Advertisement
E-Paper

কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েই মৌবনীর বিয়ে, বাকি দুই মেয়ের পাত্র সন্ধানে কী সমস্যার সম্মুখীন পিসি সরকার

মৌবনীর জন্য পাত্র পেয়েছেন পিসি সরকার। বড় মেয়ে মানেকা ও ছোট মেয়ে মুমতাজ়ের জন্য পাত্র খুঁজতে গিয়ে পেলেন বাধা! এই সময়ে দাঁড়িয়েও জাতপাতের বিচার করেন মানুষ, বিস্মিত জাদুকর।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৪০
পিসি সরকার দুই মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে গিয়ে হতাশ কোন কারণে?

পিসি সরকার দুই মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে গিয়ে হতাশ কোন কারণে? ছবি: সংগৃহীত।

গত বছর তিন কন্যার জন্য পাত্র খুঁজতে কাগজে বিজ্ঞাপন দেন জাদুকর পিসি সরকার (জুনিয়র)। তাতে লেখা ছিল, ‘‘জাদুশিল্পী পিসি সরকার জুনিয়র এবং জয়শ্রী সরকারের কন্যাদের জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ৩৮-৪৫ উপযুক্ত, সুদর্শন, দীর্ঘাঙ্গ, সুপ্রতিষ্ঠিত পাত্র চাই।’’ একসঙ্গে তিন মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে শুরু করে সরকার পরিবার। তা নিয়েই হইচই পড়ে যায়। মেজ মেয়ে মৌবনী সরকারের বিয়ে হল ৩০ নভেম্বর। ব়ড় মেয়ে মানেকা ও ছোট মেয়ে মুমতাজ়ের জন্য এখনও সুপাত্রের সন্ধানে জাদুকর। কিন্তু তাতে নাকি বাধা আসছে। এই সময়ে দাঁড়িয়েও জাতপাতের বিচার করে মানুষ? বিস্মিত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জাদুকর।

ধর্ম-জাতির ভেদাভেদ মানে না সরকার পরিবার। মেয়েদের জন্য কাঙ্ক্ষিত সুপাত্র তাদের নিজেদের ধর্মের মানুষ হতে পারেন, অন্য যে কোনও ধর্মেরও হতে পারেন। মুমতাজ-মানেকার জন্য বহু পাত্র দেখছেন পিসি সরকার ও তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী। এখনও খুঁজে চলেছেন। কিন্তু সুপাত্রের সন্ধান করতে গিয়ে বেশ কিছু বিষয় নাকি আবিষ্কার করেন জাদুশিল্পী।

আনন্দবাজার ডট কমকে তিনি বলেন, ‘‘বলতেও লজ্জা বোধ হচ্ছে! আধুনিক মানুষ, শিক্ষিত হয়েছি। কিন্তু এখনও সেই জাত-ধর্ম-বর্ণ নিয়ে পড়ে আছি! আমার ম্যাজিকের মধ্যে দিয়ে যেমন নিজেকে প্রকাশ করি, আমি চাই সমাজেও ম্যাজিক ঘটুক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই জাতপাতের সমস্যাটা শুধু আমাদের মেয়েদের পাত্র খুঁজতে গিয়ে নয়, আমার বাবাকেও এই সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল। অনেকেই সেই সময় বাবাকে বলেছিলেন, সরকার পদবি বলে আমরা নাকি অনেকের থেকে নিচু। আমি তো বুঝতেই পারি না আসলে কে উঁচু কিংবা নিচু। যদিও আমাদের পদবি আসলে ‘দেব সরকার’। জমিদারি পাওয়ার দরুণ এই ‘দেব সরকার’ পাওয়া। কিন্তু আমরা সে সব নিয়ে বড়াই করি না। আসলে আমরা সঠিক মানুষটা চাই।’’

মেজ মেয়ের জন্য পাত্র পছন্দ হওয়ার পরে প্রথমেই বিয়ে নয়। বরং হবু জামাইয়ের সঙ্গে নিভৃতে কিছুটা সময় কাটানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন মেয়েকে। দু’পক্ষের একে অপরকে পছন্দ করতেই পরের ধাপ। যদিও পাত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ের ঝাড়াই বাছাইটা করেন জাদুশিল্পীর স্ত্রী জয়শ্রী। সেখান থেকে যায় মেয়েদের কাছে। শেষ সিদ্ধান্ত বাবার হাতে।

পিসি সরকার বললেন, ‘‘আমার ছোট মেয়ে মুমতাজ় বেশ লম্বা, আর বাঙালি ছেলেরা সাধারণত আমার উচ্চতার হয়। তাই কিছু পাত্র পছন্দ হলেও উচ্চতা নিয়ে একটা সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি ও ভীষণ স্পষ্টবাদী। তাই পাত্রকে তেমনই হতে হবে। অন্য দিকে, আমার বড় মেয়ের বৌদ্ধাঙ্কের পরিমাপ অনেকটা বেশি এবং অসম্ভব যুক্তিবাদী, তবে ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষ। আসলে একটা সচেতন মানুষ চাই, নয়তো ইট-কাঠ, পাথরকে মানুষ বিয়ে করতে পারত। আমি তো অন্য ধর্মের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি। কিন্তু আমরা আরও একটু দেখে নিতে চাই।’’

কিন্তু তিনি যখন জাদুকর হবু জামাইয়ের খামতি তো জাদু করেই ঠিক করে দিতে পারেন! উত্তরে শিল্পী জানান, জামাইদের সঙ্গে জাদুটা করতে পারবেন না। কারণ, তাঁরা শিল্পীর হৃদয়ের দুর্বলতম জায়গা জুড়ে থাকবেন।

মেয়েদের ‘বিবাহ অভিযানে’ বেরিয়ে জাদুশিল্পীর বক্তব্য, কাগজে পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপনে যেদিন থেকে নির্দিষ্ট বর্ণ বা জাতের উল্লেখ করে পাত্রপাত্রী খোঁজা বন্ধ হবে, সেদিনই বোঝা যাবে, সমাজ বদলেছে।

তবে মেজ মেয়ের জন্য সুপাত্র পেয়ে খুবই খুশি সরকার পরিবার। আপাতত বাকি দুই মেয়ের জন্য তেমনই পাত্রের সন্ধান অব্যাহত। পেলেই ফের সানাই বাজবে সরকার বাড়িতে।

PC Sorcar Junior Moubani Sorcar Mumtaz Sorcar Maneka Sorcar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy