সৌমিত্র
জিনা লোলোব্রিজিতা-র সঙ্গে একই লিফ্টে উঠছি আমি, শৈলেনদা (মুখোপাধ্যায়) আর শশী। ১৯৬৫-র বার্লিন ফেস্টিভ্যালে গিয়েছি মানিকদার সঙ্গে। ‘চারুলতা’ সিলভার বিয়ার পেয়েছিল। শশী গিয়েছিল জেমস আইভরি-র ‘শেকসপিয়ারওয়ালা’য় অভিনয়ের সূত্রে। তার আগেই আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব শশীর, তুই-তোকারির সম্পর্ক। জিনার দুনিয়া কাঁপানো গ্ল্যামার, আমরা তাঁকে দেখব কী, তিনিই হাঁ করে শশীকে দেখছেন, পারলে গিলে খান! শশীর ঘরে আড্ডা দিচ্ছি, বিরাট ফুলের বোকে এল, জিনা পাঠিয়েছেন শশীকে। ‘তুই কী কাণ্ড করলি ভেবে দ্যাখ!’ বিহ্বল হয়ে বলেই ফেললাম শশীকে। সত্যিই অবর্ণনীয় সুন্দর শশী, অথচ নারীসুলভ নয়। আমি সেটা বারবার বলতাম ওর বউ জেনিফারের সামনে। আর ও বলত ‘তুমি কীসে কম সুন্দর, সৌমিত্র!’ বার্লিনে আমার প্রথম বিদেশ-ভ্রমণ, ফরেন কারেন্সিও মহার্ঘ। তবু আমি, শশী ছবি দেখার শেষে দুষ্টুমি করতে বেরোতাম, শৈলেনদাকে সঙ্গে নিয়ে। রেস্তোরাঁ, নাইট ক্লাব— সর্বত্র আমার ব্যয় বহন করত শশী। ভারী সুন্দর মন ছিল তাঁর, সেটা আরও টের পেলাম ১৯৮১-তে শ্যাম বেনেগালের ‘কলযুগ’-এ যুধিষ্ঠিরের চরিত্র প্রত্যাখানের পর। প্রযোজক শশী চেয়েছিল আমি করি। আমি বলেছিলাম, ‘নিজে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রটা নিলি, কর্ণ। আর এটা আমায় দিচ্ছিস!’ এর পরেও আমাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়নি, এত চমৎকার মানুষ ছিল শশী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy