Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নামেই যা নতুন!

মিখিল ছাড়াও এই ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন নীরেন ভট্ট, পরিন্দা জোশী ও কর্ণ ব্যাস। চার জনের মনে হয়তো ছিল চার রকম ভাবনা। তাই ছবিটি পুরোদস্তুর কমেডি নয়।

মেড ইন চায়না ছবির একটি দৃশ্য।

মেড ইন চায়না ছবির একটি দৃশ্য।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

দীপাবলির আগে চাইনিজ় লাইটের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘোরেন অনেকেই। সস্তা অথচ দেখতে ভাল, কেনার আগে বিবেচ্য এই বিষয় দু’টি। তবে পছন্দসই কিনেও ঠকে যাওয়ার অভিজ্ঞতা নেহাত কম নয়। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক মিখিল মুসালের প্রথম হিন্দি ছবি ‘মেড ইন চায়না’র অবস্থা অনেকটা ওই চাইনিজ় লাইটের মতো। নতুনত্বের প্রলোভন ছিল। কিন্তু উজ্জ্বল ভাবে জ্বলে উঠল না। চিনে না গেলেও গল্পে বাড়তি কিছু যোগ হত না।

মিখিল ছাড়াও এই ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন নীরেন ভট্ট, পরিন্দা জোশী ও কর্ণ ব্যাস। চার জনের মনে হয়তো ছিল চার রকম ভাবনা। তাই ছবিটি পুরোদস্তুর কমেডি নয়। ছবির বেশ খানিকটা জুড়ে মেলোড্রামা, শেষে লম্বা লম্বা জ্ঞানগর্ভ বাণী, যা নতুন নয়। ছবির শুরু একটি খুনের তদন্ত দিয়ে। তবে ফ্ল্যাশব্যাক এত দীর্ঘ ও এত বেশি নাটকীয়তায় ভরা যে, তা ছবির গতিকে মন্থর করে, দর্শকের মনে বিরক্তির জন্ম দেয়।

এই ধরনের ছবিতে দ্ব্যর্থবোধক সংলাপ রাখলেই পরিচালক ভাবেন, অর্ধেক কাজ সারা। ‘মেড ইন চায়না’র খুব কম সংলাপই দর্শকের রসবোধকে তৃপ্ত করবে। রঘু (রাজকুমার রাও) ও রুক্মিণীর (মৌনী রায়) লাভ স্টোরি দেখানোর জন্য একটি গান কম রাখলেও ক্ষতি ছিল না। অথচ ছবির গল্পে সম্ভাবনা ছিল। উদ্দেশ্য নিয়েও সন্দেহ নেই। কিন্তু পরিচালক বা চিত্রনাট্যকারের দল গল্পে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ।

মেড ইন চায়না
পরিচালনা: মিখিল মুসালে
অভিনয়: রাজকুমার, বোমান, মৌনী, সুমিত, গজরাজ, পরেশ
৫/১০

পরিচালকের ব্যর্থতা খানিক পুষিয়ে দিয়েছেন রাজকুমার। তাঁর অনবদ্য অভিনয় এই ছবির একমাত্র ভরসা। সঙ্গে বোমান ইরানি, সুমিত ব্যাস, গজরাজ রাও, পরেশ রাওয়ালের মতো দক্ষ অভিনেতার দল। কিন্তু এঁদের কারও চরিত্রেই সেই জোর নেই। সুমিতের চরিত্রে

গ্রে শেড ছিল। কিন্তু শেষমেশ সেটিও দাঁড়াল না। মৌনীর নাচ-সাজগোজ ভাল। তবে আবেগের দৃশ্যে তাঁকে দেখে এতটুকুও মন ভারাক্রান্ত হয় না।

এই ছবির ইউএসপি তার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। যৌনতা ও তা নিয়ে দেশের মানুষের ছুতমার্গকে ঘিরে দিব্যি গল্প বোনা যেত। কিন্তু তার বদলে কয়েকটি বহুচর্বিত কথাই দেখানো হল ছবিতে। ‘থ্রি ইডিয়টস’ স্টাইলে স্কুলের অনুষ্ঠানে ডাক্তার ভর্দির (বোমান ইরানি) যৌনতা সম্পর্কে বক্তৃতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, পরিবেশনেও নতুন কিছু ভাবতে পারেননি পরিচালক। অন্য দিকে, রুক্মিণীর অভাবের সংসার। অথচ তার শাড়ি ও সাজে অভাবের লেশটুকু নেই।

ছবি জুড়ে বারবার বলা হয়, ব্যবসার প্রথম শর্ত, ক্রেতাকে বোকা ভাবা (যদিও সরাসরি ‘বোকা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি)। দর্শক ও ক্রেতার মধ্যে পরিচালকের ভাবনায় যে খুব বেশি ফারাক নেই, ছবিটি দেখলে তা স্পষ্ট হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Made in China Mouni Roy Rajkumar Rao
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE