বাংলার উত্তমকুমার কিংবা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, মুম্বইয়ের মিঠুন চক্রবর্তী। কখনও আধপেটা খেয়ে, কখনও না-খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। মিঠুনের তো রাতে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও ছিল না! এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী, নওয়াজ়উদ্দীন সিদ্দীকী কিংবা পঙ্কজ ত্রিপাঠীও।
এখনকার অভিনেতাদের এই ‘স্ট্রাগল’ করতে হয়? বোধহয় না। অন্তত তেমনই বলছেন অভিনেতা রাহুল দেব বসু। বিজ্ঞাপনী ছবির কারণে অভিনেতা মুম্বইয়ে। সন্ধ্যায় শুটিংয়ের অবসরে তিনি সাগরতটে। নিজের শহর ছেড়ে বাইরে গেলেই বোধহয় জীবনের মানে উপলব্ধি করা যায়? এটাও এক ধরনের ‘স্ট্রাগল’?
প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। রাহুল কিন্তু তেমনটা মনে করেন না। তাঁর মতে, “এটা কোনও লড়াই-ই নয়। ল়ড়াই করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী, উত্তমকুমার বা সেই আমলে বহু অভিনেতা। একই লড়াই লড়তে দেখা গিয়েছে মনোজ বাজপেয়ী, নওয়াজ়উদ্দীন সিদ্দীকী কিংবা পঙ্কজ ত্রিপাঠীকেও। শুনেছি, রাতে শুটিং থাকলে ওঁরা বর্তে যেতেন। রাতের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হয়ে যেত।”
রাহুলের জীবনে তা হলে কি ‘স্ট্রাগল’ নেই? “না নেই”, সপাট দাবি তাঁর। রাহুলের কথায়, “উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। পকেটে কোনও দিন টান পড়েনি। পড়াশোনা থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রয়োজন অনায়াসে মিটিয়েছি।” এ-ও যোগ করেছেন, শহর ছেড়ে কাজের সূত্রে অন্য শহরে থাকাকে তিনি ‘স্ট্রাগল’ তকমা দিতে পারেন না। তাঁর মতে, “আমাদের সমস্যা অন্য।”
আরও পড়ুন:
এ দিকে প্রচলিত কথা, ‘স্ট্রাগল’ বা ‘লড়াই’ না করলে যে শীর্ষ ছোঁয়া যায় না! রাহুলের কি তা হলে শীর্ষ ছোঁয়া হবে না?
তখনই প্রকাশ্যে তাঁর জীবনবোধ। অভিনেতার উপলব্ধি, “এখন কিন্তু ‘স্ট্রাগল’ শব্দের অর্থ বদলে গিয়েছে। ৩০-৪০ বছর আগে ‘স্ট্রাগল’ মানে না-খেয়ে থাকা। কিংবা মাথা গোঁজার ঠাঁই না-থাকা। এখনকার কোনও অভিনেতাকে এই সমস্যায় ভুগতে হয় না।” তাঁর মতে, “এখনকার অভিনেতারা অস্তিত্বসংকটে ভোগেন। তাঁরা বেশি দিন নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে পারবেন কি না, সব সময়ে সেই ভয় কাজ করে তাঁদের মনে।” এই ভয় রাহুলের মনেও আছে। তাঁর কাছে ‘স্ট্রাগল’-এর সংজ্ঞা এটাই।