—ফাইল চিত্র।
ভাবসাগরে ভাবের মানুষদের এক জন, জয়দেব কেঁদুলির প্রখ্যাত বাউল তারক খ্যাপা চলে গেলেন। বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।
গত মাস তিনেক ধরে প্রায় শয্যাশায়ী ছিলেন। গল ব্লাডারের টিউমার যখন ধরা পড়ল, তখন তা ছড়িয়ে গিয়েছিল লিভার, প্যাংক্রিয়াস পর্যন্ত। কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসকেরা এক প্রকার জবাব দিয়ে দেন। মঙ্গলবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তারক। জন্ম এবং সাধনস্থল জয়দেব কেঁদুলিতেই আজ তাঁর শেষকৃত্য। অসংখ্য ভক্ত, অনুরাগীদের সঙ্গে তিনি ছেড়ে গেলেন স্ত্রী, দুই ছেলে এবং দুই মেয়েকে।
দরাজ-সুকণ্ঠের অধিকারী তারক খ্যাপার সাংগিতীক বিস্তার বিশাল এলাকা জুড়ে। অসাধারণ গায়নভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অনবদ্য নাচও ছিল প্রভূত জনপ্রিয়। দোতারা, ডুবকি, খোল, তবলা থেকে শুরু করে গাবগুবি— বহু যন্ত্র বাজাতে পারতেন অসামান্য দক্ষতার সঙ্গে। তবে, সব কিছু ছাপিয়ে গায়ক তারকের ভাবগম্ভীর ছবিটাই সবচেয়ে উজ্জ্বল তাঁর ভক্ত এবং অনুরাগীদের মধ্যে।
আরও পড়ুন
বার্থ ডে গার্ল ভানুরেখা গণেশন, বলিউডের ‘রহস্যময়ী’ রেখা
ডাকাতি ছেড়ে চা বেচছেন আরামবাগের পিন্টু
তারকের জন্ম জয়দেব-কেঁদুলিতেই। খুব ছোটবেলায় জয়দেবের বিখ্যাত তমালতলা আশ্রমে সুধীরবাবার কাছে তাঁর সাংগীতিক পাঠ শুরু। একটু বড় হয়ে জয়দেবেরই সাধক বাউল পাগল রামদাসের শিষ্যত্ব নেন তিনি। পাগল রামদাস বহু বাউল গানের পদকর্তা ছিলেন।
তরুণ বয়সেই জয়দেব ছাড়িয়ে তারকের জনপ্রিয়তা ছড়াতে শুরু করে চারপাশে। আস্তে আস্তে কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্যত্র বাউল শ্রোতাদের মনেও বিশেষ জায়গা করে নেন। দেশের নানা প্রান্তে গান গেয়েছেন। ডেনমার্ক থেকে দক্ষিণ কোরিয়া— বিদেশেও গিয়েছেন অনেক বার গান শোনাতে। লালন ফকির থেকে হাউরে গোঁসাই, নীলকণ্ঠ থেকে জাদুবিন্দু— বাংলার মাটির কাছাকাছি বাস করা সাধক মহাজনেদের গান তারকের কণ্ঠে শোনার য়ে অভিজ্ঞতা— তা সত্যিই বিরল। সারা শরীর দিয়ে গান গাওয়া এক বিরল শিল্পী চলে গেলেন। এ অভাব শুধু জয়দেবেরই নয়, বাংলা মহাজনী গান এক একনিষ্ঠ, উদাত্ত, সহজ শিল্পীকে হারাল।
দেখুন ভিডিও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy