Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Mithun Chakraborty's Health Update

মোদীর ফোন হাসপাতালে, কথা দলের নেতা মিঠুনের সঙ্গে, অভিনেতার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন প্রধানমন্ত্রী

গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২১ সালের ৭ মার্চ মোদীর ব্রিগেড মঞ্চেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মিঠুন। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে আদ্যোপান্ত বাঙালি সাজেই মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি।

An image of Modi and Mithun

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মিঠুন চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:২৫
Share: Save:

অসুস্থ মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে ফোনে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুটিং সেটে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়ায় শনিবার অভিনেতা-রাজনীতিক মিঠুনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপি নেতা। তাঁকে দেখতে রাজনীতি ও চলচ্চিত্র জগতের অনেকেই হাসপাতালে গিয়েছেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার মিঠুনকে ফোন করে তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীও।

গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ২০২১ সালের ৭ মার্চ মোদীর ব্রিগেড মঞ্চেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মিঠুন। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে আদ্যোপান্ত বাঙালি সাজেই মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। মিঠুনকে মঞ্চে পেয়ে তাঁর অভিনীত ছায়াছবির সংলাপ শুনতে চান বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে অভিনেতা নিজের ছবির সংলাপ ধার করে প্রথমে বলেন, ‘‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে, এই ডায়লগটা চলবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার প্রচার শুরু করার আগে, একটা জিনিস মাথায় রাখবেন। এখানে সকলের ভাষণ এক জায়গায় করলে যা দাঁড়ায় তা হল, আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়াও নই। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি।’’ এই সংলাপেই মোদীর ব্রিগেড মঞ্চ মাতিয়ে দিয়েছিলেন মিঠুন।

বিধানসভা ভোটের সময় গোটা রাজ্যে বিজেপির হয়ে প্রচারে অংশ নিতে দেখা গিয়েছিল মিঠুনকে। কিন্তু ভোটে দলের পরাজয়ের পর বেশ কিছু দিনের জন্য ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মিঠুনকে বিজেপির প্রচারে সে ভাবে না লাগানো হলেও ভোটের আগে একাধিক জেলায় সাংগঠনিক বৈঠকে গিয়েছিলেন তিনি। এই মূহুর্তে মিঠুন রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্য। একই সঙ্গে রয়েছেন সর্বভারতীয় কার্যকারিণী সমিতিতে। চলতি বছরে তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মানেও ভূষিত করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। সেই সময় থেকেই দলের অন্দরে জল্পনা তৈরি হয়, লোকসভা নির্বাচনের আগে কি মিঠুনকে আবার গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? অসুস্থ মিঠুনকে সরাসরি মোদীর ফোন সেই জল্পনাতেই আরও জল-বাতাস দিল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও দলের একাংশের মত, মিঠুনকে পদ্মভূষণ দেওয়া বা তাঁর অসুস্থতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ফোন কোনও বার্তাই বহন করছে না। ১৯৭৬ সাল থেকে অভিনয় জগতে রয়েছেন। পদ্মভূষণ তাঁর প্রাপ্য। বিজেপির এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তী পদ্মভূষণ সম্মান প্রাপক। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাও। এখন উনি অসুস্থ। ফোন তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়াই প্রমাণ করে, প্রধানমন্ত্রী মনের দিক থেকে কতটা উদার। সব কিছু মধ্যে রাজনীতি খোঁজার কোনও অর্থ হয় না। এ হচ্ছে সৌজন্য, যা সকলের মধ্যে থাকে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে রয়েছে।’’

রবিবার হাসপাতালে গিয়ে মিঠুনকে দেখে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। নিজের এক্স হ্যান্ডলে সেই সাক্ষাতের ছবি দিয়েছেন তিনি। এর আগে মিঠুনকে দেখতে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। গিয়েছিলেন তৃণমূলের সাংসদ দেব এবং বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী।

সোহমের প্রযোজনায় ‘শাস্ত্রী’ ছবির শুটিং করার সময়েই শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন মিঠুন। দেরি না করে তাঁকে কলকাতায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান সোহম। তার পরেই জানা যায়, অভিনেতার ব্রেনস্ট্রোক হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মিঠুনের মস্তিষ্কে এমআরআই-সহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছে। নিউরোলজি, কার্ডিয়োলজি এবং গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল দল গঠন করা হয়েছে। সেই মেডিক্যাল দলেরই পর্যবেক্ষণে রয়েছেন মিঠুন। হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যের উন্নতি হলেও এখনই ছাড়া হবে না অভিনেতা-রাজনীতিককে। রবিবার বিকেলের মেডিক্যাল বুলেটিনে হাসপাতাল জানিয়েছে, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তীর স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে। তাঁর পরিস্থিতি অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। তিনি এখন সম্পূর্ণ সজাগ, সক্রিয়। পারিপার্শ্বিক বিষয়ে ওয়াকিবহাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE