বার বার আওড়াতে থাকলে মিথ্যেও যেমন সত্যি মনে হয়, তেমনই সত্যি-মিথ্যে মিশিয়ে বললে সেটাই যেন বাস্তব হয়ে দাঁড়ায়। সুজয় ঘোষের ‘বদলা’ সত্যি-মিথ্যের গোলকধাঁধা!
যে গল্পটা আপনি বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, খানিকক্ষণ পরে দেখলেন সেটা বদলে গেল। বদল আর বদলা ছবিতে সমান্তরাল ভাবে চলতে থাকে। ফোনেটিক্যালি কাছাকাছি দু’টি শব্দের মানে আলাদা। ছবির মূলসূত্র কিন্তু নামকরণেই লুকিয়ে। সমালোচনায় এটুকুই স্পয়েলার রইল।
আর যাঁরা ‘দ্য ইনভিজ়িবল গেস্ট’ দেখে ফেলেছেন, তাঁদের কাছে গোটা ছবিটাই স্পয়েলার। অফিশিয়াল রিমেক হলেই কি হুবহু অনুকরণ করতে হয়? সুজয় চাইলেই কাহিনির নির্যাস নিজের মতো করে সাজাতে পারতেন। কিন্তু তিনি বোধহয় ঝুঁকি নিতে চাননি। শুধু কয়েকটি চরিত্র বদলে দিয়েছেন। এখানেও বদল প্রাসঙ্গিক। নইলে ছবির সিংহভাগ জুড়ে অমিতাভ বচ্চন থাকতেন না। তাপসী পন্নুও তাই। এঁদের দু’জনের অভিনয়ই ছবিতে তারতম্য ঘটিয়েছে, যেটা মূল ছবির দুর্বলতার জায়গা।
অনেক দিন পরে অমৃতা সিংহকেও ভাল লাগে। কিন্তু ছবিতে তাঁর স্বামীর চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন, সেই তনভির ঘানি বরং দুর্বল। সেটা আরও চোখে পড়ে তাঁর প্রতিবিম্ব মজবুত অভিনেতা হওয়ায়!
বদলা পরিচালনা: সুজয় ঘোষ অভিনয়: অমিতাভ, তাপসী, অমৃতা ৬/১০
‘দ্য ইনভিজ়িবল গেস্ট’-এর স্তম্ভ তার চিত্রনাট্য। তাই সুজয়ের ছবিও ভীষণ টানটান। অতিরিক্তের লেশ নেই। গল্পে একাধিক মোচড় দর্শককে বসিয়ে রাখে। উপরন্তু কিছু ভাল সংলাপ রয়েছে অমিতাভের মুখে।
তাপসীর চরিত্রটি জড়িয়ে পড়ে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে। সেখান থেকে সে বেরোতে চায় কি না, তা অপ্রাসঙ্গিক। প্রেমিকের সঙ্গে গাড়ি করে যাওয়ার সময়ে একটি দুর্ঘটনা, মৃত্যু এবং সেখান থেকেই যাবতীয় বিপত্তি। সেই দুর্ঘটনার রেশ থেকে আরও একটি মৃত্যু। যাকে আপাত ভাবে খুনি মনে করা হচ্ছে, সে-ই কি আসল অপরাধী? না কি অন্য কিছুও আছে? কথার পৃষ্ঠে কথা, গল্পের পৃষ্ঠে গল্প, ঠিক-ভুলের গরমিল ছবিকে এগিয়ে নিয়ে চলে। গল্পের শেষ মোচড়ও দুর্দান্ত।
ভাল থ্রিলার দেখতে চাইলে ‘বদলা’ নিঃসন্দেহে সেরা বাছাই। সুজয় যেহেতু হুবহু অ্যাডাপ্ট করেছেন, তাই বলিউডি দোষেও দুষ্ট নয় ছবি। কিন্তু মূল ছবির দৃশ্যায়ন পুরোপুরি মিলে গেলে পরিচালকের কৃতিত্ব কোথায়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy