মঞ্জু সিংহ
আশির দশকে টিভির পর্দা নড়ে উঠলেই কচিকাঁচারা জড়ো হয়ে যেত সামনে। 'খেল খিলোনে'র 'মঞ্জুদিদি'কে দেখলেই সবাই চুপ। টেলিভিশনের পর্দায় চোখ সেঁটে যাওয়া বাচ্চাদের সেই ফাঁকেই খাইয়ে নিতেন মায়েরা। দূরদর্শনে যতগুলো ছোটদের অনুষ্ঠান চলত তখন, সেগুলির ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মঞ্জু সিংহ। শুধু তাই নয়; প্রযোজনা, উদ্ভাবন থেকে শুরু করে অভিনয়, সব কিছুতেই সেই নারীর জুড়ি মেলা ভার। পরবর্তী টেলিভিশন প্রজন্ম কাজ শিখেছে তাঁকে দেখেই।
তবে বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মঞ্জু। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে তিনি প্রয়াত হন, জানিয়েছে পরিবার।
শেষ জীবনেও ছোটদের নিয়ে চিন্তাভাবনা করা কিংবা আদর্শ নিয়ে শিক্ষামূলক গল্প বলা থামাননি তিনি। 'মঞ্জুদিদি' থেকে 'মঞ্জুনানি' একটা দীর্ঘ পথ। তবে জনপ্রিয়তা এক চিলতেও কমেনি।
পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই অভিনয়ে জগতে প্রবেশ। অসামান্য অভিনয়ে নজর কেড়েছিলেন 'গোলমাল' ছবিতে। এর পর ১৯৮৪ সালে দূরদর্শনের প্রথম প্রযোজিত অনুষ্ঠান 'শো থিম'-এর মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন অভিনেত্রী।আঞ্চলিক ভাষার সাহিত্যমূলক ছোট গল্পের উপর ভিত্তি করে একাধিক অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করেন। সেইসঙ্গে মানবাধিকার, নারীর আইনি অধিকারের উপর একাধিক তথ্যচিত্র এবং ধারাবাহিক তাঁর সমাজসচেতনতার সাক্ষ্য বহন করে। সে নিয়ে বহু প্রশংসিত হয়েছেন 'মঞ্জুদিদি'।
মঞ্জু তাঁর দেশকে দেখতেন স্বপ্নের মতো, নিখুঁত। ভারতীয় স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর স্মরণে তাঁর অনবদ্য গবেষণামূলক ঐতিহাসিক ধারাবাহিক দর্শককে মুগ্ধ করেছিল। সেই অনুষ্ঠানের নাম 'স্বরাজ', যা হয়তো অনেকেই স্মৃতিমেদুর করে দেবে।
মঞ্জুর চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না টেলিভিশন এবং অভিনয় জগতের তারকারা। প্রথম দিকের সহকর্মী গীতিকার এবং সুরকার স্বানন্দ কিরকিরেও মঞ্জুর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy