Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
entertainment

ঠাকরে: এক জন কমন ম্যানের হিরো হওয়ার গল্প

এ হেন বাল ঠাকরের জীবন নিয়েই  ছবি ‘ঠাকরে’। বায়োপিক বললে ঠিক বলা হয় না এ ছবিকে।

ঠাকরের ভূমিকায় নওয়াজউদ্দিন। ছবি- সংগৃহীত।

ঠাকরের ভূমিকায় নওয়াজউদ্দিন। ছবি- সংগৃহীত।

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:৪০
Share: Save:

বাল ঠাকরে নামের সঙ্গে জড়িয়ে এক রাশ রহস্য। নামটা উচ্চারণ করলেই ভেসে ওঠে একটা ইমেজ। কালো ফ্রেমের চশমা পরা গেরুয়া পোশাকের এক জন। সিংহাসনে বসে আছেন তিনি। গম্ভীর। মুম্বই তথা মহারাষ্ট্রের আত্মা বললেও ভুল হয় না তাঁকে।

এ হেন বাল ঠাকরের জীবন নিয়েই ছবি ‘ঠাকরে’। বায়োপিক বললে ঠিক বলা হয় না এ ছবিকে। আবার প্রোপাগান্ডা ছবিও নয় পুরোপুরি। কিছুটা জীবন আর কিছুটা কল্পনা মিশিয়ে ন্যারেটিভ বানানোর চেষ্টা করেছেন পরিচালক অভিজিৎ পানসে। এক জন সাধারণ মানুষের অসাধারণ হয়ে ওঠার আখ্যান বানিয়েছেন তিনি।

সামান্য এক কার্টুনিস্ট কী ভাবে হয়ে উঠলেন দেশনায়ক, তারই গল্প বলে ‘ঠাকরে’। স্বজাতির প্রতি দিনের অপমান আর কষ্ট ভাষা পায় তার আত্মায়। তিনি হয়ে ওঠেন জনপ্রতিনিধি। বলেন, সহনাগরিক মরাঠাদের না বলা যন্ত্রণার কথা। আত্মসম্মান অটুট রাখার কথা। হেরে না যাওয়ার কথা। নিজেদের অর্থনীতিকে আরও মজবুত করার কথা। অধিকারবোধ প্রখর করার কথা। রুখে দাঁড়ানো তার পর। আর ‘জয় মহারাষ্ট্র’ উচ্চারণের মাধ্যমে বদলে দেওয়া ঘর তথা দেশকে।

নওয়াজউদ্দিনের অভিনয় এই ছবির সম্পদ। ছবি- সংগৃহীত।

৬০-এর দশক থেকে ৮০-র দশক পর্যন্ত মোটামুটি সময়সীমা এ ছবির। বাল ঠাকরের পাশে তাই নানা সময়ে দেখা যায় ইন্দিরা গাঁধী, মোরারজি দেশাইদের। আসে ভয়াবহ দাঙ্গার কথাও। সমস্ত ঘটনার ভেতর দিয়ে কী ভাবে ক্রমশ বাল ঠাকরে ও মরাঠি জাতির উত্থান, তাই টেনে রাখে এ ছবিকে।

নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি-র অভিনয় যথারীতি অভিনব। তাঁর সিগনেচার স্টাইল নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই। বাল ঠাকরের বসা, কথা বলা, ম্যনারিজম যে সহজ প্রবণতায় তিনি ফুটিয়ে তোলেন তা বড় সাবলীল। তার স্ত্রীর ভূমিকায় অমৃতা রাও-এর অভিনয় ভাল লাগে। সেট ডিজাইন, কালার টোন, আবহ— কোথাও বাড়তি লাগে না। তাই কখনও বোর-ও লাগে না এ ছবি দেখতে।

আরও পড়ুন- ইতিহাস ছুঁয়ে থাকা এ বীরগাথা কঙ্গনারও

আরও পড়ুন- ছেলের বিয়েতে রাহুল-গডকড়ীকে আমন্ত্রণ রাজ ঠাকরের, বাদ শুধু মোদী!​

কোর্ট রুম ড্রামার মতোই এ ছবি শুরু হয় আদালতে। ঠাকরে সওয়াল করছেন যেন-বা। আর ফ্ল্যাশব্যাকে ভেসে উঠছে তার জীবনের নানা অধ্যায়। কখনও পরিবারের সঙ্গে তাঁর সংগঠনের বিশ্বাস ভাগ করে নিচ্ছেন তিনি, কখনও জেলে বসে নিজেকে ভাবছেন মহারাষ্ট্রের হিটলার। এ ভাবেই নানাবিধ মুহূর্ত ফিরে ফিরে আসছে ছবিতে। সূত্র একমাত্র আদালত।

তবে, বাল ঠাকরের সঙ্গে যতই মরাঠা উত্থানের গর্ব করা হোক, এ কথা আজ সকলেই জানেন, চোরা-ফ্যাসিবাদও কোথাও চলে আসে এই উচ্চারণের সঙ্গেই। ইতিহাসে সেই চরমপন্থার নানা প্রমাণও রয়েছে। তাই রাজনীতি নির্মাণের দিকটি সবটা সমর্থন না করা গেলেও, এক জন কমন ম্যানের হিরো হওয়ার গল্প হিসেবে এ ছবি দেখতে ভালই লাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nawazuddin thakre entertainment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE