Advertisement
E-Paper

বিস্ফোরণ হল কই

ছবির গল্প অনুযায়ী, ১৯৯৫ সালে এই অশ্বিন রাওয়াত (জন) ভারত সরকারকে পরীক্ষামূলক পরমাণু বিস্ফোরণের পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু যে সতর্কতার কথা সে বলে সরকারকে, তা সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায় দিল্লি। ফলে আমেরিকার উপগ্রহের চোখে ‘ধরা পড়ে’ ওয়াশিংটনের হুঁশিয়ারিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্প। অশ্বিনের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে তাকে সাসপেন্ডও করা হয়।

দেবাশিস চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০০:০০

হঠাৎ বাতিল হয়ে গিয়েছিল গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সফর। সংবাদমাধ্যমে তখন জোর জল্পনা, তা হলে কি শরিক দলগুলিকে আরও বেশি করে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিয়ে নড়বড়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী? ১৯৯৮ সালের ১১ মে সকালের কাগজে যখন মানুষ এই জল্পনার খবর পড়ছেন, তত ক্ষণে পোখরান টু-এর জন্য কোমর বাঁধতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। যে দলে ছিলেন এপিজে আব্দুল কালামও।

তার তিন বছর আগে নরসিংহ রাওয়ের আমলেও পরীক্ষামূলক পরমাণু বিস্ফোরণের চেষ্টা আমেরিকার নজরদারিতে ভেস্তে যায়। তবে বাজপেয়ীর সতর্কতায় ১১ মে বিকেল পৌনে চারটের সময়ে যা ঘটল, সেটা ইতিহাস।

এই ঘটনা নিয়েই ‘পরমাণু: দ্য স্টোরি অব পোখরান’। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় জুড়ে পরিচালক অভিষেক শর্মা দেখিয়েছেন, কী ভাবে আমেরিকার গোয়েন্দা উপগ্রহের চোখ এড়িয়ে, সিআইএ এবং আইএসআইয়ের গুপ্তচরদের সামলে, পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণগুলি ঘটিয়েছিল ভারত।

পরমাণু: দ্য স্টোরি অব পোখরান

পরিচালনা: অভিষেক শর্মা

অভিনয়: জন আব্রাহাম,
বোমান ইরানি, ডায়না পেন্টি

৩.৫/১০

ছবির গল্প অনুযায়ী, ১৯৯৫ সালে এই অশ্বিন রাওয়াত (জন) ভারত সরকারকে পরীক্ষামূলক পরমাণু বিস্ফোরণের পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু যে সতর্কতার কথা সে বলে সরকারকে, তা সম্পূর্ণ

এড়িয়ে যায় দিল্লি। ফলে আমেরিকার উপগ্রহের চোখে ‘ধরা পড়ে’ ওয়াশিংটনের হুঁশিয়ারিতে বন্ধ হয়ে যায় প্রকল্প। অশ্বিনের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে তাকে সাসপেন্ডও করা হয়।

সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে অশ্বিন চলে যায় হিমালয়ে। তিন বছর পরে দিল্লিতে পালাবদল ঘটে। প্রধানমন্ত্রী হন বাজপেয়ী। তার পরে এক দিন অশ্বিনের কাছে আসে স্কুলের চাকরির চিঠি। এ ভাবে ধীরে ধীরে কাহিনি ঢুকে পড়ে গল্পের কেন্দ্রে। স্কুলের চাকরির অছিলায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিমাংশু শুক্লর (বোমান) সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে যায় অশ্বিনের। শুরু হয় পরীক্ষামূলক পরমাণু বিস্ফোরণের প্রক্রিয়া। এবং শেষ অবধি নানা বাধা পার হয়ে সাফল্য আসে ভারতের।

গল্পের পরিণতি সকলেই জানেন। মুশকিল হল, সেখানে পৌঁছতে গিয়ে যে মোচড়গুলি সুচারু ভাবে বুনে দেওয়ার দরকার ছিল ছবিতে, তা আর শেষ অবধি হয়ে ওঠেনি। যেমন, তিন বছরে অশ্বিনের ছেলের বয়স একটুও বাড়েনি! আমেরিকায় অন্তত পাঁচটি টাইম জ়োন আছে। তাই শুধু ‘ইউটিসি’ বলে সে দেশের সময়কে জানানো সম্ভব নয়। পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের সময়ে বাজপেয়ী গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের নিয়ে অপেক্ষায় বসেছিলেন। আর ছবিতে দেখানো হয়েছে, তিনি মার্কিন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করছেন!

চিত্রনাট্যও দুর্বল। যথেষ্ট গবেষণাও করা হয়নি। প্রায় একই ধরনের সমকালীন ইতিহাস নিয়ে তৈরি ছবি সুজিত সরকারের পরিচালনায় জন আব্রাহামের ‘ম্যাড্রাস কাফে’। অথচ সেই ছবিতে যে গবেষণার ছাপ, ধাপে ধাপে ক্লাইম্যাক্স তৈরির প্রক্রিয়া ছিল, তার ধারেকাছেও নেই ‘পরমাণু’। দ্বিতীয় পোখরান বিস্ফোরণের মধ্যে কিন্তু নাটকের অন্ত ছিল না। তবুও পিছিয়ে পড়ল ‘পরমাণু’। আর তা ঢাকতে জায়গায় জায়গায় লাগানো হল দেশাত্মবোধের প্রলেপ, যা দৃষ্টিকটু ভাবে বেখাপ্পা।

Pokhran parmanu Abhishek Sharma John Abraham
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy