Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Baaghi 3

অ্যাকশনই সার!

অ্যাকশন এবং নাচের দৃশ্যগুলো মাখনে ছুরি চালানোর মতো মসৃণ ভাবে উতরে দিয়েছেন টাইগার শ্রফ।

সায়নী ঘটক
শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

বাগী থ্রি
পরিচালনা: আহমেদ খান
অভিনয়: টাইগার, শ্রদ্ধা, রীতেশ, অঙ্কিতা, বিজয়, জয়দীপ
৪.৫/১০

অ্যাকশন এবং শুধু মাত্র অ্যাকশনের জন্যই দেখা যায় এই ছবি। স্পষ্টত আর কিচ্ছু পাওয়ার নেই ‘বাগী থ্রি’র থেকে। অ্যাকশন এবং নাচের দৃশ্যগুলো মাখনে ছুরি চালানোর মতো মসৃণ ভাবে উতরে দিয়েছেন টাইগার শ্রফ। করোনা আতঙ্কে মাস্ক পরে হলে আসা ভক্তরা সিটিও দিয়েছেন সে সব দৃশ্যে। আড়াই ঘণ্টায় নিছক বিনোদনের প্রত্যাশাই ছিল ‘বাগী থ্রি’র কাছ থেকে। ছবি শেষ হওয়ার পরে বোঝা গেল, সময় এবং প্রত্যাশা দুই-ই খানিক বেশি হয়ে গিয়েছিল।

আগের ছবিতে (‘বাগী টু’) রনি, অর্থাৎ টাইগার শ্রফের চরিত্রটি ছিল প্যারা-মিলিটারির ক্যাপ্টেনের। এ ছবিতে ভাইকে (রীতেশ দেশমুখ) দুষ্টু লোকদের থেকে বাঁচানো ছাড়া আর কোনও কাজই নেই রনির। ছবির পুরো গল্প শুধু মাত্র এই সুতোটুকুর উপরে দাঁড়িয়ে। সঙ্গে ভিলেনদের কারবার দেখানোর জন্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে হিউম্যান ট্র্যাফিকিং আর আইএসআইএস ধাঁচের আতঙ্কবাদ। তেলুগু ছবি ‘ভেট্টাই’-এর এই রিমেক বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরনির্ভরশীল। গল্প থেকে গান, সবটাই প্রায় ধার করা। মূল ছবির প্রেক্ষাপট ছিল দক্ষিণ ভারত, যা সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার প্রোডাকশন নিয়ে গিয়েছে সিরিয়ায়। ক্লাইম্যাক্সে ওয়ান-ম্যান-আর্মির উপরে চপার, ট্যাঙ্ক সব নামিয়ে দিয়েও শেষরক্ষা হল না। অথচ যুক্তিহীন-দায়সারা কাহিনি আর তার উপরে বোনা নড়বড়ে চিত্রনাট্য না হলে, ‘বাগী থ্রি’ হতে পারত একটি উপভোগ্য অ্যাকশন-ড্রামা।

কিন্তু হল না। ছোট থেকেই ছোট ভাই হয়ে দাদাকে বাঁচানোর দায়িত্ব রনির। তাদের বাবা (জ্যাকি শ্রফ) মৃত্যুশয্যায় বলে যায়, ভিতু, নরম-সরম বিক্রমের আজীবন সুরক্ষার দায়িত্ব রনিরই। সেই কথাকে বেদবাক্য মেনে আগরার রাস্তা থেকে সিরিয়ার ঊষর প্রান্তরেও দাদার হয়ে লড়ে যায় রনি। বাবার ছেড়ে যাওয়া খাকি উর্দি তুলে দেয় দাদার গায়ে, আসল কাজটা নিজে করে নেপথ্য থেকে। দুই ভাইয়ের সঙ্গিনী হিসেবে গল্পে চলে আসে দুই বোন, সিয়া (শ্রদ্ধা কপূর) আর রুচি (অঙ্কিতা লোখন্ডে)। শুধু অ্যাকশনে মন দিতে গিয়ে নির্মাতারা এই দু’টি চরিত্রেও বিন্দুমাত্র মন দেননি। তাই সারা ছবিতে নায়ক-নায়িকার রোম্যান্সও জমেনি। টাইগারের জন্য অবশ্য তা শাপে বর, কারণ ধুন্ধুমার অ্যাকশন কিংবা নাচে তিনি যতটাই সাবলীল, ততটাই অসহায় আবেগের দৃশ্যে। ভিলেনের চরিত্রে জয়দীপ অহলাওয়ত আর পাকিস্তানি দোস্তের ভূমিকায় বিজয় বর্মার মতো প্রতিভাকেও যেন অপচয় করা হয়েছে। তবে প্রথমার্ধে রীতেশ দেশমুখ, সতীশ কৌশিকের কমিক টাইমিং কিছুটা রিলিফ আনে।

টাইগারের অ্যাকশনে সঙ্গত করেছে ক্যারিকেচারিস্ট গুন্ডার দল আর গ্রাফিক্স। তবে টানটান অ্যাকশনের মতোই ছবির দৈর্ঘ্য হতে পারত আরও মেদহীন। ছবির গানে বিশাল-শেখরের ‘দস বাহানে’ কিংবা বাপ্পি লাহিড়ীর ‘এক আঁখ মারু’র উপরে নির্বিকার নির্ভরতা অবাক করে। অবশ্য ছবির নিজস্ব গানগুলিও তথৈবচ! দিশা পাটনির আইটেমও বাঁচাতে পারেনি। যদিও ছবিকে বাঁচানোর কোনও মশলাই যে মিশল না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baaghi 3 Tiger Shroff Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE