মৃণাল সেনের ৯৯তম জন্মদিন। স্মৃতিপথে হাঁটলেন রঞ্জিত মল্লিক। তখন ১৯৭১ সাল। মৃণাল তাঁর ‘ইন্টারভিউ’ ছবিটি বানাতে চলেছেন। সেখানেই নায়কের ভূমিকায় আনকোরা নতুন মুখ রঞ্জিত। বাকিটা তাঁর মুখে— ‘‘প্রচণ্ড কৃতজ্ঞ আমি তাঁর কাছে। কারণ, আমার অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল মৃণাল সেনের মতো পরিচালকের হাতে। এই কৃতজ্ঞতা বলে বোঝানোর নয়। আমাকে নেওয়ার ফলে অসম্ভব পরিশ্রম করতে হয়েছিল ওঁকে। কারণ, তখন আমি অভিনয়ের কিচ্ছু জানি না। ওটাই আমার প্রথম ছবি। অভিজ্ঞতার ঝুলিও তাই শূন্য।’’
বর্ষীয়ান অভিনেতার দাবি, সদ্য অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখা কোনও অভিনেতাকে গড়েপিটে নেওয়া মস্ত চ্যালেঞ্জ। মৃণাল সেন সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। অভিনেতাকে হাতে ধরে অভিনয়ের অ-আ-ক-খ শিখিয়েছিলেন। ফলাফল? প্রথম ছবিতেই ‘সেরা অভিনেতা’র আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। তা-ও আবার বিদেশ থেকে। ১৯৭২ সালের ২ অগস্ট সেই শিরোপায় সম্মানিত করা হয় রঞ্জিতকে। অভিনেতার মতে, সে দিন তাঁর নবজন্ম হয়েছিল। জন্মদাতা মৃণাল সেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই কারণে ১৯৭১ সালের পর থেকে আমি কখনও ১৪ মে মৃণাল সেনের জন্মদিনে ওঁর বাড়িতে যাইনি। টানা ৪০ বছর ওঁর সঙ্গে দেখা করেছি ২ অগস্টে। মিষ্টি নিয়ে। মৃণালবাবুর স্ত্রী গীতা বৌদি কী খুশিই যে হতেন! খুব স্নেহ করতেন আমায়।’’ প্রয়াত পরিচালকের প্রতি এতটাই শ্রদ্ধা, সম্মান তাঁর যে, কোনও দিন তাঁকে ‘মৃণালদা’ বলে সম্বোধন করেননি। আজীবন ডেকে এসেছেন ‘মৃণালবাবু’ বলে। মৃণাল অবশ্য তাঁর ছবির অনুজপ্রতিম নায়ককে রঞ্জিত বলেই সম্বোধন করতেন। সঙ্গে ‘আপনি’ সম্বোধন।