Advertisement
E-Paper

মুভি রিভিউ: আদিত্যকে দেখতেই ছবিটা দেখা উচিত

হাল্কা প্রেম, কিছু বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ, আবার কিছু বেশ বস্তা পচা। কখনও কিছু নিম্নমানের হাস্যরস ব্যবহার আমাকে বেশ অবাক করেছে। যেহেতু ভদ্রলোক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।

সৌরভ পালধি

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৮:৩৩

সিনেমা: প্রজাপতি বিস্কুট

পরিচালনা: অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়

অভিনয়: আদিত্য, ইশা, সোনালী গুপ্ত, অপরাজিতা আঢ্য, রজতাভ দত্ত, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়

সকাল সকাল যখন টিকিট কাটতে দাঁড়ালাম কাউন্টারে তখন সিট লিস্টটা বেশ খালি দেখলাম প্রজাপতি বিস্কুটের। লোক চেপেছে তখন ককপিটে। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় আমাকে প্রজাপতি বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে তুলনামূলক খালি হলের দিকেই টান মারল সজোরে। এই টানে ছবিটির প্রতি আর একটু আমার টান তৈরি হলে আমি নিজেই বড্ড খুশি হতাম।

আরও পড়ুন, শরদিন্দুর হাত ধরে এ বার পুজোয় আবার হিট ব্যোমকেশ

হাল্কা প্রেম, কিছু বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ, আবার কিছু বেশ বস্তা পচা। কখনও কিছু নিম্নমানের হাস্যরস ব্যবহার আমাকে বেশ অবাক করেছে। যেহেতু ভদ্রলোক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। আর চিত্রনাট্যকার ভাল ওয়ান লাইনার লেখেন বলে তাঁর সব চরিত্র উচ্চমানের ওয়ান লাইনারে দর্শকের হাততালি কুড়োবে তা কী করে হতে পারে! যেটা ওপেন টি বায়োস্কোপ-এও চোখে পড়েছিল। এ ছবির গল্প শুরু থেকেই একপেশে। কার্তিকপুজোর বিরোধিতা, কমিউনিজম, নানান উল্লেখ শুরুতে একটু মন মানসিকতা, প্রগ্রেসিভ নামক ইন স্টেটমেন্টে একটা রোমাঞ্চ সৃষ্টি করলেও খানিক পরে সব শেষ। একটি সুখের সংসারে সব ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ালো তাদের সন্তান না হওয়া। ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’ দেখিয়েছিল এক জন মেয়ের, মা হওয়াটা মুখ্য হতে পারে না। এখানে বড় সেকেলে হল, যে জায়গাগুলো অনিন্দ্যদাই হয়তো পারত বাজিমাত করতে। শিবপ্রসাদ ও নন্দিতা রায়ের ছবির ঘরানা যাদের ভাল লাগে তাদের ভাল লাগতেও পারে। আমি অনিন্দ্যদার ভক্ত হিসেবে একটু হতাশ। রজতাভ দত্ত, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়দের মতো এত ভাল অভিনেতা পেয়েও সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হল না তাঁদের।

আরও পড়ুন, নিউটন: এই ছবি শেষ হয়, ফুরিয়ে যায় না

এই ছবির সব থেকে বড় প্রাপ্তি হল আদিত্য। অন্তর থেকে বলছি, ওকে নিয়ে পুরো রিভিউটা লেখা যেতে পারে। সূক্ষ্ম অভিনয়, ম্যাচিউরিটির চূড়ান্ত। আহা, মন ভরিয়ে দিল আদিত্য। বেশ ভাবাবে অনেক পরিচালককে এবং বাধ্য করবে তাকে কাস্ট করতে। আমাদের কিছু ভাল অভিনেতাকে ভাবাবে। ভাল অভিনেতাদের, নামকরাদের হয়তো নয়। আর এই কলকাতা লিগের মার মার কাট কাট সময়ে যখন সবাই বসে বাঙাল-ঘটির লড়াই দেখব বলে ঠিক, তখন একটা অসাধারণ ঘটি বাড়ি দেখলাম এই ছবিতে। আমি নিজে ঘটি বাড়ির ছেলে হয়ে বলতে পারি, এই নেমন্তন্ন করে সামনের লোকটিকে মাছের দাম শোনানোটা বড্ড বাস্তব।

অনেক কিছু নিয়ে কথা বলছি, কারণ আলাদা করে গল্প নিয়ে কিছু বলার মতো আমার মাথায় ঢোকেনি। ‘তোমাকে বুঝি না প্রিয়’ আর অনুপমের গলায় গানটা ছিল বলে ছবির সেকেন্ড হাফ আমাকে বসিয়ে রাখে। শান্তনু মৈত্র বেশ কানে ধরলো। প্রসেন-কে মনে থাকবে গানটার জন্য। চন্দ্রাণীকে শুনতে পাওয়া সবসময় একটা প্রাপ্তি। সেটা আবারও ঘটলো। কিছু মুখ্য অভিনেতা ও অভিনেত্রীর উল্লেখ হয়তো করলাম না, খুব একটা দরকারও মনে হল না। ছবিটি একবার দেখা উচিত আদিত্যর সঙ্গে পরিচয় করতে, কিছু দারুণ সংলাপ শুনতে, আর গানগুলো আর এক বার উপভোগ করতে। টেকনিক্যালি আমার খুব প্রাণবন্ত লেগেছে। সিনেমাটোগ্রাফি বা এডিটিং, দুটোই। একদম শেষ করার আগে দুটো সংলাপের কথা না বলে পারছি না। এক, স্বামী-স্ত্রী দুষ্টুমি করাকে ‘আশীর্বাদ’ করা বলা। দুই, দুম করে বাচ্চা হয়ে যাওয়াটা ‘স্লিপ অফ টাঙ্গ’ বলাটা। ও হ্যাঁ, প্রজাপতি বিস্কুট নাম হওয়ার কারণ হল, এই ছবির প্রেমিক-প্রেমিকা কোনও এক কালে প্রজাপতি বিস্কুট খেয়েছিল। এই বিষয়টা নিয়ে ওরা খুব ইমোশনাল। ব্যস, এটুকুই। গভীর কিছু আছে কি না দেখে আসুন।

Movie Review Film Review প্রজাপতি বিস্কুট Projapoti Biskut Anindya Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy