Advertisement
E-Paper

বিশ্বজনীন সুরের ছোঁয়ায়

অজয় গাইছেন, ‘আয়ে না বালম’! সুরের সাঁকো ছুঁতে চাইছে পর্দাজোড়া চন্দ্রিমার মায়া বা সুদূর ইতিহাসের স্মারক সব স্থাপত্য।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০৩
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী।

পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী।

দুর্লভ সব ফুটেজের ছড়াছড়ি। আচার্য জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের পাশে বসে দূরদর্শনের আদি যুগের অনুষ্ঠানে কাফি ঠুংরিতে সাবলীল তরুণ অজয় চক্রবর্তী। অথবা অঝোর বৃষ্টির আবহে চরাচর জুড়ে মথিত রসস্থ প্রবীণ শিল্পীর স্বর।

অজয় গাইছেন, ‘আয়ে না বালম’! সুরের সাঁকো ছুঁতে চাইছে পর্দাজোড়া চন্দ্রিমার মায়া বা সুদূর ইতিহাসের স্মারক সব স্থাপত্য। শ্যামনগরের পারিবারিক কালীর সামনে শ্যামাসঙ্গীতে সওয়ারি অজয়ও যেন কোন গভীর অধ্যাত্ম-পথের অভিযাত্রী। সঙ্গীতের সাধনমার্গ তো অপ্রাপণীয় বা অধরারও সন্ধান। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সঙ্গীতজীবন নিয়ে তথ্যচিত্রে পরিচালক গৌতম হালদার এই সার কথাটি স্মরণে রেখেছেন।

ছয় দশকের সঙ্গীতজীবনকে এক ঘণ্টায় ধরা সোজা ছিল না। তার উপরে অজয়ের গুরুরা অনেকেই লোকান্তরিত। সতেরো বছর ধরে পরিচালকের গবেষণাপর্ব সাবধানে এগিয়েছে। দেখা গেল, একটি চিঠিতে শিষ্যকে সকলের মধ্যে উত্তমকে গ্রহণ, যা কিছু উত্তম নয় তা নির্মম ভাবে ত্যাগ করার আশীর্বাণী দিয়েছেন জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পুরনো কিছু অনুষ্ঠানে অজয় প্রসঙ্গে বলছেন তাঁর গুরুস্থানীয় মান্না দে, পণ্ডিত এম বালমুরলি কৃষ্ণ বা নৌশাদ আলি সাহেব। দেশে-বিদেশে ডানা মেলা অজয়ের শিক্ষাঙ্গনের অনুষ্ঠানের সূত্রে পণ্ডিত রবিশঙ্কর থেকে ইলায়া রাজাও মুখর। কারও কথাই সাজানো ‘সাউন্ডবাইট’ নয়। তা-ই স্বতঃস্ফূর্ততায় ভরপুর।
বড়চর্চার কিছু বিপদ থাকে। অজয় চক্রবর্তীর মতো বিদগ্ধ শিল্পীর কথা মেলে ধরায় একতরফা অভিভূত হওয়ার হাতছানি তো থাকেই! কিন্তু এ তথ্যচিত্র একঘেয়েমিতে ভারাক্রান্ত করে না। টুকরো টুকরো সরস কাহিনি দর্শককে মজিয়ে রাখে। স্ত্রী চন্দনা বা মেয়ে কৌশিকীর সঙ্গে আড্ডার দৃশ্যও খুলে দেয়, তাঁর সঙ্গীতদর্শনের চাবিকাঠি। গ্রাম্য প্রকৃতির শব্দভাঁড়ার থেকে সুরের দোসর নৈঃশব্দ্যও অজয়ের সঙ্গীতচর্চার উপাদান।

পরিচালক ও শিল্পীর তিন দশকের সখ্যও এ ছবির নির্মাণে সহায়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অভিঘাত নিয়ে বিভিন্ন তথ্যচিত্র, টিভি ধারাবাহিকে মশগুল গৌতম সহজেই অজয়ের মনোজগতে ঢুকতে পেরেছেন। উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খানের পুত্র মুনাওয়ার আলি খান সাহেবের কাছে পাটিয়ালা ঘরানায় দীক্ষিত হন অজয়। গুরুর কাছে তিনি শুনেছেন, কী ভাবে অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছেদের দেখে দেশ রাগের চলন চাক্ষুষ করতেন উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খান সাহেব। এ ছবিতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও অজয় বলছেন, তাঁর শট বা জন্টি রোডসের ক্যাচের টাইমিংয়েও সুর অনুভবের কথা।

একটু আফসোস হয়, সঙ্গীতসাধক অজয়ের কোনও অশ্রুত আক্ষেপের কথা কি উঠে আসতে পারত না, এই অনন্ত যাত্রার বাঁকে? বিরাটের মধ্যে সহজ, গভীরকে ছুঁয়ে গৌতমের অজয়চর্চায় তবু সঙ্গীতের বিশ্বজনীনতার দলিল।

Ajoy the ascetic journey of the Yogi Film
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy