজ। হাতে লাঠি নিয়ে হাসপাতালে যান। কয়েক জন চিকিৎসককে নাকি লাঠিপেটাও করেছিলেন তিনি। মনোজের বাবা এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। পরের দিন দুই মাসের সেই শিশুর শেষকৃত্য হয়েছিল। মনোজ বলেছিলেন, “ওই দুই মাসের বাচ্চাটাকে যমুনা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিলাম। ও ভেসে চলে যাচ্ছিল, আমার মনে হচ্ছিল, যেন আমিই ডুবে যাচ্ছি।”

এই দিনই মনোজকে দিয়ে একটি প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিলেন তাঁর বাবা। অভিনেতা বলেছিলেন, “বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আর কোনও দিন হিংসায় প্ররোচিত হব না। এর পরেও বহু বার রাগ হয়েছে। কিন্তু বাবাকে করা প্রতিজ্ঞা মনে থেকে গিয়েছিল।”

মুম্বইয়ে এসে নিজের স্থায়ী জায়গা তৈরি করে নিয়েছিলেন মনোজ। তবে দেশভাগের সময়ে শরণার্থী শিবিরে থাকার অভিজ্ঞতা সারা জীবন বয়ে বেড়িয়েছিলেন তিনি। ছবিতেও তাই দেশের প্রতি তাঁর প্রেম প্রকট হয়ে উঠত। ‘পুরব পশ্চিম’, ‘রোটি কাপড়া অউর মকান’, ‘ক্রান্তি’র মতো ছবিতে অভিনয় করায় তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল দেশপ্রেমিকের পরিচয়। তাই তিনি ‘ভারত কুমার’ উপাধিতে সম্মানিতও হয়েছেন বার বার।

Manoj Kumar Partition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy