Advertisement
E-Paper

অতি সরলীকরণে বাস্তব থেকে বিচ্যুত

হিউমর অতি সূক্ষ্মরস, এ রকম সিরিয়াস বিষয়ে তার এত স্থূল প্রয়োগ সিরিজ়টিকেই লঘু করেছে।

নবনীতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২১ ০৭:১৬

এক দম্পতির সন্তান দত্তক নেওয়ার গল্প দিয়ে শুরু হয় অমিতাভ বর্মার সিরিজ় ‘তিন দো পাঁচ’। মজার মোড়কে পেরেন্টিংয়ের সিলেবাস ধরে এগোতে থাকে গল্প। কিন্তু পেরেন্টিং বিষয়টাই এমন যে, সেখানে সিলেবাসের বাইরেই বেশি পড়তে-জানতে-শিখতে হয়। আসল পরীক্ষায় কমন পড়ে না প্রায় কিছুই। বাঁধা গতে চলা সিরিজ় মা-বাবার সেই আয়াসসাধ্য সফর কি ধরতে পারে শেষ পর্যন্ত?

সাত বছরের বিবাহিত জীবনে বিশাল (শ্রেয়স) ও প্রিয়ঙ্কা (বিদিতা) অপত্যস্নেহ থেকে বঞ্চিত। ফলে অনাথ আশ্রমে পৌঁছয় সন্তান দত্তক নিতে। সেখানে দিব্যাকে প্রথম দর্শনেই পছন্দ করে ফেলে প্রিয়ঙ্কা। এ দিকে দিব্যারা ট্রিপলেট। তার ভাইদের কাছ থেকে তাকে আলাদা করতে নারাজ সেই অনাথ আশ্রম কর্তৃপক্ষ। ফলে তিন জনকেই দত্তক নেয় বিশাল-প্রিয়ঙ্কা। এ দিকে এই তিনজনকে বাড়িতে নিয়ে আসার পরে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সন্তানসম্ভবা হয় প্রিয়ঙ্কা। যমজ সন্তানের জন্ম দেয় সে। এ বার দত্তক সন্তানদের কী হয়? তা নিয়েই গল্প।

সিরিজ়ে দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া বেশ ত্রুটিযুক্ত। সন্তান দত্তক নেওয়ার দীর্ঘ প্রক্রিয়া এত শর্টকাটে সারা হয়েছে যে, তা শপিং করতে যাওয়ার মতো অনায়াসলব্ধ মনে হয়। দত্তক নেওয়ার আগে কাউন্সেলিং করে ইচ্ছুক দম্পতির মানসিক অবস্থা, অর্থনৈতিক স্থিতি সবই পর্যালোচনা করা হয়। সিরিজ়ে সে-সব কিছুই নেই। বিশেষ করে, যেখানে বিশালের আচরণ ও সংলাপে দর্শকের চোখে ধরা পড়ে তার অনিচ্ছে, সেখানেই তাদের দত্তক নেওয়ার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ‘হ্যাপি এন্ডিং’-এর গল্পে বাস্তবের ধার ঘেঁষেননি পরিচালক। ট্রিপলেট সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে এলেও তারা যে প্রিয়ঙ্কার ‘ক্রীড়নকসম’, তা-ও স্পষ্ট হতে থাকে এপিসোড এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে। তা সত্যিই বেদনাদায়ক।

সন্তান দত্তক নেওয়া ও যমজ সন্তান জন্মানো... সব মিলিয়ে সিরিজ় দু’-এক বছর এগিয়ে গেলেও ট্রিপলেটের বয়স বাড়ে না। সেটাও বেশ চোখে লাগে শেষের দিকে। অভিনয়গুণে শ্রেয়স তলপড়ে তা-ও চেষ্টা করেছেন সিরিজ়টি ধরে রাখতে। তিনটি মিষ্টি বাচ্চার জন্যও ধৈর্য ধরে রাখা যায়। বিদিতা বাগের অভিনয় ঠিকঠাক। যমজ সন্তান জন্মের পরে দত্তক সন্তানদের প্রতি প্রিয়ঙ্কার ব্যবহারের বৈপরীত্যও ভাল তুলে ধরেছেন বিদিতা। তবে কানে লাগে তাঁর কর্কশ ভাবে সংলাপ বলা, হয়তো তাঁর চরিত্রের খাতিরেই। কিন্তু আগাগোড়া ওই ঝাঁজালো সংলাপ কি দরকার ছিল? অরফ্যানেজ ট্রিপগুলিতে (সিরিজ়ে সেটা ট্রিপই মনে হয়) তাঁকে দেখতে বেশ সুন্দর লেগেছে।

সিরিজ়ের ভাল দিক বলতে, অনাথ আশ্রমের কর্ত্রীর ট্রিপলেটকে আলাদা করতে না চাওয়ার মানসিকতাকে সত্যিই কুর্নিশ জানাতে হয়। সন্তান দত্তক নেওয়ার মতো বিষয় অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই এ বিষয়ে আর-একটু যত্নশীল হওয়ার প্রয়োজন ছিল নির্মাতাদের। হিউমর অতি সূক্ষ্মরস, এ রকম সিরিয়াস বিষয়ে তার এত স্থূল প্রয়োগ সিরিজ়টিকেই লঘু করেছে।

Movie Review
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy