হার্ড কৌর
‘সিংহ ইজ কিং’ থেকে ‘বচনা অ্যায় হাসিনো’, ‘চান্স পে ডান্স’ থেকে ‘রব নে বনা দি জোড়ি’... হিন্দি ছবিতে হিপহপ মানেই হার্ড কৌর। যদিও এটা আসল নাম নয়। ভাল নাম তরণ কৌর ধিঁলো। অশান্ত ছোটবেলা। দাঙ্গায় মারা যান বাবা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পারিবারিক দোকান। মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের সূত্রে পাড়ি দেন ইংল্যান্ড। পরবর্তী সময় কাটে বার্মিংহ্যামে।
‘‘লোকে বম্বে থেকে বার্মিংহ্যাম যায়। আমার বেলা উল্টোটা,’’ মজা করে বলছিলেন তিনি। তবে যাত্রাটা মোটেও মসৃণ ছিল না। জাস্টিন টিম্বারলেকের সঙ্গে একই মঞ্চে গান গাইলেও প্রথম অ্যালবামের জন্য ঘুরতে হয়েছে রেকর্ড লেবেলের দরজায় দরজায়। বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে রেগে, হিপহপ ভাল লাগত। তবে অথেনটিক ফর্মে। এ দিকে অলটারনেটিভ মিউজিকের অতটা চল ছিল না। রুটি-কাপড়ের জন্য চলে আসতে হল মুম্বই। সারেগামা রাজি হল অ্যালবাম করতে।’’ আর বলিউডও পেয়ে গেল প্রথম মহিলা হিপহিপ সিঙ্গার।
লোকে বলে হিপহপ, র্যাপ হল প্রতিবাদের ভাষা। তাঁর গানও কি প্রতিবাদ? একবাক্যে স্বীকার করলেন হার্ড কৌর। ‘‘অবশ্যই। চারপাশে যা চলছে সেটা মেনে নিতে পারতাম না। মাকে দেখেছি পরিশ্রম করতে। আমিও তাই। পুরুষপ্রধান সমাজে একটা মেয়ের প্রতিবাদ কেউ সহ্য করে না। তাই কতবার চেষ্টা করা হয়েছে, আমার গানকে বন্ধ করে দিতে। বাথরুমে গিয়ে কেঁদেছি। কিন্তু পালিয়ে যাইনি।’’
হার্ড কৌরের মনটা তা হলে নরম? ‘‘এই ইন্ডাস্ট্রিতে নরম হয়েছ কি লোকে তোমাকে পিষে মেরে ফেলবে। মনটাকে তো শক্ত করতে পারব না। নামটাকে শক্ত করে নিলাম,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন তিনি। তবে সময় বদলেছে। এখন সব কিছু করেন নিজের ‘টার্মে’। নিজেই গানের কথা লেখেন। সুরও দেন নিজে। সদ্য এক সিঙ্গল্স রিলিজ করেছেন ‘ঝুমকা গিরা রে’। ‘‘রিমেক-টিমেক নয়। আর বরেলির বাজারেও পড়েনি কিন্তু,’’ হাসতে হাসতে বলেন।
তবে বরেলির মেয়ে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া তো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছেন। অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে গানও গাইছেন। গানে প্রতিযোগিতা বেড়ে গেল কি? উত্তর দিতে একটুও সময় নষ্ট করলেন না, ‘‘সে তো আমিও একটা ছবিতে অভিনয় করেছি। তার মানে কি আমি অভিনেত্রী হয়ে গেলাম? নায়িকারা আগে গান গাইতে তো শিখুক, তার পর না হয় রেকর্ডিং স্টুডিয়োতে ঢুকবে।’’ একমাত্র শ্রদ্ধা কপূরের গান ভাল লেগেছে তাঁর। আর পরিণীতি? ‘‘আমার মনে হয় অটোটিউন আছে,’’ উত্তর তাঁর।
র্যাপার ড্রেকের বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে পুরস্কারের দৌড়ে অ্যাডেলকে পিছনে ফেলে দেওয়াতে বেজায় খুশি হার্ড কৌর। ‘‘অলটারনেটিভ মিউজিক আস্তে আস্তে জায়গা করে নিচ্ছে তা হলে।’’ কিন্তু তাঁকে নিয়ে যে বিতর্ক কম নেই। এক অনুষ্ঠানে গিয়ে উদ্যোক্তাদের গালাগালি দেওয়া থেকে তাঁর গানের সঙ্গে মঞ্চে নাচতে ওঠা বাচ্চাদের দিকে মাইক্রোফোন ছুড়ে মারা... অনেক অভিযোগ তাঁর দিকে! থামিয়ে দিলেন হার্ড কৌর, ‘‘মাইক্রোফোন ছুড়িনি। তবে অর্গানাইজারদের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে অনেক। এক রকম চুক্তিতে নিয়ে যায়। তার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা গান গাইতে বলে। সেটার প্রতিবাদ করেছিলাম। এ দেশে মেয়েরা প্রতিবাদ করা মানেই তো লাউড।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy