নতুন ইতিহাস গড়তে চলেছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দেবী চৌধুরাণী’। এ বারের পুজোয়, এই উপন্যাস বড়পর্দায় আসছে। তার আগে সোমবার জলপাইগুড়ির এবিপিসি ময়দান থেকে ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরাণী মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খবর, ২০১৮ সালে মন্দিরটি আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। ২০২২ সালে নতুন করে মন্দিরের সংস্কার করা হয়। সেই সময় মন্দিরে দেবী দুর্গার পাশে দেবী চৌধুরাণী ও ভবানী পাঠকের মূর্তি বসানো হয়। সেই সময়ের সংস্কার করা মন্দিরটিও উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও জানা গিয়েছে, এর পরেও মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছিল। সেই কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ফের সোমবার মন্দিরের উদ্বোধন হল।
আনন্দবাজার ডট কম মন্দিরের সৌন্দর্যায়নে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলতেই প্রসেনজিৎ বললেন, “শুনেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। এর থেকে ভাল খবর আর কী হতে পারে?” খবর জেনে গর্ব অনুভব করছেন ছবির নায়িকা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। তিনি ছবির পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রের পর্দার ‘দেবী চৌধুরাণী’। জানিয়েছেন, শীঘ্রই মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন। একই ভাবে উচ্ছ্বসিত ছবির পরিচালকও। তাঁর কথায়, “উত্তরবঙ্গে এ রকম একটি মন্দির আছে আমি জানতাম। নিজে সেই মন্দির গিয়ে দেখে এসেছি। ছবিমুক্তির পর হয়তো পুজো দিতে যাব আমরা। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ দেখে খুব ভাল লাগছে!”
আরও পড়ুন:
তখন ইংরেজ আমল। ব্রিটিশশক্তির অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে সংঘবদ্ধ হচ্ছেন দেশের মানুষ। বিদ্রোহের প্রথম আগুন ছড়িয়েছিল সন্ন্যাসী বিদ্রোহ। ভবানী পাঠকের শিক্ষায়, নেতৃত্বে, তৎকালীন শাসকশক্তির বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন ‘দেবী চৌধুরাণী’। মুখ্যমন্ত্রীর মন্দির উদ্বোধন প্রসঙ্গে সে কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন পর্দার ‘ভবানী পাঠক’ প্রসেনজিৎ। নেপথ্যে থেকে এক পুরুষের নারীকে এগিয়ে দেওয়া, স্বাধীনতার পাশাপাশি নারীশক্তির জয়গান— ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির বিষয়। প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, এই ছবি প্রত্যেক বাড়িতে নারীশক্তির আবাহনের কথা পৌঁছে দেবে। “ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখলে ইতিহাস যে সামনে এসে দাঁড়ায়, দেবী চৌধুরাণী মন্দিরের পুনরুদ্বোধন সে দিকেই ইঙ্গিত করল”, বলছেন প্রসেনজিৎ।
নতুন সাজে দেবী চৌধুরাণী মন্দির। ছবি: নয়ন চক্রবর্তী।
প্রায় একই কথা নায়িকারও। শ্রাবন্তী বললেন, “আমাদেরও এই মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার কথা। এই ঘটনা জেনে ভারতবাসী হিসাবে গর্ব অনুভব করছি।”
ইতিহাস অনুযায়ী, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ভেলাকোপায় দেবী চৌধুরাণী মন্দির রয়েছে। একটি প্রাঙ্গণ ঘিরে মন্দিরের অবস্থান। যেখানে দেবী দুর্গার পাশাপাশি দেবী চৌধুরাণী এবং ভবানী পাঠকের মূর্তি রয়েছে। পরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মন্দিরটি জীর্ণ হয়ে পড়ে। সরকারের পক্ষ থেকে এই মন্দিরটিরই নতুন করে সৌন্দর্যায়ন হল। এই প্রসঙ্গে প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, দুর্গাপুরে ভবানী পাঠকের নামেও একটি মন্দির রয়েছে। সময়ের পলি পড়েছে তার গায়েও। মন্দিরটি ঢাকা পড়েছে জঙ্গলে। শীঘ্র সংস্কারের প্রয়োজন। প্রসেনজিতের ইচ্ছা, তিনি নিজ দায়িত্বে সেই মন্দিরের সংস্কার করবেন।