ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অভ্যস্ত, বিদেশি সিরিজ় দেখা গ্লোবাল বাঙালির কাছে সাইবার ক্রাইম থ্রিলার উপভোগ্য করে তোলা নেহাত সহজ কাজ ছিল না। চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও প্রযোজক দেব। বাংলা ছবির নিরিখে কনটেন্ট, লুক, ফিল ও সর্বোপরি স্টাইলাইজ়েশনে এই ছবিকে এগিয়ে রাখতে বাধ্য হবেন দর্শক। শুধু পাঁচটি মুখ্য চরিত্র নয়, ছবি তৈরির বাকি বিভাগগুলিকেও গুরুত্ব দেওয়ায় স্ট্রেংথ বেড়েছে ‘পাসওয়র্ড’-এর।
ছবির শুরুটা খানিক সতর্কতামূলক বিজ্ঞাপনী প্রচারের মতো। সেই অ্যামেচারিশ ভাবটা কেটে যায় যখন গল্পে চলে আসে রোহিত (দেব), আদি (আদৃত রায়) ও নিশা (রুক্মিণী মৈত্র)। এক দিকে নিশা-আদির ব্যক্তিগত সমীকরণ, অন্য দিকে অফিসার রোহিতের সাইবার ক্রাইম রুখে দেওয়ার অভিযান। এদের সঙ্গেই পর্দায় চলে আসে ইসমাইল (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) ও মরিয়ম (পাওলি দাম)। যদিও পরমব্রত অভিনীত চরিত্রটির নাম দ্বিতীয়ার্ধে জানতে পারেন দর্শক। দেশ-কালের গণ্ডি ভেদে একই সঙ্গে তিনটি গল্পের সুতোকে প্রথমার্ধে টানটান ভাবে বুনেছেন লেখক ও চিত্রনাট্যকার রানা মুখোপাধ্যায়। সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে নোটবন্দি ও ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মেলবন্ধন মন্দ নয়। সঙ্গে স্যাভির নজরকাড়া ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর। এই ধরনের গল্পে যে গতি প্রত্যাশিত, ঠিক সেই ছন্দে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
থ্রিলার, তাই গল্প ভাঙা উচিত নয়। দ্বিতীয়ার্ধে গতি তুলনায় কম। ধীরে ধীরে জট ছাড়াচ্ছে সুতো। পাশাপাশি রয়েছে গল্পের টুইস্টস অ্যান্ড টার্নস। ছবির শেষেও অপেক্ষা করে থাকে চমক। চিত্রনাট্যে অস্পষ্টতা রয়েছে ঠিকই। সাইবার ক্রাইমের মতো জটিল বিষয় দর্শককে আরও একটু বুঝিয়ে বলার দরকার ছিল। চরিত্রগুলি কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে, সেটাও সব সময়ে বোঝা যায় না। তবে শেষ দৃশ্য পর্যন্ত দর্শকের চোখ পর্দায় আটকে রাখবে থ্রিলারের ‘হুক’। আর সেটা করতে কোনও ‘ক্রুক’-এর পথে হাঁটেনি ছবির টিম। ভেবেচিন্তে, রিসার্চ করে ঝকঝকে, স্মার্ট একটি ছবি বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে।