আর্থিক সঙ্গতিই কি সাফল্যের চূড়ান্ত মানদণ্ড! বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন ছোট পর্দার অভিনেতা রাজা গোস্বামী।
২০০৯ সাল থেকে বাংলা টেলিভিশনে কাজ করেছেন। ‘ভালবাসা ডট কম’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে শুরু। প্রথম ধারাবাহিকের নায়িকাকেই করেছেন জীবনসঙ্গিনী। ২০১৬ সালে মধুবনী গোস্বামী ও রাজা গোস্বামীর বিয়ে হয়। এখন তাঁরা এক পুত্রসন্তানের বাবা-মা।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে রাজার করা একটি মন্তব্যে তোলপাড় নেটপাড়া। তিনি লিখেছিলেন, মাধ্যমিকে তিনি ‘স্টার’ পেয়েছিলেন, কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেন। তখন নাকি অনেকেই তাঁকে বলেছিলেন, “এই ছেলের আর কিছু হবে না।”
তবে লোকের কথায় কান না দিয়ে নিজের কাজ করে গিয়েছেন। তাতেই সফল তিনি। সিনেমা যে খুব বেশি করছেন, তেমনটা নয়। তাঁর আয়ের একটা বড় অংশই ধারাবাহিক থেকে। তাতেই ঘটে রাজার জীবনে ‘ম্যাজিক’। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সেকেন্ড ডিভিশন পেয়েও কলকাতা শহরের বুকে একের পর এক সম্পত্তি গড়ে তৃপ্ত রাজা!
আরও পড়ুন:
পরীক্ষার ফলই শেষ কথা নয়। মানুষের জীবনে সব সময় যুক্তি নয়, বরং ম্যাজিক ঘটে, সে কথাই বললেন রাজা। পরীক্ষার ফল ও জীবনের ফল যে সব সময় মেলে না, বিশ্বাস করেন অভিনেতা। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “মাধ্যমিকে স্টারের পর উচ্চ মাধ্যমিকে সেকেন্ড ডিভিশন পেয়েছিলাম। সবাই বলেছিলেন এই ছেলের কিছু হবে না, গোল্লায় গিয়েছে। মা-বাবার আশীর্বাদে, দর্শকের ভালবাসায় মধুবনী আর আমার কলকাতার বুকে একটা নয়, দুটো নয়, তিনটে নয়... যাক গে, কতগুলি সম্পত্তি নাই বা বললাম!’’ এর পর শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। অনেকেই কটাক্ষ করছেন রাজার এই সাফল্যের সংজ্ঞাকে।
আনন্দবাজার ডট কম-কে রাজা জানালেন কলকাতায় তাঁদের মোট ৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তাঁরা নিজেরা অবশ্য থাকেন রাজার পৈতৃক ভিটেতেই। ফ্ল্যাটগুলির একটি নিজেদের জন্য রেখে, বাকি তিনটি ভাড়া দেন তাঁরা।
বাংলা ধারাবাহিকের আত্মপ্রকাশের আগে অবশ্য বছরখানেক মুম্বইয়ে থেকে নিজের ভাগ্যপরীক্ষা করেছিলেন রাজা। সাফল্য পাননি সেখানে। অতি কষ্টেই দিন কাটিয়েছেন। ভাড়াবাড়িতে থাকতে, শপিং মলের স্নানঘরে গিয়ে স্নান করতেও হয়েছে— এমন দিনও দেখেছেন। এখন টলিপাড়ায় অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের ব্যবসা নিয়েও ব্যস্ত রাজা। অভিনেতার কথায় উঠে এল সেই সব ‘স্ট্রাগল’-এর কথা। তিনি বলেন, “আমি মুম্বই গিয়ে অনেক কষ্ট করেছি। টানা এক মাস শপিং মলে গিয়ে স্নান করা থেকে হাত-মুখ ধোয়া— সবই করতে হত। সেই সব দিন দেখেছি। কিন্তু আমার যা কিছু, সবই দিয়েছে বাংলা ধারাবাহিক। এক পয়সা অপচয় করিনি। মধুবনীকে বিয়ের পর থেকে ক্রমাগত ফ্ল্যাট খুঁজে বেরিয়েছি। তবে লক্ষ্যে স্থির ছিলাম।’’
কিন্তু সত্যিই কি বাংলা ধারাবাহিকে অভিনয় করে এত কিছু করা সম্ভব? রাজার কথায়, ‘‘হ্যাঁ, সম্ভব। আমরা যখন কাজ শুরু করি বাংলা টেলিভিশনের স্বর্ণযুগ তখন। সেই সময় ধারাবাহিক করলে দুর্গাপুজোয় শো থেকে যাত্রা সবই পাওয়া যেত। যদিও এখন সে সব অনেকে কমেছে। টিআরপি নেই ধারাবাহিকের, তাই। কিন্তু, আমার যা কিছু জনপ্রিয়তা, উপার্জন সব এখান থেকেই। ’’
তাই বাংলা ধারাবাহিকের অভিনেতা হিসাবে তিনি গর্বিত। এই মাধ্যমে কাজ করেছেন বলেই এত মানুষ তাঁকে চিনেছেন, মত অভিনেতার।