Advertisement
E-Paper

Aarya 2: দ্বিতীয় সিজ়নে সুস্মিতা আরও ক্ষুরধার

পুরো খেলাটাই এখানে রাজস্থানের উচ্চবিত্ত মহলে ঘোরাফেরা করে। তবে সবচেয়ে বড় ফারাক তৈরি হয়েছে মাফিয়া ড্রামার প্রধানচরিত্র মহিলা হওয়ায়।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১৪
সুস্মিতার স্ক্রিন প্রেজ়েন্স খামতিগুলো বাইপাস করে যায়।

সুস্মিতার স্ক্রিন প্রেজ়েন্স খামতিগুলো বাইপাস করে যায়।

আরিয়া (দ্বিতীয় সিজ়ন)
পরিচালনা: রাম মাধবানী, সন্দীপ মোদী, বিনোদ রাওয়াত
অভিনয়: সুস্মিতা, জয়ন্ত, সিকন্দর, অঙ্কুর
৬.৫/১০

মুম্বইয়ের মাফিয়া-রাজ বাদ দিলে, ভারতীয় সিনেমা-সিরিজ়ে মাফিয়া ড্রামা মূলত উত্তরপ্রদেশ, বিহারের গ্রাম বা শহরতলিকে প্রেক্ষাপট করেই গড়ে ওঠে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিজ়নি প্লাস হটস্টারের ওয়েব সিরিজ় ‘আরিয়া’ স্বতন্ত্র প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পেরেছে। পুরো খেলাটাই এখানে রাজস্থানের উচ্চবিত্ত মহলে ঘোরাফেরা করে। তবে সবচেয়ে বড় ফারাক তৈরি হয়েছে মাফিয়া ড্রামার প্রধানচরিত্র মহিলা হওয়ায়। এবং সেই চরিত্রে সুস্মিতা সেনের নির্বাচন। দ্বিতীয় সিজ়নে সুস্মিতা আরও বেশি ক্ষুরধার। যে কারণে দ্বিতীয় সিজ়ন ছাপিয়ে গিয়েছে প্রথমটিকে।

ডাচ ড্রামা ‘পেনোজ়া’র আধারে তৈরি হলেও, ‘আরিয়া’ স্বকীয়তা বজায় রেখেছে। গত সিজ়নে ড্রাগ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হিসেবনিকেশ চুকিয়ে আরিয়া (সুস্মিতা) বিদেশে পাড়ি দেয়। এ বার দেখানো হচ্ছে, বাবা-ভাইয়ের বিরুদ্ধে চলা মামলার সাক্ষী হিসেবে আরিয়া দেশে ফেরে। ফের শুরু হয় ক্ষমতার আস্ফালন আর প্রতিশোধের লড়াই। না চাইতেও সেই আবর্তে ঢুকে পড়ে আরিয়া। প্রথম সিজ়নের মতো, এখানেও গল্পের বড় জায়গা দখল করে আছে আরিয়ার সন্তানেরা। বীর, আরু, আদি— তিন সন্তানকে নিয়ে একা মায়ের একটা অনবদ্য স্ট্রাগল দেখিয়েছেন নির্মাতারা। রাশিয়ান ড্রাগ ডিলার, শেখাওয়াতের পরিবার, পুলিশ এবং নিজের পরিবারের অন্তর্ঘাতের চক্রবূহ্যে দাঁড়িয়ে আরিয়াকে ‘ওয়ার্কিং মাদার’ হতেই হয়। ঘরে-বাইরে লড়াই করতে করতে পোড়খাওয়া মা অস্ত্র হাতে তুলে নিতে দ্বিধা করে না।

প্রথম সিজ়নে পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো চরিত্রদের উপর থেকে পরত সরছিল। দ্বিতীয় সিজ়নে পরতহীন চরিত্রগুলো অনেক বেশি ঝাঁঝালো। তবে কাহিনির ক্রাইসিসগুলো আগের মতোই। সব আকর্ষণ ধরে রাখে টানটান নির্মাণ। নতুন চরিত্রের আনাগোনাও কাহিনির রং ধরে রেখেছে। ব্যক্তিগত আক্রোশ আর ক্ষমতার ভার বদলে দেয় চরিত্রদের আনুগত্য। হিনা (সৌগন্ধা গর্গ) এবং সম্পতের (বিশ্বজিৎ প্রধান) চরিত্রে বড় বদল আসে। মন ভালো করে দেয় মায়ার (মায়া সারু) চরিত্রটা। সুস্মিতার তিন সন্তানকে কাহিনিতে আলাদা পরিসর দেওয়া হয়েছে। সেই জায়গাগুলোর জন্যই থ্রিলার আর আবেগের ভারসাম্য তৈরি হয়েছে সিরিজ়ে।

পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকাও ক্ষণে ক্ষণে রং বদলায়। জ়োরাওয়ার রাঠৌর (জয়ন্ত কৃপালিনী), সংগ্রাম রাঠৌরকে (অঙ্কুর ভাটিয়া) শাস্তি দিতে না পারায় পুলিশ-প্রশাসনের আক্রোশ গিয়ে পড়ে আরিয়ার উপরে। তবে এখানে পাবলিক প্রসিকিউটরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন জাগে। সিরিজ়ের সাবপ্লটে রয়েছে এসিপি ইউনুস খানের (বিকাশ কুমার) নিজস্ব কাহিনি। সেই কাহিনির শেষ কী ভাবে হয়, তা নিয়ে আগ্রহ জিইয়ে রেখেছেন নির্মাতারা।

সিরিজ়ের কয়েকটি খামতির কথা বলতেই হবে। আরুর লুক ডিজ়াইন বেশ ক্লিশে। মানসিক অবসাদে ভোগা কোনও চরিত্র দেখাতে হলেই ছাঁচে ঢালা মেকআপের বাইরে বেরোতে পারে না বলিউড। কোর্টের অংশগুলোর ডিটেলিংয়েও খামতি রয়েছে। কাহিনিতে আরিয়ার জীবনে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলো বুদবুদের মতো। জোরালো অভিঘাত তৈরি করার আগেই সমাধান হয়ে যাচ্ছে।
কাহিনির গতি এবং সুস্মিতার স্ক্রিন প্রেজ়েন্স খামতিগুলো বাইপাস করে যায়। ব্যক্তিগত ভাবে এবং চরিত্রগত দিক দিয়েও প্রথম সিজ়নের চেয়ে সুস্মিতা এ বার অনেক বেশি পরিণত। তবে চোখে লেগেছে সুস্মিতার মেকআপ। লিপ জব, বোটক্স তাঁর স্বাভাবিকত্ব নষ্ট করেছে।

আট পর্বের সিরিজ়ের রানিং টাইম গড়ে ৪০ মিনিট করে। গতি আর ছন্দ দর্শককে বিঞ্জ ওয়াচে বাধ্য করে। শেষ দুই পর্ব বেশ জমজমাট। সিরিজ়ের আরও একটি জোরালো জায়গা এর আবহসঙ্গীত।
দ্বিতীয় সিজ়নের শেষে তৃতীয়র পূর্বাভাস রয়েছে। প্রতিশোধের পরম্পরা চলতে থাকবে, এ খেলার শেষ নেই।

sushmita sen review Web Series Aarya 2
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy