কেমন হল ‘থ্যাঙ্ক গড’? ফাইল চিত্র।
প্রথমেই বলে নেওয়া দরকার যে মুক্তি পাওয়ার পরের দিন অজয় দেবগন এবং সিদ্ধার্থ মলহোত্রর মতো সুপারস্টার অভিনীত একটি ছবিতে হলের দর্শকের সংখ্যা দুই! এই সমালোচক, এবং আরও এক ভদ্রলোক। হল কর্তৃপক্ষ যে ছবিটি চালাতে রাজি হয়েছেন, তাতে তাঁদের ধন্যবাদ প্রাপ্য।
আসলে সবই ছিল। অজয় দেবগনের মতো ধারালো অভিনেতা, নোরা ফতেহির আইটেম নম্বর, সিদ্ধার্থ মলহোত্রর মতো গ্ল্যামার কোশেন্ট। তা-ও ‘থ্যাঙ্ক গড’কে কোনও ভাবেই বাঁচানো গেল না। অতি দুর্বল চিত্রনাট্য এবং চর্বিতচর্বণ গল্পে মুখ থুবড়ে পড়ল ছবি। বাকি রইল এগজিকিউশন। সেটার কথা যত কম বলা যায়, তত ভাল।
গল্পে নেই কোনও মৌলিকতা। অয়ন এক জন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। বাজারে মন্দার কারণে সে বর্তমানে পথে বসেছে। তার বাড়ি বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু অয়ন যেমন ব্যবসায় ব্যর্থ, তেমনই বাড়ি বিক্রিতেও নিষ্কর্মা। এরই মধ্যে একখানা পথ দুর্ঘটনা ঘটিয়ে, জীবন-মৃত্যুর সীমানায় দাঁড়িয়ে সে দেয় যমলোকে পাড়ি। দেখা হয় চিত্রগুপ্তের সঙ্গে। চিত্রগুপ্ত তাকে নিয়ে একটি খেলা খেলে। আয়ানকে একটি পরীক্ষা দিতে হবে। তার মধ্যে আছে মনুষ্য দুর্বলতা। যেমন ক্রোধ, হিংসা, কাম, লোভ, উদাসীনতা। এই সব পাপের বোঝা কাটিয়ে পুণ্যের ঘড়া পূর্ণ করতে হবে তাকে। তবেই সে ফিরে যেতে পারবে তার নিত্য মনুষ্য জীবনে। তার স্ত্রী-কন্যার কাছে। অয়ন কি পারবে তার পাপের ঘড়া কম করে পুণ্যের ঘড়া ভর্তি করতে? সেই নিয়েই গল্প।
খেলাটি ‘কেবিসি’র আদলে তৈরি। সেখানে আছে লাইফলাইন। আছে দর্শকও। অয়নের উত্তরের উপর ভিত্তি করে তারাই নির্ণয় করে হার-জিত। খেলাটি দেখতে মন্দ লাগে না। কিন্তু সেখানেই আবার লুকিয়ে আছে ছবির ব্যর্থতাও। মুশকিল হল, বলিউডে এত আধুনিক এবং ধারালো ছবি তৈরি হয়ে গিয়েছে, যে এই ছবি দেখতে লাগে নব্বই বা তারও আগের কোনও দশকের ফ্লপ ছবির মতো। ২০২২-এ দাঁড়িয়ে সেটা অত্যন্ত বোরিং।
ক্লাইম্যাক্সে নেই কোনও চ্যালেঞ্জ বা উত্তেজনা। কী হবে তা আগে থেকেই বোধগম্য হয়। এতটাই ক্লিশে। বরং পরিচালক ইন্দ্র কুমার অযথা জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বড়ই মোটা দাগের সেই জ্ঞান।
অভিনেতারা তাঁদের কাজ যথাসাধ্য করেছেন। অজয় দেবগনের অভিনয় নিয়ে কোনও সন্দহ নেই। সিদ্ধার্থও ভাল। সিদ্ধার্থের স্ত্রীর ভূমিকায় রকুল প্রীত সিংহও খারাপ না। মাত্র একটি গানে (জনপ্রিয় এবং ভাইরাল ‘মানিকে মাগে হিতে’র হিন্দি সংস্করণ) নোরার উপস্থিতি, এক কথায়, অনবদ্য। কেন তিনি ফুটবলের কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে যাচ্ছেন, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন। কনওয়ালজিতের মতো অভিনেতাকে এ ভাবে নষ্ট করা কেন হল, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। ব্যস, ওই অবধিই। ছবির গান (নোরার ছাড়া) মনে কোনও দাগ কাটে না। ছবির চিত্রকল্পও সাধারণ। ২০২২-এ দাঁড়িয়ে এই ছবি যে মুক্তি পেতে না পেতেই শেষ হয়ে যাবে, তা নিয়ে বোধহয় সন্দেহের কোনও অবকাশ থাকে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy